স্টাফ রিপোর্টার:
বিয়ানীবাজার পৌরশহরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাথে বিরোধীদল বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা পাল্টা হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে শিমুল আহমদ (৩৮) নামক আওয়ামী লীগের এক কর্মী নিহত ও উভয় পক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। ৬ জানুয়ারী বুধবার বেলা ১টায় পৌরশহরের দক্ষিণবাজার সিটি সেন্টারের সম্মুখে এই ঘটনাটি ঘটে। নিহত শিমুল আহমদ বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ গ্রামের নিজাম উদ্দিনের পুত্র। সংঘর্ষ ও নিহতের ঘটনায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরো ১৫ জনকে আসামী করে বিয়ানীবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
জানা যায়, দেশব্যাপী বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাস এবং নৈরাজ্য মূলক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগ শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। ঘটনার দিন দুপুর ১২.৩০ ঘটিকায় পৌরশহরের দক্ষিণবাজার সিটি সেন্টারের সম্মুখে আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ শুরু হয়। বেলা ১টার দিকে বিয়ানীবাজার বিএনপি ও তাদের অঙ্গসংগঠন এবং জামায়াতে ইসলামী ও তাদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ একটি মিছিল আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় উভয় পক্ষে বাকবিতন্ডা ঘটে। এক পর্যায় উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে দেশীয় অস্ত্র লাঠি, লোহার রড, দা, হকিস্টিক দিয়ে উভয় পক্ষে হামলা পাল্টা হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় দক্ষিণবাজার এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। ব্যবসায়ীরা দোকানপাঠ বন্ধ করে ও পথচারীরা দৌড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। খবর পেয়ে বিয়ানীবাজার থানা থেকে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষে প্রায় ১০জন আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে প্রেরণ করা হয়। তন্মধ্যে, মাথায় গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত আওয়ামী লীগ কর্মী শিমুল আহমদকে মুমূর্ষু আহত অবস্থায় উদ্ধার করে বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক সুরতহাল শেষে লাশ থানায় নিয়ে আসে। পরে ময়না তদন্তের জন্য আওয়ামী লীগ কর্মীর লাশ সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়।
এই ঘটনায় বিয়ানীবাজার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক দেওয়ান মাকসুদুল ইসলাম আউয়াল বাদী হয়ে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ১০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরো ১৫ জনকে আসামী করে বিয়ানীবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলা নং ০৪, তারিখ ০৬/০১/২০২১ইং। মামলার আসামীরা হলেন, বিয়ানীবাজার উপজেলার মাথিউরা গ্রামের মুহিবুল ইসলাম এর পুত্র মুহাইমিনুল ইসলাম (৪৯), সুপাতলা গ্রামের মোঃ কবির উদ্দিন এর পুত্র এনাম হোসেন (৪০), পাতন গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলামের পুত্র মোঃ সিদ্দিক আহমদ (৪৯), মাথিউরা গ্রামের হাজী ছুয়াব আলীর পুত্র রুয়েল আহমদ (৩০), কসবা গ্রামের নাজিম উদ্দিন এর পুত্র ফয়েজ আহমদ (৩৫), উত্তর চক্রবানী, কাকুরা গ্রামের মোঃ ইসলাম উদ্দিন এর পুত্র নাজির হোসেন (২৯), টিকরপাড়া গ্রামের আসব্বীর আলীর পুত্র আফজল আহমদ (৩৭), মাটিজুরা গ্রামের মৃত বুরহান উদ্দিনের পুত্র কাওছার আহমদ (৩৩), পীরেরচক গ্রামের লতিফ আহমদের পুত্র শহিদ আহমদ (৩৮) ও দক্ষিণ দাসউরা গ্রামের সদাই মিয়ার পুত্র রেদওয়ান আহমদ (৩৩), সহ অজ্ঞাত আরো ১৫ জন।
এ বিষয়ে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ হিল্লোল রায় বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করতে তৎপর রয়েছে। আইনের হাত থেকে কোন অপরাধী রেহাই পাবে না।