সিলেট অফিস:
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী মনোনয়ন নিয়ে সিলেটে ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিনি সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলে নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের ঢল নামে বিমানবন্দরে। এরপর তিনি চলে যান বৃদ্ধা মায়ের কাছে। মায়ের দোয়া নিয়ে রাতেই বের হয়ে পড়েন দলের মনোনয়ন প্রত্যাশীদের বাসায়।
এ সময় ‘আরিফ ভাই’ ‘আরিফ ভাই’, ‘গোয়াইনঘাটে ধানের শীষ’, ‘কোম্পানীগঞ্জে ধানের শীষ’, ‘জৈন্তাপুরে ধানের শীষ’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন তার কর্মী-সমর্থকরা।
আরিফুল হক চৌধুরী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি কোম্পানীগঞ্জ, গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলাবাসীকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে সবার সহযোগিতা প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
এর আগে সোমবার সারা দেশের ২৩৭ আসনে নিজেদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ওই আসনগুলোর কোথাও আরিফুল হকের নাম ছিল না। তবে তিনি সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। পরে ঢাকায় তলব করে আরিফুল হক চৌধুরীকে সিলেট-৪ (কোম্পানীগঞ্জ-জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাট) আসনের মনোনয়ন দেন খোদ দলের চেয়ারপারসন।
এ আসনের মনোনয়ন নিতে অনীহা প্রকাশ করে আসছিলেন আরিফ। তিনি এতদিন সিলেট-১ আসনের মনোনয়নের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। বিএনপি সিলেট-১ আসনে চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার মুক্তাদিরকে মনোনয়ন দেয়। এরপর আরিফকে তলব করে বিএনপির হাইকমান্ড।
আরিফুল হক চৌধুরী ১৯৫৯ সালের ২৩ নভেম্বর সিলেটের কুমারপাড়ায় চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মুহাম্মদ শফিকুল হক চৌধুরী এবং মা আমিনা বেগম। তিনি ছোটবেলা থেকেই সিলেট শহরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা গ্রহণ করেন। পারিবারিক প্রথা ও রাজনৈতিক পরিবেশে তার মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী গড়ে ওঠে।
তার রাজনৈতিক জীবন শুরু হয় স্থানীয় পর্যায়ে। তিনি সিলেট সিটি করপোরেশনের ১৮নং ওয়ার্ডে কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে উন্নয়ন কমিটির প্রধান হন। ২০০৭ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি জরুরি অবস্থা ঘোষণার পর তিনি যৌথবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
একই বছরের ১৯ জুন আরিফুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয় এবং ৯ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করে। ২০০৮ সালে চৌধুরী ও তার স্ত্রী শামা হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা হলে তাকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে চৌধুরী দুর্নীতির মামলায় খালাস পান।
২০১৩ সালের জুনে তিনি বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে পরাজিত করে সিলেট সিটির মেয়র নির্বাচিত হন। নির্বাচনে তিনি ৩৫ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। মেয়র হিসেবে তার প্রশাসনিক কাজের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো সাইফুর রহমান শিশু পার্ক এবং অন্যান্য নাগরিক সুবিধা প্রকল্পের উন্নয়ন প্রচেষ্টা।
২০১৪ সালে তাকে শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করা হয় এবং গ্রেফতার করা হয়। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্টের বিভিন্ন আদেশের মাধ্যমে তিনি আবার দায়িত্বে ফিরে আসেন।
২০১৮ সালে চৌধুরী পুননির্বাচনে জয়লাভ করেন, যেখানে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমেদ কামরানকে ৬,১৯৬ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। নির্বাচনের পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম
প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২
ইমেইলঃ agamiprojonma@gmail.com, milad.jaynul@gmail.com