মিলাদ জয়নুল:
বিয়ানীবাজার উপজেলার ২৫০ কিলোমিটার সড়ক-গ্রামীণ সড়ক বর্তমানে ভাঙাচোরা। খানাখন্দ, পিচ-পাথর উঠে যাওয়া ও ছোট-বড় গর্তে ভরা সড়কে যানবাহন চলছে ঝুঁকি নিয়ে, সৃষ্টি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। যাত্রায় সময়ও লাগছে বেশি। ভাঙা সড়কের কারণে বিয়ানীবাজার পৌরশহরে যাতায়াতে সময় লাগছে আগের চেয়ে দ্বিগুণ। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী ও পরিবহন শ্রমিকদের।
সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নিম্নমানের নির্মাণ, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব এবং নিয়ম না মেনে অতিরিক্ত ভার বহনকারী যানবাহন চলাচলের কারণে সড়ক-গ্রামীণ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। বিয়ানীবাজার উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ সড়ক-গ্রামীণ সড়ক সংস্কারে এখনো প্রায় ৮শ’ কোটি টাকার প্রয়োজন বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ বিয়ানীবাজারের দায়িত্বে থাকা এসও সাজ্জাদুর রহমান জানান, চারখাই থেকে বারইগ্রাম এবং শেওলা থেকে সূতারকান্দি পর্যন্ত সাড়ে ২৯ কিলোমিটার রাস্তার মালিক হচ্ছে সওজ। এই অংশের মধ্যে ১০ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করা প্রয়োজন উল্লেখ করে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন হলে দ্রæত সংস্কার কাজ শুরু হবে। তিনি আরোও বলেন, এবার ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলো মেরামতের ক্ষেত্রে টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিশেষ করে যেসব জায়গায় পানি জমে বেশি ক্ষতি হয়, সেখানে কংক্রিট ব্যবহার করা হবে।
এদিকে ভাঙাচোরা সড়কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন যাত্রী এবং পণ্যবাহী ট্রাক ও বাসের চালকেরা। চালকরা জানান, সড়ক খারাপ হওয়ায় ট্রাক ভাড়া বেড়ে যাওয়ায় পণ্য পরিবহনে ব্যয় বেড়েছে। এমন অবস্থায় সিলেট-বিয়ানীবাজার সড়কে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যান চলাচল শুরুর উদ্যোগ নিয়েছে বাস মালিক কর্তৃপক্ষ।
বিয়ানীবাজার পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, এখানকার ৩৯ কিলোমিটার রাস্তা এখনো কাঁচা। আর পাকা-ইট সলিং মিলিয়ে মোট ৬০ কিলোমিটার সড়কের বেশীরভাগ জরুরী সংস্কার প্রয়োজন। গত এক বছরে পৌরসভার আয় এবং বরাদ্দপ্রাপ্ত অর্থ দিয়ে সবক’টি ওয়ার্ডে সমবন্টনের চেষ্টা চালাচ্ছেন পৌর প্রশাসক। বর্তমান সময়ে পৌরবাসীর হাহাকারের একমাত্র কারণ ভাঙা সড়ক। পৌর এলাকার সাড়ে ৪ কিলোমিটার কার্পেটিং রাস্তার পুরোটাই জীর্ণ।
উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, বিয়ানীবাজারে এলজিইডির মালিকানায় ৩৪৭টি রাস্তা রয়েছে। যার দৈর্ঘ্য ৬২৭ কিলোমিটার। এরমধ্যে ৩৭২ কিলোমিটার মাটি, ১০৫ কিলোমিটার পাকা এবং ১৮২ কিলোমিটার কাঁচা। বিয়ানীবাজার উপজেলার উপ-সহকারি প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম জানান, ১৬৫টি রাস্তার ২০২ কিলোমিটার অংশ জরুরী ভিত্তিতে সংস্কার করা প্রয়োজন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকেও গ্রামীণ সড়কে মাটি ভরাট, ছোট সেতু নির্মাণ করা হয়। তবে তা ইউপি চেয়ারম্যানদের চাহিদার ভিত্তিতে করা হয় বলে জানা গেছে। কাবিখা, কাবিটাসহ নানা প্রকল্পের মাধ্যমে এসব কাজ পরিচালিত হয়।
অপরদিকে দীর্ঘদিন থেকে সড়ক যোগযোগ ব্যবস্থায় অবহেলিত বিয়ানীবাজারবাসী। উপজেলার ভাঙা সড়কগুলো মেরামত হলে এখানকার মানুষের বড় কোন চাহিদা নেই বলে জানান বিয়ানীবাজার আদর্শ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মুজিবুর রহমান। তিনি বলেন, উন্নত ও টেকসই সড়ক ছাড়া অর্থনীতি, বাণিজ্য ও জনজীবনের গতি ফিরবে না।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মুস্তাফা মুন্না বলেন, ভাঙা সড়কগুলোর কাজ ধীরে-ধীরে শুরু হচ্ছে। আশাকরি সড়ক নিয়ে ভবিষ্যতে মানুষ আর দীর্ঘশ্বাস ফেলবেন না।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম
প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২
ইমেইলঃ agamiprojonma@gmail.com, milad.jaynul@gmail.com