স্টাফ রিপোর্টার:
সিলেট-৬ বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ নির্বাচনী আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরীকে প্রাথমিকভাবে মনোনীত করা হয়েছে। এমন খবরে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীকে নিয়ে নানা বিশ্লেষন করছেন নির্বাচনী বোদ্ধারা। আঞ্চলিক রাজনীতি না-কি বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী অপর প্রার্থীরা মনোনয়ন পরীক্ষায় পাশ করতে পারেননি-এ নিয়েও চলছে আলোচনা। বিএনপির স্থানীয় নানা মেরুকরন আলোচনায় ভিন্নমাত্রা যোগ করছে। বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রায় এক ডজন নেতার মধ্যে বঞ্চিত অপর প্রার্থীরা কী করবেন, কোনও প্রার্থী স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচন করবেন কি-না, তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষন।
যদিও মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপির বঞ্চিত প্রার্থীরা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাবেননা বলে নিজ নিজ ফেসবুক আইডি থেকে বিবৃতি দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের শান্তনা দিয়ে ধৈর্য ধারনের আহবান করছেন প্রার্থীরা। আবেগঘন বার্তায় নিজেদের অতীত রাজনীতি আর দূর্বিষহ জীবনের স্মৃতিচারণ করছেন।
সিলেট-৬ বিয়ানীবাজার-গোলাপগঞ্জ নির্বাচনী আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী শক্ত প্রার্থী ফয়সল আহমদ চৌধুরী লিখেছেন-দলের সাথে আমার পথচলা অনেক দিনের। ১৯৮৭-৮৮ শিক্ষাবর্ষ থেকে গুটি কয়েক ছাত্রনেতাকে নিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে রাজনীতির সূচনা করি। লাভ-ক্ষতির হিসাব কখনো করিনি। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে অসংখ্য লড়াইয়ের নেতৃত্ব দিয়েছি। বহুবার বাড়ি-ঘরে হামলার শিকার হয়েছি, কখনো আমি নিজে আক্রান্ত হয়েছি, কখনো আমার পরিবার আক্রান্ত হয়েছে। কারাবরণ করেছি, আবার কখনো ফেরারী জীবনও কাটাতে হয়েছে। আমার জীবনের সবচেয়ে কষ্টের মুহূর্তগুলোর একটি—যেদিন আমার মা মারা যান, সেই রাতেই সেনাবাহিনী আমাদের বাসায় অভিযান চালায়। এই গল্প শুধু আমার একার নয়—এ রকম কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে অসংখ্য ছাত্রনেতাকে পার হতে হয়েছে। তিনি লিখেন, ২০১৮ সালে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও দল আমাকে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেয়। আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছি। হয়তো আমাকে ভালোবাসার কারণেই ভবিষ্যতেও কিছু কষ্ট সহ্য করতে হতে পারে। দলের সিদ্ধান্তে হয়তো আপনাদের কারও হৃদয় ভেঙে গেছে। যদি এই সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকে, তবুও আমি অনুরোধ করব—হতাশ হবেন না। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনই সর্বোত্তম ফয়সালা করেন। রহস্যভরা শেষ লাইনে ফয়সল আহমদ চৌধুরী লিখেন, চুড়ান্ত মনোনয়ন না আসা পর্যন্ন্ত আপনারা সবাই ধৈর্য ধরুন, কারণ আল্লাহ ধৈর্যশীলদের ভালোবাসেন।
মনোনয়ন বঞ্চিত বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা ড. এনামুল হক চৌধুরী লিখেন, আমি বিএনপির কর্মী। আমাদের অভিভাবক তারেক রহমানের নির্দেশনা মেনে চলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গত রাত থেকে মোবাইলে এবং সরাসরি দেখা করে গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজারের অনেক ভাইদের আমি হাউমাউ করে কাঁদতে দেখেছি। আপনাদের এমন ভালোবাসায় আমি আবেগাপ্লুত। আপনাদের ভালোবাসা ও বিশ্বাস আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। আমি জানি আপনারা আমার জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। যদি এই সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকে, তবুও আমি অনুরোধ করব—হতাশ হবেন না। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনই সর্বোত্তম ফয়সালা করেন। আমি সবসময় আপনাদের পাশে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব ইনশাআল্লাহ। এখন থেকে আর ব্যক্তি নয়, ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে কাজ করতে হবে। দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিলগ্নে ধানের শীষকে বিজয়ী করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে। ভুলে গেলে চলবেনা আমাদের নেতার সেই ঐতিহাসিক উক্তি- সবার আগে দেশ।
সৈয়দা আদিবা হোসেন ফেসবুক বার্তায় জানান, আমি সবসময় গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজারের জনগণের পাশে ছিলাম, আছি, থাকব ইনশাআল্লাহ। উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশের জন্য আমাদের যৌথ যাত্রা অব্যাহত থাকবে। আসুন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পতাকা উঁচু রাখি।
মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবিনা খান পপি এমরান আহমদ চৌধুরীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি জানান, আমি মনোনয়ন না পেলেও, আন্তরিকভাবে এমরান আহমেদ চৌধুরীকে অভিনন্দন জানাই মনোনয়ন পাওয়ার জন্য। এই পথচলায় আমি অনেক কিছু শিখেছি এবং যাঁরা আমাকে সমর্থন ও ভালোবাসা দিয়েছেন, তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনার সাফল্য ও নেতৃত্ব আমাদের সবার গর্বের বিষয় হবে। আমরা একসাথে আমাদের সম্প্রদায় ও সংগঠনের উন্নতির জন্য কাজ চালিয়ে যাব।
এদিকে মনোনয়নের খবর পেয়ে এমরান আহমদ চৌধুরীও ছুটে যান বিএনপির বর্ষিয়ান নেতা আবুল কাহের চৌধুরী শামীমের বাসায়। সেখানে গিয়ে এই নেতার সহযোগীতা চান তিনি। একইভাবে এমরান চৌধুরী বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্ঠা ড. এনামুল হক চৌধুরীর বাসায় গিয়েও তাকে শান্তনা জানান।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম
প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২
ইমেইলঃ agamiprojonma@gmail.com, milad.jaynul@gmail.com