প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

প্রকৃতিবিনাশী বিয়ানীবাজারে সংকুচিত হয়েছে পাখিদের সবুজ দুনিয়া

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২৩, ২০২৫, ০৪:৪৮ অপরাহ্ণ
প্রকৃতিবিনাশী বিয়ানীবাজারে সংকুচিত হয়েছে পাখিদের সবুজ দুনিয়া

Manual5 Ad Code

 

Manual1 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:

বিয়ানীবাজারের কোথাও অতিথি পাখির দেখা মিলছে না। জলাশয়, জলাধার, খাল, বিল, নদী-নালা যাই বলি না কেন, এখন আর কোনো স্থানেই অতিথি পাখির কলরব নেই।

গত ১০ বছর আগেও উপজেলার বিভিন্ন বিল, ঝিল, নদীনালা ও খালগুলোতে শীতের মৌসুম আসতে না আসতেই নানা রকম ও নানা আকৃতির অতিথি পাখিতে সয়লাব থাকতো। প্রকৃতিবিনাশী বিয়ানীবাজারে পাখিরা কিচিরমিচির করতে যেন অভিমান করেছে।

এখানকার বনভূমি উজাড় হচ্ছে, কংক্রিটের ভারে তলিয়ে যাচ্ছে ঘাসভরা মাটি। ফসলের ক্ষেত দখল করছে কীটনাশক। উন্নয়নের কাছে প্রতিবছর হারিয়ে যাচ্ছে অসংখ্য গাছ। ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছে পাখিদের কোলাহলমুখর সবুজ দুনিয়া।

Manual6 Ad Code

বিয়ানীবাজারের গ্রামাঞ্চলে এখন আর আগের মতো পাখির ডাকে মানুষের ঘুম ভাঙে না। বাড়ির আঙিনায় পাখিদের কিচিরমিচির ডাক, গাছের ডালে ডালে ঝাঁক বেঁধে উড়ে আসা পাখিদের সেই কলকাকলি নেই। অথচ একসময় ছিল যখন গাছে গাছে, ঝোপে-ঝাড়ে, মাঠে-ঘাটে, বিলে-ঝিলে, বাগানে কিংবা বাড়ির আঙিনায় দোয়েল, টিয়া, ঘুঘু, কাক, কোকিলসহ বিভিন্ন দেশি প্রজাতির বিচরণ চোখে পড়তো। উপজেলার চিরচেনা অভয়ারণ্যগুলোতেও এবার পাখির বিচরণ নেই। শীতের আমেজ শুরু হলেই উপজেলার মুড়িয়ার হাওরসহ ছোট-বড় বিলে বিভিন্ন অতিথি পাখির ঢল নামতো। আশ্বিন মাসের শেষের দিকে হাওর ও বিলের পানি শুকাতে শুরু করেলে সেখানে পুঁটিসহ ছোট ছোট মাছ খেতে ঝাঁকে ঝাঁকে নামতো অতিথি পাখি। জানুয়ারি আর ফেব্রুয়ারিতে রেশমি শীতের ছোঁয়া গায়ে লাগিয়ে আবারো ভবঘুরে হয় অতিথি পাখিগুলো। কিন্তু বর্তমানে আশঙ্কাজনক হারে অতিথি পাখি আসার হার কমে গেছে।

Manual3 Ad Code

আইন অনুযায়ী, অতিথি পাখি ধরা আর শিকার নিষিদ্ধ হলেও বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন এলাকায় শিকার করা হয় পাখি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, শিকারিরা ধান ক্ষেতগুলোতে নানা ধরনের রাসায়নিক বিষ প্রয়োগ করেই পাখিদের কাবু করে। পাশাপাশি আছে জালের মাধ্যমে পাতা ফাঁদ, যেগুলোতে খুব সহজেই পাখি ধরা পড়ে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ মবিন হাই বলেন, আধুনিক প্রযুক্তির ছোঁয়া, নগরায়ন, বনাঞ্চল উজাড়, জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণ, নির্বিচারে গাছ কাটা, জমিতে কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার, পাখির বিচরণ ক্ষেত্র, বাসস্থান ও খাদ্য সংকট, অবাধ শিকার ও আইনের সঠিক প্রয়োগ না থাকা এবং যথাযথ সংরক্ষণের অভাবই পাখি বিলুপ্তির মূল কারণ।

Manual1 Ad Code

উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. শামীম হোসেন জানান, নির্বিচারে বন-জঙ্গল কেটে আবাসভূমি হ্রাস করা হচ্ছে। এর ফলে পাখির বিচরণ ও বৈচিত্র্য কমে যাচ্ছে।

বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম মুস্তাফা মুন্না বলেন, অতিথি পাখিরা এ এলাকায় এসে তাদের প্রয়োজনীয় খাবার আগের মতো পায় না। শীতের কারণেই কিন্তু অতিথি পাখিগুলো এ এলাকায় আসতো। জলবায়ুর পরিবর্তনও এলাকায় অতিথি পাখির বিচরণ কমে যাওয়ার একটি উল্লেখযোগ্য কারণ।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code