প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ইতালি যেতে ব্যর্থ: হতাশায় বিয়ানীবাজারের ৩ শতাধিক যুবক

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ২০, ২০২৪, ০৯:৩২ পূর্বাহ্ণ
ইতালি যেতে ব্যর্থ: হতাশায় বিয়ানীবাজারের ৩ শতাধিক যুবক

Manual2 Ad Code

 

Manual4 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:

Manual4 Ad Code

 

Manual2 Ad Code

উন্নত জীবনের আশায় ইতালিতে ওয়ার্ক পারমিটের জন্য আবেদন করা বিয়ানীবাজারের ৩ শতাধিক যুবক হতাশায় ভূগছেন। অভিবাসনপ্রত্যাশী এই যুবকদের বেশীরভাগ ইতালি থেকে ওয়ার্ক পারমিট পেয়ে অপেক্ষার প্রহর গুনছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকে পাসপোর্টসহ ফাইল জমাও দেন। বাকিরা ফাইলই জমা দিতে পারেননি। ইতালি গিয়ে উন্নত জীবনের যে স্বপ্ন তারা দেখেছিলেন, তা যেন তাদের কাছে অভিশাপ হয়ে ফিরে এসেছে। বলা যায়, স্বপ্ন দেখতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন তারা।

সূত্র জানায়, ইতালিগামী যুবকদের প্রায় সবাই অগ্রীম ৫০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা টাকা মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। কেউ আবার ৫-৭ লক্ষ টাকাও প্রদান করেছেন। কিন্তু ইতালি যেতে না পারলেও সেই টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে শঙ্কা ভর করেছে তাদের মধ্যে। আবার যারা কয়েক লাখ টাকা খরচ করার পর ভুয়া ওয়ার্ক পারমিট পেয়েছেন, তাদের সর্বনাশ এরই মধ্যে হয়ে গেছে। যাদের ফাইল জমা হয়ে আছে তারা পড়েছেন মূল সমস্যায়। একদিকে তারা ভিসার আশায় বিনিয়োগ করেছেন কয়েক লাখ টাকা। অন্যদিকে পাসপোর্ট হাতে না থাকায় অন্য কোনো দেশেও যাওয়ার সুযোগ হচ্ছে না। এদের অনেকেই আবার আগে অন্য কোনো দেশে অভিবাসী কর্মী ছিলেন। ধনী দেশে যাওয়ার চেষ্টা করতে গিয়ে এখন তারা দুকূলই হারিয়েছেন।

বিয়ানীবাজার পৌরশহরের বাসিন্দা শাহজাহান আহমদ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে ওয়ার্ক পারমিট পান, যা এনওসি-নুলাওস্তা নামে পরিচিত। তবে সাত মাস ঘুরেও ঢাকায় ইতালি দূতাবাসের এজেন্ট ভিএফএস গ্লোবালে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাননি। ফলে এখনো জমা দিতে পারেননি সম্পূর্ণ ফাইল। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর অ্যাম্বাসিতে ফাইল জমা দিতে পারছি না। ফাইল জমা হলে এরপর যাচাই-বাছাই করে ইতালি কর্তৃপক্ষ ভিসা দেয়। অনেকে ফাইল জমা দিয়ে এখনো ভিসা পায়নি। আমি কবে ফাইল জমা দিতে পারবো সেটিই জানি না। এখন বেকার। কোনো কাজ নেই। অন্য কোনো দেশেও যেতে পারছি না।’ এরকম বহু আবেদন ৫-৬ মাস বা তারও বেশি সময় ধরে ফলাফলের জন্য অপেক্ষমাণ। তারা দূতাবাসের সব নিয়ম মেনে পাসপোর্ট ও ডকুমেন্টস জমা দিয়েছেন। এখন পাসপোর্টও ফেরত পাচ্ছেন না। আবেদন বাতিল করে অন্য কোনো দেশেও যাওয়ার সুযোগ নেই। পারিবারিক, আর্থিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইতালি থেকে যেসব ওয়ার্ক পারমিট এসেছে তার একটি বিশাল সংখ্যক ভুয়া। অভিবাসনপ্রত্যাশীর কাছ থেকে দালাল বা এজেন্সিগুলো বড় অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিলেও প্রকৃত কোনো ডকুমেন্ট আনতে পারেনি। প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে সেই অভিবাসনপ্রত্যাশীকে ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে জাল কাগজপত্র। দূতাবাসে জমা হওয়ার পর জাল কাগজের বিষয়টি ধরতে পেরেছে ইতালির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ কারণেই আটকে দেওয়া হয়েছে ইতালিতে কর্মী নেওয়ার প্রক্রিয়া।

অভিবাসনপ্রত্যাশী আরাফাত বলেন, ‘ওয়ার্ক পারমিট পাওয়ার পর তিন মাসের চেষ্টায় ফাইল জমা দিতে পেরেছি। এখন চার মাস হয়েছে। ভিসা হবে কি না, ফলাফল কবে পাবো, জানি না। অথচ ইতালি সরকারের এসব ফাইল তিন মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করার কথা। ওয়ার্ক পারমিট আনাসহ এ পর্যন্ত সাত লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ভিসা না হলে সব মাটি হয়ে যাবে। এমন অবস্থায় আছি, অন্য কোনো দেশেও যেতে পারছি না। হাতে পাসপোর্ট নেই।’

 

 

যা বলছে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়

 

এ বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. সরোয়ার আলম বলেন, ‘ইতালির এ সংকট অনেক দিনের। পাসপোর্ট জমা দিয়ে ভিসা নিষ্পত্তি না হওয়ায় মানুষ বেকার অবস্থায় রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত তারা। আমরা এ বিষয়ে সমাধানের ব্যাপারে তাদের অ্যাম্বাসিকে জানিয়েছি। যদিও ভিসা দেওয়া না দেওয়া তাদের ব্যাপার।’

 

 

Manual1 Ad Code

যা বললো ইতালির দূতাবাস

 

এ নিয়ে বিশেষ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ঢাকায় ইতালির দূতাবাস। তারা বলেছে, বিপুল সংখ্যক জাল নথি বা ডকুমেন্টের কারণে ইতালি সরকার ১১ অক্টোবর ২০২৪ পর্যন্ত বাংলাদেশসহ কয়েকটি দেশের নাগরিকদের অনুকূলে ইস্যুকৃত সব কর্ম অনুমোদনের বৈধতা স্থগিত করেছে, যা যথাযথ যাচাইকরণ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। ইতালির প্রভিনশিয়াল ইমিগ্রেশন অফিস থেকে নিশ্চিতকরণের পরে স্থগিত করা কর্ম অনুমোদনের যাচাইকরণ সম্পন্ন হওয়া সাপেক্ষে ইতালি দূতাবাস কর্ম ভিসা ইস্যু করবে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code