প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সালমান শাহ হত্যা মামলা: সামিরার মা লুসির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ৩০, ২০২৫, ০৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ
সালমান শাহ হত্যা মামলা: সামিরার মা লুসির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

Manual4 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
চিত্রনায়ক মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহর মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যা দাবি করে দায়ের করা মামলায় নতুন নির্দেশনা দিয়েছেন আদালত। মামলায় অভিযুক্ত সালমান শাহর স্ত্রী সামিরা হক ও খলনায়ক আশরাফুল হক ডনের পর এবার সামিরার মা লতিফা হক লিও ওরফে লুসির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন ঢাকার একটি আদালত।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের ভিত্তিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুজ্জামান সামিরার মা লুসির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার এ আদেশ দেন।

Manual5 Ad Code

এর আগে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রমনা থানার পুলিশ পরিদর্শক আতিকুল আলম খন্দকার লুসির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির জন্য আদালতে আবেদন করেন।

আবেদনে বলা হয়, লুসিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া চলছে। এ অবস্থায় তিনি দেশ ছেড়ে গেলে তদন্তে বিঘ্ন ঘটতে পারে। এমতাবস্থায় মামলার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত তার বিদেশ গমন রহিত থাকা প্রয়োজন, আসামির বিদেশ গমন রহিতকল্পে ‘স্টপ লিস্ট’-এ অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয় বাবস্থা গ্রহণের জন্য আদালতের অনুমতির বিশেষ প্রয়োজন। এ আবেদন পর্যালোচনা করে আদালত তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চিত্রনায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছিলেন তার বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন জানান তিনি। অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত। ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। প্রতিবেদনে সালমান শাহ’র মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়। সে সময় সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন। সবশেষ গত ২০ অক্টোবর ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক বাদীপক্ষের করা রিভিশন মঞ্জুর করে মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

এর পরিপ্রেক্ষিতে ২১ অক্টোবর রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন সালমান শাহর মামা মোহাম্মদ আলমগীর। মামলায় সালমান শাহর স্ত্রী সামীরা হকসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

সামিরা ছাড়া মামলার অপর আসামিরা হলেন— শিল্পপতি ও সাবেক চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাই, লতিফা হক লুছি, খলনায়ক ডন, ডেবিট, জাভেদ, ফারুক, মে-ফেয়ার বিউটি সেন্টারের রুবি, আব্দুস ছাত্তার, সাজু এবং রেজভি আহমেদ ফরহাদ। এছাড়া মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে।

Manual6 Ad Code

মামলার অভিযোগে মোহাম্মদ আলমগীর উল্লেখ করেন, ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর তার বোন নিলুফার জামান চৌধুরী (নীলা চৌধুরী), বোনের স্বামী কমর উদ্দীন আহমদ চৌধুরী এবং তাদের ছোট ছেলে শাহরান শাহ নিউ ইস্কাটনের বাসায় সালমান শাহের সঙ্গে দেখা করতে যান। সেখানে গিয়ে তারা জানতে পারেন, সালমান ঘুমাচ্ছেন।

কিছুক্ষণ পর প্রডাকশন ম্যানেজার সেলিম ফোন করে জানান, সালমানের কিছু হয়েছে। দ্রুত তারা বাসায় ফিরে দেখেন, সালমান শয়নকক্ষে নিথর পড়ে আছেন এবং কয়েকজন বহিরাগত নারী তার হাত-পায়ে তেল মালিশ করছেন। পাশের কক্ষে সামীরার আত্মীয় রুবি বসেছিলেন।

Manual7 Ad Code

সালমানের মা চিৎকার করে তাকে হাসপাতালে নেওয়ার অনুরোধ করেন। পথে তারা সালমানের গলায় দঁড়ির দাগ এবং মুখমণ্ডল ও পায়ে নীলচে দাগ দেখতে পান। পরে তাকে হলি ফ্যামিলি হাসপাতাল হয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, সালমান শাহ অনেক আগেই মারা গেছেন।

মোহাম্মদ আলমগীর আরো উল্লেখ করেন, সালমানের বাবা কমর উদ্দীন আহমদ চৌধুরী মৃত্যুর আগে ছেলের মৃত্যুকে হত্যা বলে সন্দেহ করে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি দরখাস্ত দাখিল করেন। এতে তিনি রমনা থানার অপমৃত্যু মামলাটি দণ্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ এবং সিআইডির মাধ্যমে তদন্তের আবেদন জানান।

সালমানের বাবার মৃত্যুর পর আলমগীর তার বোনের পক্ষ থেকে মামলাটি পরিচালনা করছেন। মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে কেউ মৃত্যুবরণ করে থাকলে প্রমাণ সাপেক্ষে তারা মামলার দায় থেকে অব্যাহতি পাবেন।

Manual2 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code