প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ওসির প্রচেষ্টায় ধরা পড়ছে দাগি অপরাধী, জনমনে ফিরেছে স্বস্তি

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ২৬, ২০২৫, ০৬:৫৬ পূর্বাহ্ণ
ওসির প্রচেষ্টায় ধরা পড়ছে দাগি অপরাধী, জনমনে ফিরেছে স্বস্তি

Manual3 Ad Code

হবিগঞ্জ সংবাদদাতা:
হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলায় মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করায় অপরাধ দমন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে এসেছে দৃশ্যমান পরিবর্তন। গত কয়েক মাসে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য উদ্ধার এবং দাগি মাদকসেবী ও কারবারিদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে পুলিশ জনআস্থার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ফলে এক সময় মাদক আতঙ্কে থাকা সাধারণ মানুষ এখন শান্তিতে দিন কাটাচ্ছেন।

মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সহিদ উল্যা দায়িত্ব নেওয়ার পর হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমানের দিকনির্দেশনায় মাদক নিয়ন্ত্রণ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কঠোর অবস্থান নেন। মাধবপুর উপজেলার তিনটি সীমান্তঘেঁষা ইউনিয়ন- ধর্মঘর, চৌমুহনী ও শাহজাহানপুর দীর্ঘদিন ধরে মাদকচক্রের নিরাপদ রুট হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। এসব এলাকার চা বাগান ও পাহাড়ি পথ দিয়ে ভারত থেকে মাদক এনে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হতো।

Manual3 Ad Code

কিন্তু গত আগস্ট থেকে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। ওসি সহিদ উল্যার নেতৃত্বে পুলিশের অভিযান পরিচালিত হচ্ছে নিয়মিতভাবে। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি এবং গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় করে গড়ে তোলেন এক শক্তিশালী টিম। প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত চলা অভিযানে উদ্ধার হচ্ছে ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাঁজা ও দেশীয় মদ। একই সঙ্গে দীর্ঘদিন পলাতক থাকা বহু আসামিও এখন পুলিশের জালে ধরা পড়ছে।

তেলিয়াপাড়া এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মাহফুজ মিয়া বলেন, “এক সময় মাদক চোরাকারবারিরা এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছিল। কিন্তু এখন চিত্র সম্পূর্ণ বদলে গেছে। তেলিয়াপাড়া ফাঁড়ির পুলিশ সদস্যরা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। সন্ধ্যা নামলেই চা বাগান সড়কে তাদের টহল দেখা যায়। এতে এলাকার মানুষ স্বস্তি পেয়েছে।”

চৌমুহনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান সোহাগ জানান, “সীমান্তসহ সব এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে পুলিশ, বিজিবি এবং জনপ্রতিনিধিরা একসঙ্গে কাজ করছে। আগের তুলনায় অপরাধ অনেক কমে এসেছে। এখন সাধারণ মানুষ রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারে।”

Manual1 Ad Code

নোয়াপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান আতাউল মোস্তফা সোহেল বলেন, “ওসি সহিদ উল্যা যেকোনো অভিযোগে তাৎক্ষণিক সাড়া দেন। হবিগঞ্জের পুলিশ সুপারও মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছেন। জনগণ এখন পুলিশকে নিজের অভিভাবক মনে করছে।”

অপরদিকে, মাধবপুর উপজেলার বুল্লা ইউনিয়নের বাসিন্দা আনিছুর রহমান বলেন, “আগে আন্দিউড়া-বুল্লা সড়ক দিয়ে রাতে চলাচল করা একেবারেই নিরাপদ ছিল না। প্রায়ই চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটত। কিন্তু এখন পুলিশের নিয়মিত টহল এবং নজরদারি বৃদ্ধির কারণে অপরাধ অনেকটাই কমে গেছে। মানুষ এখন নির্ভয়ে চলাফেরা করতে পারছে।”

আন্দিউড়া ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, “এখন পুলিশ আগের চেয়ে অনেক বেশি তৎপর। দাগি অপরাধীরা একে একে ধরা পড়েছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। জনগণ এখন পুলিশের ওপর আস্থা রাখছে।”

মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সহিদ উল্যা বলেন, “মাদক ও অপরাধ দমন এখন আমাদের অগ্রাধিকার। মাদক শুধু একজনকে নয়, পুরো সমাজকে ধ্বংস করে দেয়। তাই আমরা মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছি। প্রতিদিনই আমাদের টিম মাঠে কাজ করছে। যেখানেই অপরাধী, সেখানেই অভিযান।”

Manual8 Ad Code

তিনি আরও বলেন, “জনগণের সহযোগিতা ছাড়া মাদক বা অপরাধ নির্মূল সম্ভব নয়। কেউ মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকলে, তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে—সে যত প্রভাবশালীই হোক না কেন।”

Manual8 Ad Code

হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার এএনএম সাজেদুর রহমান বলেন, “মাধবপুরসহ জেলার সব থানায় মাদক ও অপরাধ দমনে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যারা সমাজে অশান্তি সৃষ্টি করছে, তারা কেউই আইনের হাত থেকে রেহাই পাবে না। পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক যত ঘনিষ্ঠ হবে, সমাজ তত বেশি নিরাপদ হবে।”

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code