প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৯ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৮ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

সহজ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২৮, ২০২৪, ০৫:৪০ পূর্বাহ্ণ
সহজ হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

Manual2 Ad Code

প্রবাস ডেস্ক:
অভিবাসনবান্ধব দেশ অস্ট্রেলিয়ার জনপ্রিয় কর্ম ভিসায় আবেদন ও পরবর্তী সময়ে স্থায়ী বাসিন্দা এবং তা থেকে নাগরিক হওয়ার প্রক্রিয়া আরও সহজ হতে চলেছে। আবেদন করতে মাত্র এক বছরের কাজের অভিজ্ঞতা এবং দুই বছর পরই স্থায়ী ভিসায় আবেদন করার সুবিধাসহ বেশ কিছু নতুনত্বের ইঙ্গিত চলছে দেশটির অভিবাসন বিভাগের প্রস্তাবে। একদিকে দেশটির শিক্ষার্থী ভিসা পাওয়া কঠিন হলেও কাজের ভিসা সহজ হওয়ার প্রস্তাব দেশটির অভিবাসী কমিউনিটিতে সাড়া ফেলেছে।

অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস এবং কাজের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং প্রাথমিক অস্থায়ী ভিসা হলো সাবক্লাস ৪৮২ টেম্পোরারি স্কিল শর্টেজ ভিসা। এই ভিসা ২০১৭ সালে আসে তৎকালীন কাজের ভিসা সাবক্লাস ৪৫৭–কে পরিবর্তন করে। বলা হচ্ছে, বর্তমান ৪৮২ কাজের ভিসাও বদলে গিয়ে নতুন আরেকটি ভিসার ঘোষণা দেবে অভিবাসন বিভাগ। অভিবাসন মন্ত্রণালয়ের সাম্প্রতিক ‘অভিবাসন প্রকল্প’ প্রকাশনায় নতুন একটি ‘স্কিলস ইন ডিমান্ড’ নামের ভিসার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ছিল কাজের ভিসার আবশ্যিক শর্তের নতুনত্বের বিষয়ও।

Manual4 Ad Code

সাবক্লাস ৪৮২ থেকে নতুন স্কিলস শর্টেজ ভিসায় রূপান্তরের পাশাপাশি এই নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে কিছু পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান সুবিধা যা থাকছে, কাজের ভিসায় আবেদন করতে মাত্র এক বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকলেই হবে। বর্তমানে কমপক্ষে দুই বছর অভিজ্ঞতা থাকা আবশ্যক। যেমন কোনো বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসায় আবেদন করতে চাইলে, তাঁকে কমপক্ষে দুই বছরের ওই কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

বর্তমানে দুই বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হয় সর্বোচ্চ বিগত পাঁচ বছর সময়কালের মধ্যে। অর্থাৎ আবেদন করার সময়ের আগের পাঁচ বছরের মধ্যে অন্তত দুই বছর একই পেশায় কাজের অভিজ্ঞতার আবশ্যিক শর্ত পূরণ করতে হয়। তবে নতুন প্রস্তাবনায় এই শর্তও সম্পূর্ণ তুলে নেওয়ার কথা রয়েছে। সহজে পেশা পরিবর্তনের সুবিধা দেওয়ার জন্য এই নতুনত্ব আনার কথা বলা হচ্ছে।

Manual4 Ad Code

কাজের অভিজ্ঞতা পূরণের শর্তে দুই বছর ফুলটাইম কাজ অথবা সমমানের পার্টটাইম কাজ দেখাতে হতো। তবে নতুন প্রস্তাবনায় অস্থায়ী বা ‘ক্যাজুয়াল’ কাজের অভিজ্ঞতাকেও বছরের অভিজ্ঞতার শর্ত পূরণে ব্যবহার করা যাবে।

Manual1 Ad Code

স্কিলস ইন ডিমান্ড নামের নতুন ভিসায় পেশা এবং বেতনের ভিত্তি করে কয়েকটি ভাগে ভিসা দেওয়া হতে পারে। বর্তমানে যেমন ৪৮২ কাজের ভিসায় শর্ট-টার্ম, মিডিয়াম-টার্ম এবং লেবার অ্যাগ্রিমেন্ট—এই তিন ভাগে ভিসা রয়েছে, তেমনই নতুন ভিসায় আসতে চলেছে স্পেশালিষ্ট স্কিলস পাথওয়ে, কোর স্কিলস পাথওয়ে এবং এসেনশিয়াল স্কিলস পাথওয়ে। প্রাথমিক তথ্যমতে, বার্ষিক ১ লাখ ৩৫ হাজার অস্ট্রেলীয় ডলার বেতনের পেশায় আবেদন করা যাবে স্পেশালিষ্ট হিসেবে। প্রায় ৭৪ হাজার ডলার বেতনের পেশা থাকবে দ্বিতীয় ভাগে। বলা হচ্ছে, বেশির ভাগ জনপ্রিয় পেশাগুলোই থাকবে এই ভাগে। আর তৃতীয় ভাগে খুব অল্প বেতনের কর্মীরাও অস্ট্রেলিয়ায় কাজের সুযোগ পাবে। কৃষি কিংবা ভবন নির্মাণ শ্রমিকেরা এই ভিসায় আবেদনের সুযোগ পাবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

অস্ট্রেলিয়ার কর্ম ভিসাগুলোর প্রধান আবশ্যিক শর্ত হচ্ছে একটি অস্ট্রেলিয়ার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আবেদনকারীকে চাকরির সুযোগ দেওয়া অর্থাৎ স্পন্সর করা। অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন বিভাগের অনুমোদন পাওয়া ‘অ্যাপ্রুভড স্পন্সর’ই কেবলমাত্র কাজের ভিসার জন্য কাউকে মনোনয়ন করতে পারে। এখন বাংলাদেশ থেকে কেউ অস্ট্রেলিয়ায় আসতে হলে তাঁকে অবশ্যই এমন স্পন্সরের মাধ্যমে চাকরির ব্যবস্থা করতে হবে যা বাস্তবত অনেক কঠিন। আবার স্পন্সরের নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার নজিরও রয়েছে। তাই খুব সাবধান। কাজের ভিসায় আসা নতুন সুবিধাগুলো সবচেয়ে ভালো নিতে পারবেন অস্ট্রেলিয়ায় অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা। যারা অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করতে এসেছেন, তাঁরা স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করার জন্য এই ভিসা নেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। সরাসরি ব্যবসাপ্রতিস্টানের সঙ্গে কথা বলে এই ভিসার ব্যবস্থা করতে পারেন। তাঁরা সাবক্লাস ৪৮২ ভিসার নতুনত্বের মাধ্যমে অস্ট্রেলিয়ায় কাজের ভিসাসহ স্থায়ী বসবাসের পথে এগিয়ে যেতে পারবেন বলে আশা করছেন অভিবাসন–বিশেষজ্ঞরা।

Manual4 Ad Code

প্রায় প্রতিবছরই অস্ট্রেলিয়ার অভিবাসন আইনে কোনো না কোনো পরিবর্তন এসে থাকে। এ ধরনের আইনের ভুল ব্যাখ্যা এবং চটকদার সংবাদের প্রলোভন দেখিয়ে বিদেশ গমনে ইচ্ছুক বহু ব্যক্তির আর্থিক ক্ষতি সাধন করে থাকে কিছু অসাধু প্রতারক চক্র। তাই বিশেষ করে শুধু ‘টাকা দিলেই কি অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া যায়’ এমন ভাবনা থেকে বিরত থাকার সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়ে থাকেন অভিবাসন আইনজীবীরা। এ ছাড়া ইংরেজিতে দক্ষতা প্রমাণ একটি আবশ্যিক শর্ত। ইংরেজি জানার প্রমাণ ছাড়া অস্ট্রেলিয়ার কাজের ভিসা হওয়ার কথা কেউ বললেও সেটি প্রতারক চক্র হিসেবে চিহ্নিত করার কথা বলেন অভিবাসন–বিশেষজ্ঞরা।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code