প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৯ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

হাসিনা সরকারের দায় অন্তর্বর্তী সরকারের ঘাড়ে

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ২৭, ২০২৪, ০৭:০৬ পূর্বাহ্ণ
হাসিনা সরকারের দায় অন্তর্বর্তী সরকারের ঘাড়ে

Manual2 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

Manual2 Ad Code

আজ থেকে ২৫ বছর আগের কথা। ১৯৯৭ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে চুক্তিভঙ্গের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করেছিল এক মার্কিন বিদ্যুৎ কোম্পানি। সেই মামলা নিয়ে এবার বিপাকে পড়লেন যুক্তরাষ্ট্র সফররত অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। আচমকা তাদের বিরুদ্ধে জারি হলো গ্রেফতারি পরোয়ানা। পরে অবশ্য এই পরোয়ানা স্থগিত হয়েছে। তবে ২৫ বছর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে করা মামলার দায় কেন এই অন্তর্বর্তী সরকারের ঘাড়ে এসে চাপল, এ প্রশ্নের যথাযথ উত্তর মেলেনি। সূত্র জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকার এ ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার মার্কিন বিদ্যুৎ কোম্পানি স্মিথ কোজেনারেশনের সঙ্গে একটি চুক্তি করে। এই চুক্তির আওতায় দেশের উত্তরাঞ্চলে একটি বার্জ মাউন্টেড বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কথা ছিল। দুই বছর পর অর্থাৎ ১৯৯৯ সালে সেই চুক্তি বাতিল করা হয়। কী কারণে এই চুক্তি বাতিল হয়েছিল; জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা জানান, কমিশন নিয়ে অভ্যন্তরীণ টানাপড়েনের কারণে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের পক্ষ থেকে চুক্তি বাতিল করা হয়। সে সময়কার বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর এ নিয়ে বেশ বাদানুবাদ হয়েছে বলে জানা গেছে। এই চুক্তি বাতিল হওয়ার পর সে সময় তৎকালীন সরকারের কাছে ৩১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলারের ক্ষতিপূরণ চেয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মামলা করে স্মিথ কোজেনারেশন।

জানা গেছে, এই মামলাতেই যুক্তরাষ্ট্র সফররত অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছিল। ইউএস ডিস্ট্রিক্ট বিচারক কার্ল জে নিকোলস স্মিথ তাদেরকে আদালতে হাজির করার নির্দেশ দেন। পরে অবশ্য বাংলাদেশ সরকারের দ্রুততম পদক্ষেপের কারণে পরোয়ানা স্থগিত হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে খোদ প্রধান উপদেষ্টার দফতর তৎপর হয়ে যায়। আর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিক ফজল আনসারী আন্তরিকতার সঙ্গে দ্রুত পদক্ষেপ নেন।

পরোয়ানার বিপরীতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে যে আপিল করা হয়, তাতে বলা হয়; যে দুজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। তারা বিশ্ব ব্যাংক ও আইএমএফের আমন্ত্রণে সম্মেলনে যোগদান করতে এসেছেন। কেবল তাই নয়, তারা দুজনই উচ্চ পর্যায়ের বাংলাদেশি কূটনীতিক এবং আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তা। তাই তারা যুক্তরাষ্ট্রের ফৌজদারি ও দেওয়ানি মামলা থেকে দায়মুক্ত। বিচারক নিকোলস আদালতে যে রায় দিয়েছেন, তা এখতিয়ারবহির্ভূত। একই সঙ্গে গ্রেফতারের প্রয়োগ-অযোগ্য।

Manual4 Ad Code

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বাংলা সংবাদমাধ্যম ‘ঠিকানা’র এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্রেফতার আদেশের খবর পাওয়ার পর হঠাৎ করেই অর্থ উপদেষ্টা ও গভর্নর ওয়াশিংটন ডিসির ১০নং সড়কে অবস্থিত অ্যাম্বসি হোটেল ছেড়ে দেন। দূতাবাসের গাড়িতে তারা দুজনই মেরিল্যান্ডের বেথেসদা ৪নং হাইবারো কোর্টের বাসায় চলে যান। শুক্রবার সারাদিন তারা বাসা থেকে বের হননি। গ্রেফতার আতঙ্কে তারা যুক্তরাষ্ট্রে মেরিল্যান্ডে অবস্থিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের বাসাতেই ছিলেন। এটি কূটনীতিক এলাকা হওয়ার সুবাদে পুলিশের আটকের আতঙ্ক ছিল না। পরোয়ানা স্থগিতের পর তাদের মধ্যে স্বস্তি ফেরে।

দীর্ঘ প্রায় ২৫ বছর পর এখতিয়ারবহির্ভূত একটি রায় কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এতদিন পর এসে কেন গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের চেষ্টা; সে বিষয়ে সরকার খোঁজখবর নিচ্ছে বলে জানা গেছে। এর জন্য বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী বিশেষভাবে দায়িত্ব পালন করবেন।

Manual2 Ad Code

 

সূত্র জানিয়েছে, পূর্ববর্তী বিভিন্ন চুক্তি খতিয়ে দেখারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। একই সঙ্গে চুক্তি বাতিল হওয়ার দায় কেন এই অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর বর্তাল; তাও খতিয়ে দেখবে সরকার। প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের কোনো ধরনের দায় নিতে চায় না এই অন্তর্বর্তী সরকার।

Manual7 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code