প্রজন্ম ডেস্ক:
সাড়ে আট বছরের মাথায় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বি দলীয় ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য নতুন প্রতীক সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
১৯৯১ সালে পঞ্চম ও ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনে সর্বোচ্চ ১৪০টি প্রতীক সংরক্ষিত ছিল সংসদ নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায়। সব নির্বাচনের জন্য আলাদা আলাদা প্রতীক করায় ২০১৭ সালে তা প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন দল ও প্রার্থীদের সুবিধার্থে প্রতীক সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ।
এবার নিবন্ধন পেতে ১৪৪টি দলের ১৪৭টি নতুন আবেদন জমা পড়েছে। ইতোমধ্যে নিবন্ধন আবেদন পর্যালোচনাও শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন-ইসি সচিবালয়।
নতুন করে কতটি প্রতীক যুক্ত হচ্ছে, জানতে চাইলে শুক্রবার এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, “কতটি প্রতীক যুক্ত হবে এটা এখন বলতে পারছি না। এটা নির্ভর কটি দল রেজিস্ট্রেশন পাবে তার উপর। দল যত বেশি হবে, প্রতীকে সংখ্যাও বাড়বে।”
ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, এবার অনেক দলই কমিশনের সংরক্ষিত তালিকার বাইরে হরেক রকমের প্রতীক চেয়েছে এবং একই প্রতীকও অনেকে চেয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য বরাদ্দ তালিকা থেকে অনেক দলের প্রতীক সংরক্ষণ করায়, স্বতন্ত্রের প্রতীক সংকট হতে পারে। সব বিষয় বিবেচনা করে শতাধিক প্রতীকের নাম ইসি সচিবালয় প্রস্তাব করছে।
জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের ভোটে লড়তে প্রার্থীদের জন্য রয়েছে আলাদা আলাদা প্রতীক। এক্ষেত্রে দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বি স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রতীক বরাদ্দ দেন রিটার্নিং অফিসার।
সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে দলগুলোর নিবন্ধন প্রথা ২০০৮ সালে চালু হয় এবং দলটির অনুকূলে প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়। এসময় নির্বাচন পরিচালনা বিধিমালায় ১৪০টি প্রতীক সংসদ নির্বাচনের জন্য তালিকাভুক্ত করে।
২০১৫ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার স্থানীয় নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করতে আইনে সংশোধন আনে।
এ ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সরকারের পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচনের জন্য আলাদা আলাদা প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়। এরমধ্যে সিটি, পৌর, উপজেলা, জেলা ও ইউপির বিভিন্ন পদে দলীয় প্রতীকের পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য প্রতীক সংরক্ষণ করে কমিশন।
সবশেষ সংসদ নির্বাচনে দলীয় ও সংরক্ষিত প্রতীক হিসেবে ৬৯টি প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়। এরমধ্যে বর্তমানে নিবন্ধিত দলের জন্য ৫০টি রয়েছে; পাশাপাশি নিবন্ধন স্থগিত ও বাতিল রয়েছে এমন পাঁচটি দলেরও প্রতীক সংরক্ষিত ছিল। বাকি ১৯টি প্রতীক স্বতন্ত্র প্রার্থীর।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আবার প্রতীক সংখ্যা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
সংসদ নির্বাচনের জন্য সংরক্ষিত প্রতীক এখন ৬৯
সংসদ নির্বাচনে এ পর্যন্ত ৫৫টি দল প্রতীকসহ নিবন্ধন পায়।বর্তমানে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীক রয়েছে যে ১৯টি। এগুলো হচ্ছে-কলার ছড়ি, খাট, ঘণ্টা, তবলা, তরমুজ, দালান, বাঁশি, বেঞ্চ, বেলুন, স্যুটকেস, আলমিরা, থালা, ঢেঁকি, চার্জার লাইট, মোড়া, কাঁচি, ফ্রিজ, সোফা, দোলনা।
স্থানীয় সরকারের ভোটকে সামনে ২০১৭ সালে আলাদা আলাদা প্রতীক সংরক্ষণ করে ইসি সচিবালয় গেজেট প্রকাশ করে।
ইউপি চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রতীক ১০
ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকগুলোর তালিকার মধ্যে রয়েছে-অটোরিকশা, টেলিফোন, আনারস, চশমা, ঘোড়া, দুটি পাতা, টেবিল ফ্যান, মোটর সাইকেল, ঢোল, রজনীগন্ধা।
সংরক্ষিত আসনের সদস্য পদের প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকায় রয়েছে-কলম, বক, ক্যামেরা, সাঁকো, তালগাছ, মাইক, জিরাফ, হেলিকপ্টার, বই, সূর্যমুখী ফুল।
আর সাধারণ আসনের সদস্য পদের প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকায় রয়েছে- আপেল, টর্চ লাইট, ক্রিকেট ব্যাট, ভ্যান গাড়ি, ঘুড়ি, বৈদ্যুতিক পাখা, টিউবওয়েল, মোরগ, পানির পাম্প, লাটিম, ফুটবল ও তালা।
উপজেলা চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রতীক ১৩
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকায় রয়েছে-আনারস, ব্যাটারি, কাপ-পিরিচ, হেলিকপ্টার, চিংড়ি মাছ, ফেজ টুপি, মোটর সাইকেল, মুকুট, ঘোড়া, জোড়া ফুল, টেলিফোন, হাঙ্গর, দোয়াত-কলম ও নারিকেল জোড়া।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকায় রয়েছে আইসক্রিম, টিয়া পাখি, উড়োজাহাজ, তালা, গ্যাস সিলিন্ডার, পালকি, চশমা, বই, টাইপ রাইটার, বৈদ্যুতিক বাল্ব, টিউবওয়েল ও মাইক।
মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের মধ্যে রয়েছে-প্রজাপতি, পদ্ম ফুল, হাঁস, ফুলের টব, ফুটবল, বৈদ্যুতিক পাখা, ক্যামেরা, তীর-ধনুক, কলস ও সেলাই মেশিন।
আর মহিলা সদস্য পদে নির্বাচন প্রার্থীদের জন্য প্রতীক রয়েছে- টেবিল, চাঁদ, মোরগ, রূপচাঁদা, পেঁপে, খরগোশ, বালতি, বক, হরিণ ও গিটার।
পৌরসভার মেয়র পদে স্বতন্ত্র ১২
পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকায় রয়েছে- ইস্ত্রি, নারিকেল গাছ, কম্পিউটার, বড়শি, ক্যারামবোর্ড, মোবাইল ফোন, চামচ, রেল ইঞ্জিন, জগ, হ্যাঙ্গার, টাই ও হেলমেট।
সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকসমূহের তালিকার মধ্যে রয়েছে-অটোরিকশা, টেলিফোন, আনারস, দ্বিতল বাস, আংটি, বলপেন, চশমা, মেট্রোরেল, জবা ফুল ও হারমোনিয়াম।
সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের জন্য রয়েছে- উটপাখি, গাজর, টিউব লাইট, টেবিল ল্যাম্প, ডালিম, ঢেঁড়শ, পাঞ্জাবি, পানির বোতল, ফাইল কেবিনেট, ব্রিজ, ব্ল্যাক বোর্ড ও স্ক্রু ড্রাইভার সংরক্ষিত প্রতীক।
সিটি মেয়র পদে স্বতন্ত্র ১২
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকায় রয়েছে- ক্রিকেট ব্যাট, দিয়াশলাই, ঘোড়া, ফ্লাস্ক, চরকা, বাস, টেবিল ঘড়ি, ময়ূর, টেলিস্কোপ, হরিণ, ডিস এন্টেনা ও হাতি।
সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীক রয়েছে-আনারস, গ্লাস, চশমা, জিপ গাড়ি, ডলফিন, বই, বেহালা, মোবাইল ফোন, স্টিল আলমারি ও হেলিকপ্টার।
সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকা- এয়ারকন্ডিশনার, ট্রাক্টর, করাত, ঠেলাগাড়ি, কাঁটা চামচ, ব্যাডমিন্টন র্যাকেট, ঘুড়ি, মিষ্টি কুমড়া, ঝুড়ি, রেডিও, টিফিন ক্যারিয়ার ও লাটিম।
জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে ১২ প্রতীক
জেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদের প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকগুলো হচ্ছে- আনারস, টেবিল ফ্যান, কাপ-পিরিচ, তালগাছ, ঘোড়া, প্রজাপতি, চশমা, মোটরসাইকেল, চিংড়ি মাছ, মোবাইল ফোন, জিপ গাড়ি, হেলিকপ্টার।
সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্য পদের প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকের তালিকায় রয়েছে-কম্পিউটার, ফুটবল, টেবিল ঘড়ি, বই, টেলিফোন, মাইক, ডিস এন্টেনা, লাটিম, দোয়াত কলম, হরিণ।
সদস্য পদের প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত প্রতীকগুলো হচ্ছে- অটোরিকশা, ঢোল, উটপাখি, তালা, ক্রিকেট ব্যাট, বক, ঘুড়ি, বেহালা, টিউবওয়েল, বৈদ্যুতিক পাখা, টিফিন ক্যারিয়ার ও হাতি।
পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ছিল ১৪০ প্রতীক, দল ৯০
১৯৯১ সালের পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের আগে ৯০টি দলের জন্য প্রতীক বরাদ্দ করেছিল তৎকালীন নির্বাচন কমিশন। ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ৭৫টি দল সে নির্বাচনে অংশ নেয়, অবশ্য ৬৩টি দল কোনো আসন পায়নি। আর ঢাকা-৬ আসনে সর্বোচ্চ ২৬ জন প্রার্থী ছিল।
তখন নির্বাচন পরিচালনা বিধিতে ৭৩টি প্রতীক ছিল।
দল নিবন্ধন প্রথা চালু না থাকায় প্রতীকের চেয়েও বেশি, ১১১টি দল ভোটে অংশ নিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নতুন প্রতীক যুক্ত করে কমিশন তা দ্বিগুণ বা ১৪০টিতে সংরক্ষণ করে। এরমধ্যে ৯০টি দলের জন্য এবং ৫০টি স্বতন্ত্র প্রার্থীর জন্য।
সেই ১৪০টি প্রতীক তালিকায় ছিল- উড়োজাহাজ, আলমারী, নোঙর, আপেল, কুড়াল, বৈঠা, বৈয়ম, বেলুন, বাঁশের ঝুড়ি, বটগাছ, ব্যাটারী, বেঞ্চ, ঘণ্টা, পান, বাই-সাইকেল, নৌকা, বই, তীর ও ধনুক, বালতি, গরুরগাড়ী, ইট, দালান, বাস, প্রজাপতি, খাঁচা, উট, ক্যামেরা, মোমবাতি, মোটরগাড়ী, ঠেলাগাড়ী, ফুলকপি, চেয়ার, দেওয়াল ঘড়ি, মোরগ, ডাব (নারিকেল), শামুক, গাড়ী, কাপ ও পিরিচ, কুমির, ডালিম, খেজুর গাছ, হরিণ, চৌকি, হাঁস, একতারা, বৈদ্যুতিক বাল্ব, বৈদ্যুতিক পাখা, হাতী, হাতপাখা, ফেজটুপি, মাছ, মশাল, ফ্লাক্স, ফুটবল, কড়াই, ফুলের মালা, হাতুড়ী, পাঞ্জা, হেলিকপ্টার, বড়শী, হুক্কা, ঘৌড়া, কুঁড়েঘর, দোয়াত কলম, কাঁঠাল, ঝুমঝুমি, কামরাংগা, কেতলী, চাবি, খাঁট, ঘুড়ি, কুলা, মই, প্রদীপ, হারিকেন, সিংহ, গলদা চিংড়ী, তালা, পদ্মফুল, আম, দিয়াশলাই, মাথাল, মাইক, মিনার, চাঁদ, মোড়া, মগ, মুলা, পিঁয়াজ, কমলা, পালকি, টিয়াপাখী, পেঁপে, ময়ুর, কবুতর, আনারস, পিড়ি, কলসী, থালা, লাঙ্গল, পাওয়ার টিলার (কলের লাংগল), রেডিও (ট্রানজিসটার), রেলওয়ে ইঞ্জিন, রিক্সা, আংটি, উদীয়মান সূর্য, রকেট, গোলাপফুল, কলার ছড়া, করাত, দাঁড়িপাড়া, সেলাই মেশিন, ধানের শীষ, শীলপাটা, জাহাজ, কাস্তে, কোদাল, চশমা, চরকা, চামচ, তারকা, সুটকেস, তরবারী, টেবিল, টেবিল ঘড়ি, টেলিফোন, টেলিভিশন, টিফিন ক্যারিয়ার, বাঘ, লাটিম, ট্রাক, ফুলের টব, নলকূপ, পানির গ্লাস, পাগড়ী, ছাতা, ছড়ি, চাকা, হুইসেল (বাঁশি) ও হাতঘড়ি।
প্রতীক বরাদ্দে নীতিমালা
পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে দলের প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে তখনকার বিচারপতি আব্দুর রউফ কমিশন পাঁচটা নীতি অনুসরণ করে-
>> ১৯৭৯ সালে এবং তার পরে সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের অনুকূলে বরাদ্দকৃত প্রতীক যথাসম্ভব বহাল থাকবে।
>> রাজনৈতিক দলের অতীত ও বর্তমান সদস্য সংখ্যা, ইতিপূর্বে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অংশগ্রহণ, ফলাফল বিবেচনায় থাকবে।
>> যে সব রাজনৈতিক দল শুধু বিশেষ একটি প্রতীকের জন্য আবেদন করবে তা সে দলের অনুকূলে সংরক্ষণ করা হবে।
একই প্রতীকের জন্য একাধিক রাজনৈতিক দল দাবিদার হলে তাদের সমঝোতার অনুরোধ; ব্যর্থ হলে কমিশন প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে স্বীয় পদ্ধতি অবলম্বন করবে। প্রয়োজনে লটারি হবে।
>> যে সকল রাজনৈতিক দল প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে একাধিক পছন্দ থাকবে, তাদের পছন্দ যথা-সম্ভব বিবেচনায় রাখবে।
৩৪ বছর আগেও শাপলা পায় কোনো দল
পঞ্চম সংসদ নির্বাচনে ১১১টি দল প্রতীক চেয়ে আবেদন করে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ ৯টি প্রতীক চেয়েও আবেদনের রেকর্ড রয়েছে।
জাতীয় পার্টির লাঙ্গল প্রতীক থাকলেও জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক চাষী দল-জাগচাদ, জনশক্তি পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ, জাতীয়তাবাদী পল্লী দলও (এনডিপি) লাঙ্গল চেয়েছিল।
বিএনপির ধানের শীষ থাকলেও ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ ভাসানী), ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী ন্যাপ), জন দল, কৃষক শ্রমিক পার্টি, ডেমোক্রেটিক লীগ, ছয় দলীয় জোট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগেরও ধানের শীষ প্রতীক পছন্দের তালিকায় ছিল।
রাজশাহীর সমতা পার্টি শাপলা ফুল, কবুতর ও ছাতা প্রতীক চেয়েছিল। তবে দলটি পরে বৈঠা প্রতীক পেয়েছিল।
পঞ্চম সংসদ নির্বাচনের প্রতিবেদনে বলা হয়, নির্ধারিত প্রতীক ও প্রথম পছন্দ অনুযায়ী ১৭টি দল প্রতীক পায়। একই প্রতীকের জন্য একাধিক দল/জোটের দাবির বিষয়ে সমঝোতা না আসায় সব দাবিদারের উপস্থাপিত যুক্তিসহ শুনানির পর এ নীতিমালা অনুসারে ১৬টি প্রতীক সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
সমঝোতায় নিষ্পত্তি সম্ভব না হলে ৩টি প্রতীক লটারির মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়।
যেসব দল প্রথম পছন্দর প্রতীক পায়নি, তাদের পরবর্তী পছন্দ ও যৌক্তিতা শুনে চারটি প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়।
যেসব দল আবেদনের কোনো প্রতীকই পায়নি, বাকি প্রতীক থেকে চাহিদা অনুযায়ী ২৫টি প্রতীক সংরক্ষণ করা হয়। এরপর অতিরিক্ত ২৫টি বাকি থাকা অন্যদের জন্য সংরক্ষণ করা হয়।
দলের বাইরে ৫০টি প্রতীক স্বতন্ত্র ও অন্যান্য প্রার্থীদের জন্য রিটানিং অফিসারের বরাদ্দের জন্য সংরক্ষিত থাকে।
এবার কীভাবে প্রতীক বরাদ্দ দেবে ইসি
ইতোমধ্যে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি শাপলা, কলম ও মোবাইল প্রতীক চেয়েছে। অগ্রাধিকারে রয়েছে শাপলা। চাবি, হাতি, দালানসহ হরেক প্রতীক চেয়েছে দলগুলো।
নির্বাচন কমিশন কর্মকর্তারা বলেছেন, দল ও প্রার্থীর প্রতীক বরাদ্দে কখনও জাতীয় প্রতীকের বিষয়টি সামনে না এলেও এবার বেশ আলোচনায় এসেছে। বাঘ, সোনালী আঁশ, কাঁঠাল বরাদ্দের সময়ও কখনও কারো আপত্তি আসেনি।
নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি বলেছেন, ২০০৮ সালে নিবন্ধন দেওয়ার সময় স্বাধীনতার পর যারা যে প্রতীকে নির্বাচন করেছে সেই প্রতীক চেয়েছে এবং কমিশন তা বরাদ্দ দিয়েছিল। নিবন্ধন শর্ত পূরণ করতে পারলে প্রতীকও পেয়েছে। সাধারণত একই রকম দেখতে প্রতীক যেন একাধিক দল ও প্রার্থীকে বরাদ্দ না দেওয়া হয়; যাতে ব্যালট পেপারে ভোটাররা বিভ্রান্ত না হয় সে বিষয়টি দেখা হয়।
তিনি বলেন, “এখন নতুন দল বেড়েছে, প্রতীক নিয়েও পছন্দ বেড়েছে। সেক্ষেত্রে কমিশনই সার্বিক বিষয় বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেবে। আর ভোটের সময় রিটার্নিং কর্মকর্তারা দলীয় প্রার্থীর বাইরে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে আইন-বিধি মেনেই করে।”
জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, “দলের প্রতীক বরাদ্দের বিষয়ে সাধারণত ওখানে একটা অগ্রাধিকার দেয়, তাদের অগ্রাধিকার, কে কোন প্রতীক চায়। একাধিক দল একটা প্রতীক পছন্দ করলে কমিশন স্বীয় বিবেচনায় যেটা বলবে, সেটাই হবে।”
বরাদ্দ দেওয়ার পর অবশিষ্ট থাকলে ১০ থেকে ২০টি প্রতীকের মধ্যে দলগুলোর কাছে জানতে চাওয়া হবে, তারা কোনটা চায়।
তিনি বলেন, “একাধিক দল যদি একটা প্রতীক চায়, তখন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপার থাকে। আর যদি একটা পছন্দ থাকে, প্রতীকও থাকে সেটাই সাধারণত দেওয়া হয়।”
এ নির্বাচন কমিশনার বলছেন, এবার সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রতীক সংখ্যা বাড়বে। তবে স্থানীয় নির্বাচনের প্রতীক বাড়ানো হবে কিনা তা জানেন না তিনি।
মাছউদ বলেন, “এখন কতগুলো দল নিবন্ধন পাবে তা দেখতে হবে। নতুন দল নিবন্ধনের সংখ্যা কম হলে সেভাবে থাকবে প্রতীক, নিবন্ধন বেশি পেলে প্রতীকের সংখ্যাও বাড়বে।”
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম
প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২
ইমেইলঃ agamiprojonma@gmail.com, milad.jaynul@gmail.com