প্রজন্ম ডেস্ক:
পূর্ব জেরুজালেমে (ফিলিস্তিনের দখলকৃত) অবস্থিত আল-আকসা মসজিদের নিচে গোপন খনন করছে ইসরায়েল। এর মাধ্যমে তারা মুসলিমদের দ্বিতীয় কিবলা বলে পরিচিত এই স্থাপনার ইসলামি প্রত্নতাত্বিক নিদর্শন ধ্বংস করছে ইসরায়েল। এমন অভিযোগ তুলেছে ফিলিস্তিনি প্রশাসন।
ফিলিস্তিনের অভিযোগ, আল-আকসার ঐতিহাসিক পরিচয় মুছে দিয়ে শহরকে ইহুদিকরণের ষড়যন্ত্র চলছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, ইসরায়েল দখলকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদের নিচে গোপনে খনন চালাচ্ছে এবং ইসলামি নিদর্শন ধ্বংস করছে বলে অভিযোগ করেছে ফিলিস্তিনি প্রশাসন।
গত রবিবার এক বিবৃতিতে জেরুজালেম প্রশাসন জানায়, একটি ফাঁস হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে ইসরায়েলি বাহিনী আল-আকসার নিচে বেআইনি খনন কাজ চালাচ্ছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে উমাইয়া যুগের ইসলামি প্রত্ননিদর্শন ধ্বংস করছে। এগুলো মুসলিমদের এই স্থানের ন্যায্য মালিকানার জীবন্ত প্রমাণ ও সুস্পষ্ট দলিল।
তাদের দাবি, “আল-আকসার ঐতিহাসিক পরিচয় মুছে ফেলার উদ্দেশ্যে এবং কথিত ‘টেম্পল মাউন্ট’ বর্ণনাকে জোরালো করার জন্য ইসরায়েল এসব ইসলামি নিদর্শন ধ্বংস করছে।”
জেরুজালেম প্রশাসন সতর্ক করে আরও জানায়, আন্তর্জাতিক তদারকি এড়িয়ে গোপনে এই খননকাজ করা হচ্ছে। এতে মসজিদটির ভিত্তি এবং ঐতিহাসিক স্থাপনার ওপর গুরুতর ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, এসব খননের মাধ্যমে ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেমকে ইহুদিকরণের পরিকল্পনায় নতুন বাস্তবতা চাপিয়ে দিতে চাইছে।
এক্ষেত্রে, ফিলিস্তিন আন্তর্জাতিক মহল, জাতিসংঘ ও তার সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কোকে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে এসব লঙ্ঘন বন্ধ করা এবং দখলদার ইসরায়েলকে জবাবদিহি করার আহ্বান জানায়।
আল-আকসা মসজিদ মুসলমানদের জন্য বিশ্বের তৃতীয় পবিত্রতম স্থান। ইহুদিরা একে টেম্পল মাউন্ট নামে অভিহিত করে। ইহুদিদের দাবি, এখানেই তাদের প্রাচীন দুটি মন্দির ছিল।
১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর ইসরায়েল পূর্ব জেরুজালেম দখল করলেও, আন্তর্জাতিক চাপের কারণে ইসরায়েল ঘোষণা দেয়, ইসলাম ধর্মীয় স্থানগুলোর প্রশাসন মুসলিম কর্তৃপক্ষের অধীনেই থাকবে, যদিও নিরাপত্তার দায়িত্ব থাকবে ইসরায়েলের হাতে। এই ব্যবস্থাকে বলা হয় ‘স্থিতাবস্থার নীতি’।
এর আওতায়, চত্বরে শুধু মুসলিমদেরই প্রার্থনার অনুমতি আছে, সেখানে অমুসলিমদের প্রবেশ সীমিত এবং প্রার্থনা নিষিদ্ধ। এই চত্বরের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ রয়েছে জর্ডান সরকারের নিযুক্ত ইসলামিক ওয়াকফ কাউন্সিলের হাতে। ওয়াকফ কর্তৃপক্ষ এর তত্ত্বাবধান করে থাকে।
এই মসজিদ চত্বরকে ধর্মীয় পবিত্রতা ও মুসলিম অধিকার রক্ষার অংশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। ১৯৯৪ সালে ইসরায়েল ও জর্ডানের মধ্যকার শান্তিচুক্তিতেও এই দায়িত্বের স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
ইসরায়েলি সুপ্রিম কোর্টও আল-আকসা চত্বরে ইহুদিদের প্রার্থনায় নিষেধাজ্ঞার পক্ষে রায় দিয়েছে। এ ছাড়া, জাতিসংঘসহ অধিকাংশ আন্তর্জাতিক সংস্থা পূর্ব জেরুজালেমকে অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড হিসেবে বিবেচনা করে এবং সেখানে ইসরায়েলের হস্তক্ষেপকে আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হয়।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম
প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২
ইমেইলঃ agamiprojonma@gmail.com, milad.jaynul@gmail.com