প্রজন্ম ডেস্ক:
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আরও একধাপ এগিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচনে ব্যবহারের জন্য ছয় ধরনের অতি গুরুত্বপূর্ণ ভোটের সামগ্রী ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশনে পৌঁছেছে। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বাকি সব সামগ্রী হাতে পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছে ইসি।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এরই ধারাবাহিকতায় নির্বাচনি সামগ্রী ক্রয়ে জোর দিয়েছে সংস্থাটি। নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ১০টি গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে- অমোছনীয় কালি, স্ট্যাম্প প্যাড, তিন ধরনের বস্তা, তিন প্রকার সিল, লক এবং লাল গালা। এর মধ্যে অমোছনীয় কালি এবং স্ট্যাম্প প্যাড সরবরাহ করছে জাতিসংঘ উন্নয়ন সংস্থা (ইউএনডিপি)। বাকি আটটি আইটেম দেশীয় বাজার থেকে কেনা হচ্ছে। যার জন্য ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। এই সামগ্রী ক্রয়ের জন্য গত ১০ এপ্রিল টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। টেন্ডারের কার্যাদেশের ভিত্তিতে সেপ্টেম্বরের শুরুতেই অন্তত ৬টি সামগ্রী ধাপে ধাপে আনা হচ্ছে নির্বাচন ভবনে।
গত বৃহস্পতিবার এবং রোববার কয়েকটি চালান এসেছে, যা আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। ভোটার, ভোটকেন্দ্র ও সামগ্রিক প্রস্তুতি শেষ হলে তফসিল ঘোষণার পর এসব সামগ্রী আঞ্চলিক, জেলা ও উপজেলা অফিসে ধাপে ধাপে বিতরণ করবে ইসি। এরপর ব্যালট পেপারসহ নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে ভোটের আগেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে পৌঁছানো হবে এসব সরঞ্জাম। একটি জাতীয় নির্বাচনে সুঁই, সুতা, দিয়াশলাই, আঠা, কলম, প্লাস্টিকের পাত, অমোছনীয় কালি ও স্ট্যাম্প প্যাডসহ প্রতিটি কেন্দ্র ও বুথের জন্য ২১ ধরনের সামগ্রীর প্রয়োজন হয়। এসব নির্বাচনি সামগ্রীর মধ্যে- লাল গালা, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের লক, অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, বড় হোসিয়ান ব্যাগ, ছোট হোসিয়ান ব্যাগসামগ্রীর চাহিদার কিছু অংশ সরববাহ শুরু হয়েছে। এ প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনের উপসচিব রাশেদুল ইসলাম বলেন, বড় ও ছোট হোসিয়ান ব্যাগের পুরো চাহিদা ইতিমধ্যে পূরণ হয়েছে। অন্যান্য সামগ্রীও ধাপে ধাপে আসছে।
ইসিতে যেসব সামগ্রী পৌঁছেছে : নির্বাচনি সামগ্রী কেনাকাটা ও সরবরাহ শুরু হওয়া আট ধরনের মালামালের মধ্যে লাল গালা ২৩ হাজার কেজি চাহিদার মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পৌঁছে গেছে। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ৫০ লাখ চাহিদার মধ্যে পাঁচ লাখ সরবরাহ শুরু হয়েছে। ৮ লাখ ৪০ হাজার দাফতরিক সিলের মধ্যে পাঁচ লাখ সেপ্টেম্বরের শুরুতে সরবরাহ করা হয়েছে। মার্কিং সিল ১৭ লাখ ৫০ হাজার চাহিদার বিপরীতে দেড় লাখ সরবরাহ শুরু হয়েছে। ৭০ হাজার বড় হোসিয়ান ব্যাগ সরবরাহ করা হয়েছে। ১ লাখ ১৫ হাজার ছোট হোসিয়ান ব্যাগ চাহিদার সব সরবরাহ করা হয়েছে। তবে রিটেন্ডার হওয়ায় ১ লাখ ১৫ ব্রাস সিল ও ১ লাখ ১৫ হাজার গানি ব্যাগ সরবরাহ শুরু হয়নি। এ ছাড়া অমোছনীয় কালি ও স্টাম্প প্যাড দিবে ইউএনডিপি। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটের সামগ্রীর অধিকাংশই নির্বাচন কমিশন থেকে সরবরাহ করা হয়। কিছু মনোহরি জিনিস রিটার্নিং অফিসারকে স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করতে হয়।
এ বিষয়ে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, আমাদের লক্ষ্য ছিল ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সব সামগ্রী হাতে পাওয়া। ইতিমধ্যে হোসিয়ান ব্যাগের পুরো চাহিদা পূরণ হয়েছে এবং বাকি সামগ্রীও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পৌঁছে যাবে। তিনি জানান, স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের পর্যাপ্ত মজুদ থাকায় নতুন করে কেনার প্রয়োজন পড়েনি। মাসিক সমন্বয় সভায় এগুলো পরিষ্কার ও প্রস্তুত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও বলেন, এখন নির্বাচনি সামগ্রী নিয়ে প্রস্তুতির বিষয়ে আর কারও প্রশ্ন থাকার সুযোগ নেই। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হলে সেপ্টেম্বরেই আমরা সব সামগ্রী পেয়ে যাচ্ছি।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব কে এম আলী নেওয়াজ বলেন, আগামী নির্বাচনের জন্য ইউএনডিপি নির্বাচনি সামগ্রী সরবরাহে সহায়তা করছে। নির্বাচনে প্রয়োজনীয় ১০টি আইটেমের মধ্যে আটটি স্থানীয় বাজার থেকে কেনা হচ্ছে, যার খরচ নির্বাচন কমিশনের জন্য তুলনামূলক কম। অন্যদিকে অমোছনীয় কালি এবং স্ট্যাম্প প্যাড আমদানির জন্য ইউএনডিপিকে অনুরোধ করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা ইউএনডিপিকে বলেছি, আন্তর্জাতিক বাজার থেকে যেসব পণ্য ক্রয় করতে হবে, তারা তা সংগ্রহ করবে। স্থানীয় বাজার থেকে কেনা পণ্যগুলো আমরা সহজেই সংগ্রহ করতে পারব।
আলী নেওয়াজ আরও জানান, স্থানীয় বাজার থেকে আটটি আইটেম কেনার জন্য গত ১০ এপ্রিল টেন্ডার ডাকা হয়েছিল। এই আইটেমগুলোর জন্য নির্বাচন কমিশনের খরচ হবে প্রায় ৮ থেকে ৯ কোটি টাকা। অন্যদিকে অমোছনীয় কালি এবং স্ট্যাম্প প্যাড কিনতে প্রায় ৩০ কোটি টাকা খরচ হতে পারে। তবে ইউএনডিপি এই দুটি আইটেম আমদানি করলে ২০ থেকে ২৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। এর আগে, ভোটার তালিকা প্রণয়নের জন্য ইউএনডিপির মাধ্যমে প্রায় ১০০ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের সামগ্রী কেনা হয়েছিল।
নির্বাচনের জন্য এই ১০টি আইটেম ছাড়াও আরও ৪৩ ধরনের সামগ্রীর প্রয়োজন হবে। এ প্রসঙ্গে আলী নেওয়াজ বলেন, নির্বাচন পরিচালনার জন্য ৪৩ ধরনের কাগজ ও অন্যান্য সামগ্রী প্রয়োজন, যার মধ্যে রয়েছে- খাম, প্যাকেট, ব্যালট পেপার, প্রশিক্ষণ সামগ্রী, ফর্ম ইত্যাদি। এর মধ্যে কিছু কাগজ, যেমন কর্ণফুলী পেপার মিল থেকে সরাসরি সংগ্রহ করা যায়। তবে হার্ড পেপারের মতো কিছু আমদানি করা পণ্য সরকারি প্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায় না। এগুলো আমদানি করতে সময় লাগে। কিছু প্রতিষ্ঠান আগে থেকেই এসব পণ্য আমদানি করে রাখে, তবে কিছু ক্ষেত্রে নতুন করে আমদানি করতে হয়। এ সময় তিনি জোর দিয়ে বলেন, নির্বাচনে একটি লকেরও ঘাটতি থাকার সুযোগ নেই।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম
প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২
ইমেইলঃ agamiprojonma@gmail.com, milad.jaynul@gmail.com