প্রজন্ম ডেস্ক:
রাষ্ট্র সংস্কারের চেষ্টার অংশ হিসেবে জুলাই জাতীয় সনদকে মজবুত আইনি ও নৈতিক ভিত্তি চলতি নভেম্বরেই গণভোটের দাবি তুলেছে জামায়াতে ইসলামী। অন্যদিকে, এখুনি নয়, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনই একই সঙ্গে গণভোট চেয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি। আর প্রভাবশালী তরুণদের দল এনসিপি চায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের জারি করা রাষ্ট্রীয় একটি আদেশ।
বিএনপি হঠাৎ এনসিপির জন্য পথ খোলা রেখে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি সংসদীয় আসনে মনোনয়ন ঘোষণা করায় জাতীয় নির্বাচনের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। প্রায় একই সময়ে নির্বাচন কমিশন থেকে এনসিপির নিবন্ধন লাভ, নির্বাচন সামাল দিতে দলটির কমিটি গঠন ও বিএনপির শীর্ষ নেত্রী খালেদা জিয়ার আসনে প্রার্থী না দেওয়ার ঘোষণায় ভোটের হাওয়া কিছুটা জোর পেয়েছে।
রাজনীতিকরা মনে করছেন, বিএনপি ও এনসিপির এমন তৎপরতায় গণভোটের আলোচনায় সাময়িকভাবে হলেও ভাটা পড়েছে।
সনদ কার্যকর করার উপায়ের ইস্যুতে বিভক্ত দলগুলোকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সাত দিনের মধ্যে একমত হতে বলেছে সরকার। এমন অবস্থায় বিএনপির প্রার্থিতার ঘোষণা পরিকল্পিত রাজনৈতিক চাল মনে করছেন অনেকে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, নির্বাচনের মাস ফেব্রুয়ারি ঘনিয়ে আসছে। একই সঙ্গে ভোট বাধাগ্রস্ত করার জন্য কয়েকটি দল চক্রান্ত করছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশকে ইস্যু করে তারা কিছু সুবিধা গ্রহণ করতে চায়। তিনি বলেন, সনদ বাস্তবায়ন চাপিয়ে দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে এ বিষয়ে সভা করার কী দরকার ছিল।
এর আগে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রায় প্রতিদিনই দ্রুত নির্বাচনের দিকে সরকারকে ধাবিত হতে পরামর্শ দিয়েছেন।
অন্তর্বর্তী সরকার ও একাধিক রাজনৈতিক দলের নেতারা বলেন, প্রার্থী তালিকা ঘোষণার মধ্য দিয়ে এই মুহূর্তে নির্বাচনই গুরুত্বপূর্ণ, সেটি সরকারকে পরিষ্কার বুঝিয়ে দিতে চেয়েছে বিএনপি। দলটি সনদ বাস্তবায়নের ইস্যু তুলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার কোনো চক্রান্ত বাস্তবায়ন করতে দেবে না। ড. মুহাম্মদ ইউনূস ঘোষিত নির্বাচনের সময়সীমা ফেব্রুয়ারি পার করতে গেলে কঠোর আন্দোলন সংগঠিত করার প্রস্তুতিও নিয়ে রাখতে শুরু করেছে বিএনপি। তবে নির্বাচন আদায় করার আন্দোলন শুরুর আগে সমঝোতার রাজনীতির চিন্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে রাখছে দলটি। নির্বাচন হবে এই শর্তে গত এক বছরের সমঝোতার রাজনীতির মতো চলতি নভেম্বর মাস পর্যন্ত নমনীয় রাজনীতি করে যাবে বিএনপি। ডিসেম্বরে তফসিল ঘোষণায় সরকারের পক্ষ থেকে টালবাহানা করা হলে, সে ক্ষেত্রে আন্দোলন করে নির্বাচন আদায় করার রাজনীতি শুরু করবে দলটি।
বিএনপির বিভিন্ন সূত্র বলেন, গণভোট নির্বাচনের দিনই হবে এই জায়গা থেকে সরে আসবে না দলটি। ২৭০ দিন পরে সনদ বাস্তবায়নে দেওয়া জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ আপনাআপনি সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাওয়ার বিধানও মেনে নেবে না বিএনপি। জানা গেছে, রাজনৈতিক দলের ঐকমত্য না হলে সনদ বাস্তবায়নে সরকার সিদ্ধান্ত দেবে, এমন চাপিয়ে দেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদও জানাবে এতদিন ধরে সরকারকে সহযোগিতা করে আসা বিএনপি।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির শীর্ষ আরেক নেতা বলেন, সনদ বাস্তবায়ন ঘিরে এখন যেটা চলছে, তা হলো রাজনৈতিক দলগুলোকে অবিশ্বাস করা। তিনি বলেন, এ অবিশ্বাস কারা করছে যাদের জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহি নেই। একমাত্র নির্বাচনের স্বার্থে বিএনপি অনেক আপসের রাজনীতি করেছে। ভবিষ্যতে কোনো পক্ষের সঙ্গেই আর আপসের রাজনীতি হবে না। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন অনুষ্ঠান হতেই হবে। এর বাইরে সরকার কোনো দিকে যাওয়ার সুযোগ নেই। দেশের মানুষ নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহী। জনগণের সেই আগ্রহকে সম্মান করতে হবে সরকারকে।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম
প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২
ইমেইলঃ agamiprojonma@gmail.com, milad.jaynul@gmail.com