প্রজন্ম ডেস্ক:
সরকারের অনুমোদন ছাড়াই মিলমালিকরা ভোজ্যতেলের দাম লিটারে ৯ টাকা বাড়িয়েছেন। সেই তেল বাজারে বিক্রি হচ্ছে। ভোক্তাদের বেশি দামেই কিনতে হচ্ছে। কম দামের তেল ফুরিয়ে গেছে। অনেকেই বাড়তি দামের তেল রাখছেন না। তেল আছে আবার নেই অবস্থা।
এদিকে নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠলেও গতকাল কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১৩০ ছুঁয়েছে। অধিকাংশ আমন ধান উঠলেও কমেনি চালের দাম। শীত মৌসুমের সবজি বাজারে ভরে গেলেও কমেনি দাম। এখনো বেগুন, শিম, টমেটো, গাজর, করলা, পটোল ১০০ টাকার ওপরে। ভোক্তাদের নাস্তানাবুদ অবস্থা। তারা বলছেন, বাজারের অবস্থা ভালো না। গতকাল বিভিন্ন বাজার ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
কয়েক মাস থেকেই মিলমালিকরা ভোজ্যতেল বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু সরকার তাতে সায় দিচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে গত ১ ডিসেম্বর থেকে লিটারে ৯ টাকা বাড়িয়েছেন মিলমালিকরা। ৯২২ টাকার পাঁচ লিটারের বোতলজাত তেল ৯৬৫ টাকা এবং ২৭৮ টাকার দুই লিটার ২৯৮ টাকায় বিক্রি করছেন। বাধ্য হয়েই ভোক্তাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। গতকাল টাউন হল বাজার, কারওয়ান বাজারসহ বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ মুদির দোকানে আগের কম রেটের তেল নেই। মিলমালিকদের নতুন রেটের তেল খুচরা বিক্রেতারা বিক্রি করছেন। আবার অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ে ভয়ে বিক্রি করছেন না। ফলে ক্রেতাদের খালি হাতে ফিরে যেতে হচ্ছে।
কারওয়ান বাজারে রব স্টোরের মো. আব্দুর রব বলেন, ‘আগের কম দামের তেল ফুরিয়ে গেছে। দুই দিন থেকে বেশি দামের তেল দিয়েছে ডিলাররা। তাই বেশি দামেই বিক্রি করতে হচ্ছে। এ সময় জসিমউদ্দিন নামে এক ভোক্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আজব দেশ। সরকার জানে না মিলাররা তেলের দাম বাড়িয়েছেন। পাঁচ লিটারে ৪৫ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে। আমাদের জান যাচ্ছে।’ টাউন হল বাজারের আল্লাহর দান স্টোরের বিক্রয়কর্মী মেহেদী জানান, আগের দামের তেল নেই। বেশি দামেরটা রাখিনি। কারণ সরকার দাম বাড়ায়নি। কেউ রাখলে ভোক্তা অধিদপ্তর জরিমানা করছে।’
তবে আগের মতোই গতকাল বিভিন্ন বাজারে দেশি মসুর ডাল ১৬০ টাকা কেজি, মোটা দানার মসুর ডাল ১২০ টাকা, ছোলা ১১০ থেকে ১২০ টাকা কেজি, চিনি ১০০ টাকা কেজি, দুই কেজি আটার প্যাকেট ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
৭০ থেকে ৮০ টাকার পেঁয়াজ নভেম্বর মাসে হঠাৎ করে ১১০ থেকে ১২০ টাকায় ঠেকে। পুরো মাস সেই উচ্চমূল্যে স্থির হয়ে যায়। শেষের দিকে কেজিতে ১০ টাকা কমে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়। কিন্তু নতুন পেঁয়াজ বাজারে উঠলেও গতকাল হঠাৎ করে পুরোনো পেঁয়াজের ঝাঁঝ বেড়ে গেছে। ১৪০ থেকে ১৫০ টাকায় ঠেকেছে। মোহাম্মদপুরের টাউন হল বাজারের জাহিদুল ইসলামসহ অন্য বিক্রেতারা জানান, ‘মৌসুম শেষ। গতকাল দাম বেড়ে গেছে। আমাদেরও বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। পাবনার বড় সাইজের পেঁয়াজ ১৩০ টাকা ও ফরিদপুরের পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি। আগের মতোই আদা ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, রসুন ১৩০ থেকে ১৮০ টাকা ও আলুর কেজি ২৫ থেকে ৩০ টাকা ও নতুন আলু ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে বলে বিক্রেতারা জানান।
এখনো সেঞ্চুরির ঘর ছাড়িয়ে অধিকাংশ সবজি
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার শীতের সবজিতে ভরে গেছে। আগের তুলনায় সরবরাহও বেড়েছে। কিন্তু দাম কমেনি। গতকালও বেগুন ১০০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি, টমেটো ১২০ থেকে ১৫০, শিম ১০০ থেকে ১২০, পটোল ৮০ থেকে ১০০, করলা ১০০ থেকে ১২০, কাঁচা মরিচ ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। ঢ্যাঁড়স ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি, বরবটি, কচুরলতি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ও ফুলকপির পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মুলার কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকার কমে মেলেনি।
ধান উঠলেও চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী
খেতের অধিকাংশ আমন ধান উঠে গেছে। তার পরও সাগর, মনজুর, আকিজ অ্যাসেনশিয়াল, রশিদসহ অন্য কোম্পানির মিনিকেট চাল চড়া দামে ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মোজাম্মেল, ডায়মন্ডসহ আরও কিছু কোম্পানির চাল ৮৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে আটাশ চাল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা এবং মোটা চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে নদী-খাল-বিলের মাছ পাওয়া গেলেও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে আগের তুলনায় ইলিশ মাছের দাম একটু কমলেও এখনো ক্রেতাদের নাগালের বাইরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। গতকালও এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের কেজি ২ হাজার ৪০০ টাকায় বিক্রি হয়। আগের সপ্তাহের মতো গতকালও সোনালি মুরগির কেজি ২৭০ টাকা ও ব্রয়লার মুরগি ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে বলে বিক্রেতারা জানান। আগের মতো গতকালও সাদা ডিম ১২০ এবং লাল ডিম ১৩০ টাকা ডজন বিক্রি হয়। তবে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লার দোকানে আরও বেশি দামে বিক্রি করতে দেখা গেছে।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতিঃ মোহাম্মদ আফছার খান সাদেক
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ মিলাদ মোঃ জয়নুল ইসলাম
প্রকাশনালয়ঃ রিপোর্টার লজ, কসবা, বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ উত্তর বাজার কেন্দ্রিয় মসজিদ মার্কেট (২য় তলা), বিয়ানীবাজার, সিলেট ।
মোবাঃ ০১৮১৯-৬৫৬০৭৭, ০১৭৩৮-১১ ৬৫ ১২
ইমেইলঃ agamiprojonma@gmail.com, milad.jaynul@gmail.com