প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৯ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৪শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৮ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সেনা সদস্যের পোস্ট বদলে দিল কুলাউড়ার বৃদ্ধার জীবন!

editor
প্রকাশিত জুলাই ১২, ২০২৫, ০৬:১৯ পূর্বাহ্ণ
সেনা সদস্যের পোস্ট বদলে দিল কুলাউড়ার বৃদ্ধার জীবন!

Manual1 Ad Code

নিউজ ডেস্ক :
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কইতরুন্নেছা (৬৫) পরিবারের কাউকে কিছু না জানিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। একপর্যায়ে তিনি পৌঁছান মাদারীপুরে; আশ্রয় নেন টেকেরহাট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজে। সেখানে সেনাবাহিনীর অস্থায়ী ক্যাম্প আছে। কলেজের বারান্দায় ভেজা অবস্থায় তাঁকে দেখতে পান সেনাসদস্য সৈয়দ কামরুল ইসলাম। তিনি কইতরুন্নেছার খোঁজখবর নেন, খাবার দেন এবং তাঁর পরিচয় জানার চেষ্টা করেন। তাঁকে নিয়ে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন। সেটি দেখে পরিবারের সদস্যরা কইতরুন্নেছার সন্ধান পেয়েছেন।

Manual3 Ad Code

সেনাসদস্য কামরুল ইসলাম গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কইতরুন্নেছাকে কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের কর্মধা গ্রামে তাঁর পরিবারের কাছে পৌঁছে দেন। কইতরুন্নেছার ছেলেমেয়ে নেই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বাবার বাড়িতে থাকেন।

সৈয়দ কামরুল ইসলামের বাড়িও একই উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামে। তিনি বর্তমানে বরিশাল সেনানিবাসে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘বুধবার বেলা ৩টার দিকে মাদারীপুরে আমাদের ক্যাম্পের নিচতলায় এক নারীকে ভেজা অবস্থায় বসে থাকতে দেখি। কথা বলার সময় মনে হলো, তিনি কিছুটা মানসিক ভারসাম্যহীন। আশপাশে রেলস্টেশন আছে কি না, সেটা জানতে চাইছিলেন। নাম-ঠিকানা বলতে পারলেন, কিন্তু কীভাবে মাদারীপুরে এলেন, সেটা বলতে পারলেন না। তাঁকে ক্যাম্পে নিয়ে গিয়ে নাশতা করাই। পরে পরিচয় শনাক্তে আমি ফেসবুকে একটি ছবি ও তথ্য দিয়ে পোস্ট দিই।’

Manual2 Ad Code

ফেসবুক পোস্টের সূত্র ধরে কুলাউড়ার বাসিন্দা শাহাবুদ্দিন নামের এক ব্যক্তি কামরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি জানান, ছবিতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তিনি তাঁর দাদি কইতরুন্নেছা। এরপর বিষয়টি কামরুল ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানান। পরে কর্তৃপক্ষ তাঁকে তিন দিনের ছুটি দেন বৃদ্ধাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার জন্য।

গত বুধবার রাতেই কইতরুন্নেছাকে নিয়ে সৈয়দ কামরুল ইসলাম কুলাউড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। গতকাল বিকেল ৫টার দিকে তাঁরা কুলাউড়ার কর্মধা গ্রামে পৌঁছান। তিনি কইতরুন্নেছাকে স্বজনদের হাতে তুলে দেন। এ সময় কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হেলাল আহমদ, কুলাউড়া থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Manual3 Ad Code

সৈয়দ কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ওই নারী আমাদের ক্যাম্পে না এলেই হয়তো তাঁর সন্ধান পাওয়া যেত না। সিলেটের দিকের কথা বলছিলেন, তাই নাম-ঠিকানা জেনে ফেসবুকে পোস্ট দিই। সাড়া দ্রুত মিলেছে। তাঁকে পরিবারের কাছে দিতে পেরে আমি খুশি। তাঁদের বলেছি, যেন চিকিৎসা করান ও নজরে রাখেন।’

Manual7 Ad Code

কইতরুন্নেছার স্বজন শাহাবুদ্দিন বলেন, তাঁর দাদি প্রায়ই কাউকে কিছু না বলে আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যান, কয়েক দিন পর ফিরে আসেন। কিন্তু এবার ছয় দিন পার হয়ে যাওয়ার পরও তিনি ফেরেননি। কামরুল ইসলামের পোস্ট দেখে তাঁরা দাদির সন্ধান পান।

ঘটনাটি সম্পর্কে কর্মধা ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হেলাল আহমদ বলেন, ‘সৈনিক কামরুল ইসলাম যদি পাশে না দাঁড়াতেন, তাহলে এই বৃদ্ধার খোঁজ পাওয়া কঠিন হতো। তাঁর এই মানবিক কাজের জন্য ধন্যবাদ জানাই।’

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code