প্রকাশনার ১৫ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৬ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
১লা শ্রাবণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২১শে মহর্‌রম, ১৪৪৭ হিজরি

পানি বাড়লেও বন্যার শঙ্কা নেই সুনামগঞ্জে

editor
প্রকাশিত মে ২১, ২০২৫, ০১:২৬ অপরাহ্ণ
পানি বাড়লেও বন্যার শঙ্কা নেই সুনামগঞ্জে

নিউজ ডেস্ক:
পাহাড়ি ঢল ও উজানের ভারী বর্ষণের কারণে হাওর ও নদ-নদীতে স্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ছে। সুরমা, কুশিয়ারা নদীসহ অনেক নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেলেও তা এখনো বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে। ফলে আপাতত বন্যার শঙ্কা নেই বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

সুনামগঞ্জ ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিপাতের কারণে হাওর এবং নদ-নদীর পানি স্বাভাবিকভাবে বাড়ছে বলেও জানায় পাউবো। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বন্যার তথ্য এবং বিগত বছরের অভিজ্ঞতায় সুনামগঞ্জের নদী তীরবর্তী ও হাওরাঞ্চলের মানুষ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন। তারা বলছেন, হাওরে ধান কাটা শেষ। এখন পানি এলে সমস্যা নেই। কিন্তু বন্যা হলে তো কষ্ট বাড়বে। কৃষকরা ঘরে ধান তুলেছেন, কিন্তু অনেক কৃষকের ঘরটা ভালো নেই। তারা তাদের ঘরটা ঠিক করার দরকার ছিল, কিন্তু বৃষ্টির কারণে কিছুই করতে পারছেন না। অন্যদিকে অনেকেই বলছেন— এই পানি হাওরের জন্য আশীর্বাদ। বৃষ্টির পানির কারণে হাওর জীবন্ত হয়ে ওঠে।

সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর তীরবর্তী বড়পাড়ার গৃহবধূ সুরেজান বিবি বলেন, আমার ঘর নদীর একদম পাশে। প্রতিবছর বন্যা হলে পানি ঢুকে পড়ে। পানি বাড়ছে দেখে ভয় পাচ্ছি। যে পরিমাণ বৃষ্টি শুরু হয়েছে, রাতে চিন্তায় ঘুম আসে না।

শান্তিগঞ্জ উপজেলার ডুংরিয়া গ্রামের মৎস্যজীবী মুসা মিয়া বলেন, ‘বর্ষায় ধীরে ধীরে যখন হাওরে পানি বাড়ে, তখনই আমরা মাছ ধরার জাল, ফাঁদ তৈরি করি। এই সময়টায় মাছ বিক্রি করে সংসার চালাই, অনেকে দেনা-পাওনাও মিটাই। হাওরের পানিতে এখন কৈ, টেংরা, শিং, চিংড়িসহ অনেক ধরনের দেশি মাছ ওঠে। এসব মাছ বাজারে ভালো দামে বিক্রি হয়। তাই আমরা চাই পানি আসুক, কিন্তু এই পানি বেড়ে যেন বন্যা না হয়।’

বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার পলাশ গ্রামের ইদ্রিস মিয়া বলেন, ‘ফেসবুকে খালি পানির খবর দেখি। কিন্তু হাওরে পানি একটু একটু করে ঢুকছে। খুব বেশি পানি নেই, যা আছে তা স্বাভাবিক পানি। বরং এই পানিতে আমরা মাছ পাব, জীবিকা চলবে।’

এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ‘ভারতের চেরাপুঞ্জি ও সুনামগঞ্জে যে বৃষ্টিপাত হচ্ছে, তা বর্ষা মৌসুমের স্বাভাবিক চিত্র। এই বৃষ্টির কারণে নদীর পানি কিছুটা বেড়েছে, তবে তা বিপৎসীমার অনেক নিচে রয়েছে। আমাদের হাওরে পানি ধারণের যথেষ্ট জায়গা আছে, হাওর পরিপূর্ণ হতে আরও ১০ থেকে ১২ দিন সময় লাগবে।’এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী তিনি আরো বলেন, ‘আগামী তিন দিনের মধ্যে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করার সম্ভাবনা নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্যার যে তথ্য প্রকাশ হচ্ছে তা সঠিক নয়। আমরা নিয়মিত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। পরিস্থিতি বদলাতে শুরু কররে আগেই সতর্কবার্তা দেওয়া হবে।’

Sharing is caring!