প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৪ঠা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৮শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বাড়তি বোঝার চাপ শুরু

editor
প্রকাশিত এপ্রিল ৯, ২০২৫, ০৯:৪০ পূর্বাহ্ণ
বাড়তি বোঝার চাপ শুরু

Manual1 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ৬০টির মতো দেশের ওপর যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করেছেন তার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। যেসব দেশের ওপর বেসলাইন শুল্ক আরোপ করা হয়েছে গত ৫ এপ্রিল থেকে তা সংগ্রহ শুরু করেছে দেশটি। আর বাংলাদেশসহ যেসব দেশের ওপর ১০ শতাংশেরও বেশি শুল্ক ধার্য করা হয়েছে, তা সংগ্রহ শুরু হবে আজ ৯ এপ্রিল থেকে। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের রফতানিকারকদের ঘাড়ে বাড়তি শুল্কের বোঝা চেপে বসল।

Manual3 Ad Code

তবে প্রশ্ন উঠেছে- এই বাড়তি শুল্কের বোঝা কমাতে বা প্রত্যাহার করাতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার কি সঠিক পথে হাঁটছে। অর্থনীতিবিদ, বিশ্লেষক ও রফতানিকারকরা মনে করছেন শতাধিক মার্কিন পণ্যে শূন্য শুল্ক প্রস্তাব থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে-তাতে সঠিক পথে নেই বাংলাদেশ। কোনো একটি দেশকে বাড়তি সুবিধা দিতে গিয়ে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ডব্লিউটিওর নীতিবিরোধী এবং দেশের রফতানি নীতিবিরোধী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া ঠিক হবে না।

 

অন্যদিকে আজ থেকে বাড়তি শুল্ক কর্তন শুরু করলে কি পরিমাণে বাড়তি শুল্ক দিতে হবে বাংলাদেশকে তার সঠিক চিত্রও এখনই মিলবে না। বিশ্লেষকরা বলছেন, কি পরিমাণে বাড়তি শুল্ক দেওয়া লাগতে পারে তার সঠিক হিসাব এখনই বলা কঠিন। বা আগে প্রতি মাসে বা বছরে কি পরিমাণে শুল্ক দেওয়া লাগত আমেরিকাকে সেটিও বলা কঠিন। কারণ আগে একেক পণ্যে একেক রকম শুল্ক রেট ছিল। কোনোটিতে ছিল শূন্য শুল্ক, কোনোটিতে ২ শতাংশ, কোনোটিতে ৩ শতাংশ, কোনোটিতে ২৭ শতাংশ, এমনকি কোনোটিতে ৭০ শতাংশ শুল্ক দিতে হতো। এখন সব গড়ে ৩৭ শতাংশ করেছে শুল্ক রেট। এর জন্য আগে কোন পণ্যে কত শুল্ক ছিল সেটি জানা যেমন জরুরি, তেমনই কি পরিমাণে কোন পণ্য রফতানি হয়েছে সেটিও জানা জরুরি।

আবার এখন কি পরিমাণে পণ্য রফতানি হচ্ছে সেটিও জানা জরুরি। তা ছাড়া পণ্যের এফওবি প্রাইসটাও জানতে হবে। মূলত এফওবি প্রাইসের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন হয়তো কি পরিমাণে শুল্ক দেওয়া হচ্ছে দেশটিকে সেটি বের করা সহজ হবে, তবে আগে কি পরিমাণে শুল্ক দেওয়া হতো সেটি জানা কঠিন হবে।

 

এ বিষয়ে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, বাড়তি শুল্কের কারণে আসলে ক্ষতি কি পরিমাণে হবে- সেটি নির্ভর করছে ট্রাম্প প্রশাসন এই শুল্কের হিসাবটা আগামী দিনে কীভাবে করবেন তার ওপর। শুল্ক মূল্যায়নটা কি রকম হবে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এই শুল্ক হার কি মাসিক হবে, ত্রৈমাসিক হবে নাকি বাৎসরিক হবে- এসব বিষয় এখনও পরিষ্কার না। এ ছাড়া উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি না কমলেও শুধু বাণিজ্য বাধাগুলো কমালেও তারা ট্যারিফ কমিয়ে দেবে একেক দেশের জন্য একেক রকমভাবে, নাকি তারা সব দেশের জন্য একটি নীতি ফলো করবে- এসব বিষয়ও পরিষ্কার না এখনও আমাদের কাছে। তিনি আরও বলেন, এখন কথা হচ্ছে শুল্ক আরোপের পর হয়তো একেক দেশ একেক রকমভাবে মার্কিন প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করছে বা নিজেদের বিষয়গুলো তুলে ধরছে। তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ সরকার যেভাবে মার্কিন প্রশাসনের কাছে নিজেদের প্রস্তাব তুলে ধরেছে, সেগুলো সঠিকভাবে করা হয়েছে বলে আমার মনে হয়নি। এভাবে না করলেও পারত।

 

দ্বিতীয় বিষয় হলো এই বাড়তি শুল্ক আরোপের পর মার্কিন জনগণ বিষয়টি কীভাবে গ্রহণ করল সেটিও দেখার বিষয়। পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে এই বাড়তি শুল্কের পুরোটাই যদি মার্কিন জনগণকে দিতে হয় এবং এর কারণে যদি তারা পণ্য ক্রয় কমিয়ে দেয় তা হলে স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ থেকে পণ্য নেওয়া কমিয়ে দেবে। সেটি হলে অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য চিন্তার বিষয়।

 

আরেকটি বিষয় হলো এই বাড়তি শুল্ক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো কতটা ক্রেতার ঘাড়ে চাপাবে, কতটুকু পণ্য সাপ্লাইয়ারের ওপর চাপাবে এবং কতটুকু নিজের ঘাড়ে নেবে- সেটিও দেখার বিষয় আছে। অর্থাৎ পুরো ৩৭ শতাংশ ট্যারিক কি ভোক্তার ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হবে। যদি সেটি না করা হয় তা হলে হয় ওই ক্রেতা প্রতিষ্ঠানকে বহন করতে হবে নতুবা সাপ্লাইয়ারের ঘাড়ে চাপাবে বা পণ্য সাপ্লাইকারি প্রতিষ্ঠানকে মূল্য কমানোর চাপ দেবে। ইতিমধ্যে আমরা সে রকমটি দেখতে পাচ্ছি।

 

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যেহেতু বাংলাদেশের মতো দেশগুলো পণ্য রফতানি করে মূলত কম দামের পণ্য। এসব পণ্য মূলত আমেরিকার কম আয়ের লোকেরা কিনে থাকেন। এই উচ্চ শুল্কের কারণে স্বাভাবকিভাবেই ধরে নেওয়া যায় মার্কিন ভোক্তারা পণ্য ক্রয় কমিয়ে দেবে। তবে উচ্চ আয়ের লোকেরা বেশি দামের পণ্য ক্রয় কমিয়ে কম দামের পণ্য কিনবেন- সেটিও হবে বলে মনে হয় না। কারণ উচ্চ আয়ের লোকেরা নিচের দিকে খুব বেশি শিফট করেন না।

 

Manual4 Ad Code

অন্যদিকে ২০০৭ এবং ২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতা এবং মহামারি করোনার সময় যখন বিশ্বের অনেক দেশের রফতানি কমে গিয়েছিল, তখন বাংলাদেশের রফতানি বেড়েছিল। এবার তেমনটি হওয়ার সুযোগ আছে কি না এ বিষয়ে গোলাম মোয়াজ্জেম হোসেন সময়ের আলোকে বলেন, প্রথম কথা হচ্ছে ভোক্তার পকেট থেকে যেহেতু বেশি অর্থ যাবে, সেহেতু পণ্যটি কি বাংলাদেশে, নাকি চীনে, না অন্য কোনো দেশের- সেটি তখন বিবেচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়াবে না।

 

 

ভোক্তা তখন আসলে পণ্য কম কিনবেন, কারণ তার পকেটে টাকা কমে যাবে। তা ছাড়া এই শুল্ক বৃদ্ধির কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে, কর্মহীনতা দেখা দিতে পারে। এ ধরনের অনিশ্চয়তার সময় ভোক্তারা এমনিতেই পণ্য কম কেনেন। তা ছাড়া বাংলাদেশের সব সাপ্লাইয়ার তো আর কম মূল্যের পণ্য উৎপাদন করেন না- অনেক প্রতিষ্ঠান উচ্চ মূল্যের পণ্যও উৎপাদন করে। তারা তো নিশ্চিত ক্ষতির মুখে পড়বে। বাংলাদেশ থেকে যদি রফতানি বেড়ে যায় তা হলে কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতিও বেড়ে যাবে বাংলাদেশের সঙ্গে। তা হলে ট্যারিফও বেড়ে যাবে। বাংলাদেশ থেকে রফতানি বেড়ে যাওয়া কিন্তু তাদের জন্য কাম্য শর্ত না।

 

এখন প্রশ্ন হলো- এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সমঝোতা কি করবে বাংলাদেশ। বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের উচিত হবে ডব্লিউটিওর প্রিন্সপালকে মাথায় রেখেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের জায়গাটা ধরে রাখা। অযাচিতভাবে এমন কিছু বাণিজ্য নীতি আরোপ না করা উচিত, যাতে ডব্লিউটিওতে বাংলাদেশের যে অঙ্গীকার সেগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হয়। গত কয়েক দিনে অন্তর্বর্তী সরকার শূন্য শুল্কের যে অঙ্গীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্রকে বাণিজ্য সুবিধা দেওয়ার জন্য- আগ বাড়িয়ে আমরা এটি কেন দিতে গিয়েছি, আমার বুঝ আসে না।

 

যেখানে উন্নত দেশগুলোর শুল্ক দেওয়ার কথা, সেখানে এলডিসি কান্ট্রি হয়ে বাংলাদেশ কেন শূন্য শুল্ক সুবিধা দিতে যাবে। এটি দেশের আমদানি পলিসির সঙ্গেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাংঘর্ষিক। যেসব পণ্যের শূন্য শুল্ক সুবিধার কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে অনেক আছে ফিনিশিড গুডস। এগুলোর ক্ষেত্রে শূন্য শুল্ক কোনোভাবেই দেওয়া যায় না।

 

তারা আরও বলেন, উচিত হবে এভাবে প্রোডাক্ট বাই প্রোডাক্ট শুল্ক ছাড় না দিয়ে আমেরিকার সঙ্গে এফটিএর মাধ্যমে নেগোসিয়েশনে যাওয়া। এতে অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। তখন অন্য দেশ বলতে পারে- তুমি তো এভাবে একটি দেশকে সুবিধা দিতে পারও না- এটা তো ডব্লিউটিওর নীতিবিরোধী। সুতরাং এটি এত সহজ না। আমরা যেন আমাদের বাণিজ্য নীতির আলোকেই সবকিছু করি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে।

 

বাংলাদেশের বাণিজ্যের ক্ষতি কতটা হবে : এ বিষয়ে বিশ্লেষকরদের অভিমত, যদি বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গেও উচ্চ শুল্ক নিয়ে থাকে তা হলে বাংলাদেশ দুই ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হবে। প্রথমত হচ্ছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই উচ্চ শুল্কহারের জন্য ভোক্তার ক্রয়ক্ষমতা কমলে তারা ব্যয় কমিয়ে দিয়ে বাংলাদেশের মতো দেশ থেকে পণ্য কেনা কমিয়ে দেবে। এর ফলে বাংলাদেশের রফতানি বাধাগ্রস্ত হবে। শুধু মার্কিন বাজার না, অন্যান্য বাজারেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। সুতরাং এই সমস্যাটা শুধু মার্কিনকেন্দ্রিক থাকছে না।

 

দ্বিতীয় বড় ক্ষতির বিষয় হলো- বাংলাদেশের মতো সীমিত সংখ্যক পণ্য রফতানিকারক দেশ যাদের বহুমুখী রফতানির পণ্য বেশি নেয় এবং একটি বা দুটি খাতের ওপর রফতানি বাণিজ্য নির্ভরশীল। শুধু তাই নয়- এই একটি-দুটি খাতের ওপর দেশের ব্যাংকিং খাত, বীমা খাত, নির্মাণ খাত, বিনিয়োগ, ট্রান্সপোর্ট, লজিস্টিক- সব খাত নির্ভরশীল। সুতরাং তৈরি পোশাক বা প্রধান রফতানি খাতগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হলে এসব খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

Manual6 Ad Code

 

 

যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া প্রত্যাশা করি; অর্থ উপদেষ্টা : অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের বিষয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রধান উপদেষ্টা গত সোমবার ট্রাম্প প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন। আমরা ইতিবাচক কিছু প্রত্যাশা করছি। আমরাও সহযোগিতা করব, তারাও সহযোগিতা করবে। এটি উভয়ের জন্য লাভজনক হয়, এমন ব্যবস্থা হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

 

মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সালেহউদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিনও উপস্থিত ছিলেন।

 

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, তারা (যুক্তরাষ্ট্র) করে ফেলল আমরা সমন্বয় করব, বিষয় সেটি নয়। আমরা আমাদের ইস্যুটা তুলে ধরব। আমি বিশ্বাস করি যে বিষয়টা সমাধান হবে। ইতিবাচক কিছু হবে। ইতিবাচক বলতে তাদেরও লাভ হবে, আমাদেরও লাভ হবে।

 

অন্যদিকে বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন বলেন, বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আরও ১০০ পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে। আমাদের মূল বিষয় হচ্ছে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো। আমরা এ নিয়ে কাজ করছি।

 

সামগ্রিকভাবে শুল্ক আরোপের ফলে মানুষের মনে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, এটি সামাল দিতে কৌশল কী হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে সেখ বশির উদ্দিন বলেন, বিভিন্ন রকমের বিশ্লেষণ করছি। আসলে বিষয়টা অতি পরিবর্তনশীল একটা বিষয়।

 

সাংবাদিকদের উদ্দেশে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, আমেরিকান প্রশাসন বলেছে, চীন যে ট্যারিফ ঘোষণা করেছে, এর পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র নতুন করে আরও ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে পারে। এ ধরনের পরিবর্তনশীল অবস্থায় যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া জটিল।

 

Manual5 Ad Code

শুল্ক স্থগিতের কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই; ট্রাম্প : অন্যদিকে বিশ্বের প্রায় সব দেশের ওপর নতুন বর্ধিত রফতানি শুল্ক আরোপ করে বিশ্বজুড়ে রীতিমতো হইচই ফেলে দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্ব অর্থনীতিতে ইতিমধ্যেই তার প্রভাব অনুভূত হওয়া শুরু হয়েছে।

 

গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আছে- এমন সব দেশের ওপর বর্ধিত রফতানি শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। এর মধ্যে মৌলিক বা বেসলাইন ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, সিঙ্গাপুরসহ ১২টি দেশের ওপর, বাকি দেশগুলোর ওপর আরোপিত শুল্ক ১০ শতাংশেরও বেশি। সবচেয়ে বেশি শুল্ক আরোপ করা হয়েছে ভিয়েতনামের ওপর- ৪৬ শতাংশ। বাংলাদেশের রফতানি পণ্যের ওপর ধার্য করা হয়েছে ৩৭ শতাংশ শুল্ক। ৫ এপ্রিল থেকে বেসলাইন শুল্ক সংগ্রহ শুরু হয়েছে। যেসব দেশের ওপর ১০ শতাংশের বেশি শুল্ক ধার্য করা হয়েছে, তা সংগ্রহ শুরু হবে ৯ এপ্রিল থেকে।

 

অনেক দেশ এর মধ্যেই বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহার বা স্থগিতের অনুরোধ জানিয়ে বিভিন্ন কূটনৈতিক পন্থায় যোগাযোগ করছেন ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে; প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তা স্বীকারও করেছেন, তবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন- এ ইস্যুতে তিনি অনমনীয়।

 

গত সোমবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে শুল্ক স্থগিত করবেন কি না- এমন প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প বলেন, আমরা এমন কিছু ভাবছি না। আপাতত (শুল্ক স্থগিতের) কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। এমন অনেক, অনেক দেশ আছে যারা আমাদের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তির জন্য আলোচনা করতে আসছে এবং তারা ন্যায্য চুক্তি করবে এবং কিছু ক্ষেত্রে, তারা প্রচুর শুল্ক দেবে। আমরা ন্যায্য বাণিজ্যিক সম্পর্ক চাই।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code