প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারের তরুণেরাই রক্তদানে  ভরসা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত মিলছে সাড়া

editor
প্রকাশিত জুন ১২, ২০২৫, ০৮:৩১ পূর্বাহ্ণ
বিয়ানীবাজারের তরুণেরাই রক্তদানে  ভরসা, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত মিলছে সাড়া

Manual3 Ad Code

 

স্টাফ রিপোর্টার:

 

বিয়ানীবাজার পৌরশহরের আইনজীবি চেম্বারে সহকারি হিসেবে কাজ করেন আহমদ শাওন (২২)। ২০২০ সালে ক্যান্সার আক্রান্ত এক তরুণীকে প্রথম রক্ত দেন তিনি। সেই থেকে রক্তদানের আগ্রহ তৈরী হয় তার। কয়েক বছরের ব্যবধানে তিনি হয়ে উঠেছেন নিয়মিত রক্তদাতা। এ পর্যন্ত মোট ৯ বার রক্ত দিয়েছেন শাওন। সর্বশেষ মাসখানেক আগে এক প্রসূতিকে রক্ত দেন।

বিয়ানীবাজারে বর্তমানে স্বেচ্ছায় রক্তদান করার প্রবণতা বাড়ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো ব্যবহার করে এখন দ্রুত রক্তদাতা মিলে যাচ্ছে। বিপদে–আপদে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টায় রক্তদানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে নতুন রক্তদাতা। স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে তরুণের সংখ্যাই বেশি।

স্বেচ্ছায় রক্তদাতা আব্দুৃল করিম (২৫) বলেন, ‘রক্তের জন্য ফোন এলে কখনো না করি না। একবার রক্ত দেওয়ার পর তিন-সাড়ে তিন মাস হয়ে গেলে রক্ত দেওয়ার জন্য মানসিক প্রস্তুতি থাকে। একবার দেওয়ার পর কখনো মনে হয় না এবার একটু সময় নেব বা এবারটা দেব না। কারণ, মানুষ বিপদে পড়েই রক্ত চায়।’

বিয়ানীবাজারে নিয়মিত রক্ত দেন, এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় এখানে স্বেচ্ছায় রক্ত দেওয়ার বিষয়ে মানুষের মধ্যে অনাগ্রহ ছিল। মানুষেরা সচেতন ছিলেন না। এখন মানুষ আগের চেয়ে বেশি সচেতন হয়েছে। আগ্রহ বাড়ছে। প্রয়োজনে রক্ত পাওয়া যায়। কেউ রক্তের প্রয়োজনে কারও সঙ্গে যোগাযোগ করলে সবাই মিলে সেটার ব্যবস্থা করে দেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কাজটি সহজ করে দিয়েছে।

বিয়ানীবাজারে রক্তদানের জন্য প্রতিষ্টিত কোন সংগঠন নেই। তবে নীরবে কাজ করছে বিয়ানীবাজার ব্লাড গ্রুপ, বিয়ানীবাজার ব্লাড ফাইটার, সহায়তা ব্লাড গ্রুপ, মানবিক রক্তদান ফাউন্ডেশন, সিএমএস ব্লাড ডোনেশন ক্লাবসহ আরো অন্তত: ৪টি সংগঠন। তাদের সদস্য সংখ্যা ৩শ’র উপরে। প্রতিদিন সদস্য বাড়ছে। উপজেলায় রক্তের চাহিদার অর্ধেকের বেশী আসে স্বেচ্ছাসেবীদের কাছ থেকে। স্বেচ্ছায় রক্ত দিয়ে মানুষের পাশে থাকতে বিয়ানীবাজারের বিভিন্ন এলাকার কিছু উদ্যমী তরুণ গড়ে তুলেছেন অনলাইনভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো। ‘একজন মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে রক্তের প্রয়োজন’—এ রকম কোনো আহ্বানের অপেক্ষায় থাকেন সংগঠনের সদস্যরা। আর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ছুটে বেড়ান তাঁদের জীবন বাঁচাতে। পৌঁছে যান হাসপাতালে। হাসিমুখে ফেরেন রক্ত দিয়ে।

Manual8 Ad Code

বিয়ানীবাজার উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: মনিরুল হক খান বলেন, ৯০ শতাংশের বেশি রোগী যেকোনোভাবে রক্তদাতা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন। রক্তের চাহিদার বেশির ভাগই পূরণ হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে।

রক্তদাতা সায়মন আহমদ বলেন, এখন রক্তদানে তরুণরা বেশ আগ্রহী। করোনার সময় থেকেই অনেক এলাকায় রক্তদাতা সংগঠন কার্যক্রম শুরু করেছে।

Manual6 Ad Code

রক্তদাতা মাহিন আহমদ বলেন, ‘সময় যতই সংকটময় হোক না কেন, কারও পাশে দাঁড়াতে পারলে অনেক ভালো লাগে। আর স্বেচ্ছাসেবাই তো মানুষকে সমৃদ্ধ করে।’

Manual8 Ad Code

বিয়ানীবাজার সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম বলেন, যান্ত্রিক জীবনে সবাই যখন প্রতিযোগিতার দৌড়ে ব্যস্ত, তখন একদল তরুণ নিঃস্বার্থভাবে কাজ করছেন মানুষের জন্য। এটাই মানবিকতা।

Manual2 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code