প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

গতি বাড়ছে ভোটের ট্রেনের

editor
প্রকাশিত জুন ১৯, ২০২৫, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ণ
গতি বাড়ছে ভোটের ট্রেনের

Manual5 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

Manual8 Ad Code

 

Manual8 Ad Code

ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। অন্তর্বর্তী সরকারের বেঁধে দেওয়া এমন সময়ে ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে অনেকটাই ধোঁয়াশায় ছিল নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যে কারণে কিছুটা ঢিমেতালে চলছিল ভোটের প্রস্তুতি। তবে লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকের পর অনেকটাই নিশ্চিত যে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। সেই হিসেবে ইসির হাতে সময় আছে সাত থেকে আট মাস। এই সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে সব ধরনের প্রস্তুতি। তাই ভোটের ট্রেনের গতি বাড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন। জোরেশোরে চলছে প্রস্তুতি। কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক, বিভিন্ন দফতরে চিঠি চালাচালি, কর্মকর্তাদের নির্বাচনি আইন ও বিধি সম্পর্কে প্রশিক্ষণের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে দেওয়া হচ্ছে নানা নির্দেশনা।

 

ভোটের প্রস্তুতির অগ্রগতি নিয়ে আজ কমিশন সভা ডেকেছে ইসি। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে বেলা ১১টায় ইসি ভবনে সভাটি অনুষ্ঠিত হবে। সভার আলোচ্য বিষয় হলো রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ ও বিবিধ। এ ছাড়া ভোটের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে আগামী ২১ এবং ২৮ জুন নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও নির্বাচনি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তাদের দুই দিনব্যাপী নির্বাচনি আইন ও বিধি সংক্রান্ত প্রশিক্ষণের আয়োজন করেছে ইসি।

Manual5 Ad Code

 

এর আগে গত ১৬ জুন সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র সংস্কার করতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের চার সচিব ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর এবং শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলীকে একটি নির্দেশনা পাঠিয়েছে ইসি। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহৃত ভোটকেন্দ্র এবং সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের মধ্যে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাউন্ডারি (সীমানা) প্রাচীর নেই এবং কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দরজা-জানালা জরাজীর্ণ। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাউন্ডারি বা সীমানা প্রাচীর নেই কিংবা ছোটখাটো মেরামত বা সংস্কার প্রয়োজন আছে সেগুলো সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে নিজস্ব অর্থায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়ে আগেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃতব্য স্থাপনাগুলোর সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্যাদি বিশেষভাবে প্রয়োজন। এ তথ্য ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরকারের তরফ থেকে নির্বাচনি প্রস্তুতির আলোচনা শুরু হওয়ায় নির্বাচন কমিশন তার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে এ ধরনের তাগাদা দিয়েছে। গত সংসদ নির্বাচনে ৪৪ হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্র ছিল। এবার সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

 

ইসি ভবনে গিয়ে দেখা যায় ভোটের প্রস্তুতিতে মিটিং করছেন কমিশনাররা। শাখাগুলোতে বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। ইসি কর্মকর্তারা জানান, প্রার্থীদের আচরণবিধি, পর্যবেক্ষক নিয়োগ, নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন ও সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ নিয়ে দ্রুতগতিতে কাজ চলছে। এর আগে অফিস খোলার প্রথম কর্মদিবসে গত রোববার সিইসি ও চার কমিশনার ইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে সিইসি চার নির্বাচন কমিশনার নিয়ে নিজ কক্ষে দীর্ঘ সময় বৈঠক করেন। গতকালও মিটিং ও প্রস্তুতি নিয়ে তৎপর ছিলেন ইসি কর্মকর্তারা। গত রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের নিজ দফতরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে সিইসি জানিয়েছেন, সংসদ নির্বাচন কবে হবে তা নিয়ে সরকারের সঙ্গে কমিশনের আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি। আলোচনা হলে ইসি সরকারের ‘ভাব’ বুঝতে পারবে। তখন নির্বাচনের তারিখ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। নির্বাচন ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিল যখনই হোক, নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুত থাকতে হবে।

 

ইসির নির্বাচন পরিচালনা শাখার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এতদিন প্রস্তুতির কাজ ঢিমেতালে চললেও এখন কাজে গতি পাবে। কারণ রোববার প্রথম কর্মদিবসেই কর্মকর্তাদের সঙ্গে নির্বাচনি প্রস্তুতি নিয়ে মতবিনিময় সভা করেন সিইসি। সভায় কর্মকর্তাদের সার্বিক প্রস্তুতির নির্দেশনা দেন তিনি। এদিকে ভোটের প্রস্তুতি হিসেবে ভোটার তালিকা হালনাগাদের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ ক্ষেত্রে তফসিল ঘোষণার আগ পর্যন্ত যাদের বয়স ১৮ বছর হয়ে যাবে, তাদের সবাই ভোট দিতে পারবেন এমন উদ্যোগ নিচ্ছে ইসি। এ ছাড়া নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিষয়ে আবেদনের শেষ সময় আগামী ২২ জুন। জুলাই মাসের মধ্যে এ কাজ শেষ করতে চায় ইসি। সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণেরও কাজ এগিয়ে চলছে বলে জানান কর্মকর্তারা।

Manual6 Ad Code

 

অন্যান্য নির্বাচনি প্রস্তুতির অংশ হিসেবে স্বচ্ছ ব্যালট বক্স, অফিসিয়াল সিল, মার্কিং সিল, গানি ব্যাগ, লাল গালাসহ ভোটগ্রহণের সরঞ্জাম সংগ্রহের কাজ চলমান রয়েছে। ভোটের এসব সরঞ্জাম সরবরাহের বিষয়ে ইউএনডিপির পক্ষ থেকে ইসিকে সহায়তার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার বিকালে ইউএনডিপি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন প্রকল্প ‘দ্য ব্যালট’ এর অধীনে উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতার অংশ স্বরূপ অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশন বাংলাদেশ ও ইউএনডিপির মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তিতে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজনে দুই মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। নির্বাচনি বিভিন্ন ফরম ও প্যাকেট ছাপার প্রস্তুতি নিতে ইতিমধ্যে বিজি প্রেসকে চিঠি দিয়েছে ইসি। এ ছাড়া নির্বাচন পর্যবেক্ষণ নীতিমালাও চূড়ান্ত করা হয়েছে।

 

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, ভোটের প্রস্তুতি হিসেবে আমাদের রুটিন ওয়ার্ক চলছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ অনেকটা শেষের পর্যায়ে। নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য বেঁধে দেওয়া সময়ও শেষের দিকে। পর্যবেক্ষক নিয়োগও একটা পর্যায়ে রাখা আছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় এগুলো ফাইনাল হবে। ফেব্রুয়ারিতে ভোট হলে চ্যালেঞ্জ হবে কি না এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সবার সহযোগিতা পেলে আমাদের কোনো চ্যালেঞ্জ নেই। যেকোনো সময় নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code