প্রজন্ম ডেস্ক:
দেশে ডিজিটাল সেবার পরিধি বাড়ায় বাড়ছে ফোরজি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা। বর্তমানে সারাদেশে মোট ফোরজি সাইট রয়েছে প্রায় ৬১ হাজার। বিপরীতে ফোরজি গ্রাহক প্রায় ১০ কোটি ৯৬ লাখ ৪৮ হাজার।
মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোর তথ্যমতে, বর্তমানে দেশে অপারেটরগুলোর ফোরজি সাইট প্রায় ৬১ হাজার ৬৫৪টি। এরমধ্যে গ্রামীণফোনের ২৩ হাজার, রবি আজিয়াটার ১৮ হাজার, বাংলালিংকের ১৬ হাজার ও রাষ্ট্রায়ত্ত অপারেটর টেলিটকের ফোরজি সাইট রয়েছে চার হাজার ৬৫৪টি।
অপারেটরগুলো আরও জানায়, বর্তমানে অপারেটরগুলোর ফোরজি গ্রাহক প্রায় ১০ কোটি ৯৬ লাখ ৪৮ হাজার। এরমধ্যে গ্রামীণফোনের ৪ কোটি ২৯ লাখ, রবি আজিয়াটার ৩ কোটি ৬৭ লাখ, বাংলালিংকের প্রায় ২ কোটি এবং টেলিটকের ফোরজি গ্রাহক ৫০ লাখ ৪৮ হাজার।
ফোরজি গ্রাহক ও সাইট সম্পর্কে জানতে চাইলে গ্রামীণফোনের জনসংযোগ বিভাগের প্রধান অনকিত সুরেকা বলেন, ‘আমরা সবসময় গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা প্রদানে সচেষ্ট। প্রথম প্রান্তিক শেষে গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহক দাঁড়িয়েছে ৮ কোটি ৪৮ লাখে। গ্রামীণফোনের মোট গ্রাহকের ৫৭ শতাংশ, অর্থাৎ ৪ কোটি ৮৩ লাখ গ্রাহক ইন্টারনেট সেবা ব্যবহার করছেন। ফোরজি গ্রাহক ৪ কোটি ২৯ লাখ। দেশব্যাপী আমাদের ফোরজি সাইট প্রায় ২৩ হাজার। গ্রাহকদের মানসম্পন্ন সেবা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করছি।’
ফোরজি অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও টেলিকম অপারেটরদের বিনিয়োগ বৃদ্ধির কারণে দেশে ফোরজি গ্রাহক বাড়ছে, যা ডিজিটাল সেবায় মানুষকে সহযোগিতা করছে। তবে শহরের তুলনায় গ্রামের চিত্র ভিন্ন। এখনো মফস্বলে গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন সেবা পেতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বলে জানান খাত সংশ্লিষ্টরা।
তারা বলেন, ইন্টারনেট সেবা এখন মানুষের মৌলিক অধিকারগুলোর একটি। এখানে অঞ্চলভিক্তিক সেবার মান থেকে সরে এসে দেশের সব গ্রাহককে সমান সেবা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।
জানতে চাইলে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোশিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘ফোরজিতে গ্রাহক অনুপাতে সেবার মান আরও বাড়াতে হবে। বিভাগীয় বা জেলা শহরের সেবার তুলনায় মফস্বলের সেবা খুবই মানহীন। এখনো অনেক গ্রাম রয়েছে যেখানে ইন্টারনেট সেবা পেতে মানুষ প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ জায়গা থেকে সরকার এবং অপারেটরগুলোকে বের হয়ে আসতে হবে।’
এ বিষয়ে টেলিটকের অতিরিক্ত মহাব্যবস্থাপক মো. সামসুজ্জোহা বলেন, ‘টেলিটকের সক্রিয় ফোরজি গ্রাহক ৫০ লাখ ৪৮ হাজার। দেশব্যাপী আমাদের ৪ হাজার ৬৫৪টি ফোরজি সাইট রয়েছে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া এবং প্রতিদিন আমরা সাইটগুলো সম্প্রসারণ করছি।’
২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশে পরিচালিত মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো ফোরজি সেবার লাইসেন্স দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ওই বছরের জুনে ফোরজি গ্রাহকের সংখ্যা ৫০ লাখে পৌঁছায়। বর্তমানে দেশে মোট ফোরজি গ্রাহক ১০ কোটি ৪৭ লাখ।
হোয়াটসঅ্যাপ বার্তায় বাংলালিংকের ফোরজি গ্রাহক ও সাইট সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, তাদের ফোরজি গ্রাহক এখন দুই কোটিরও বেশি। আর সারাদেশে ফোরজি সাইট রয়েছে প্রায় ১৬ হাজার। ইন্টারনেট গ্রাহক প্রায় তিন কোটি।
রবি আজিয়াটার ফোরজি নেটওয়ার্ক ও গ্রাহক সম্পর্কে জানতে চাইলে অপারেটরটি জাগো নিউজকে জানায়, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিক শেষে রবির সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা পাঁচ কোটি ৬৪ লাখ, যা আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৩ দশমিক ৭ লাখ ও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৭ লাখ কম।
অপারেটরটি বলছে, দেশে বর্তমানে রবির ইন্টারনেট গ্রাহক সংখ্যা চার কোটি ২৫ লাখ, আর ফোরজি ব্যবহারকারীর সংখ্যা তিন কোটি ৬৭ লাখ। যার মধ্যে ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশ সক্রিয় গ্রাহক ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। সক্রিয় গ্রাহকদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ ফোরজি ব্যবহার করেন। সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যার অনুপাতে এ দুটোতেই (ইন্টারনেট ও ফোরজি ব্যবহারে) অপারেটরগুলোর মধ্যে শীর্ষে রবি।
২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিক শেষে ১৮ হাজারেরও বেশি সক্রিয় ফোরজি সাইটের মাধ্যমে দেশের প্রায় ৯৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ জনসংখ্যার জন্য ফোরজি কভারেজ নিশ্চিত করেছে রবি, জানায় অপারেটরটি।
Sharing is caring!