প্রজন্ম ডেস্ক:
দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও সরকারি অফিসের ছাদে সৌরবিদ্যুৎ (রুফটপ সোলার) স্থাপনের মাধ্যমে আগামী ৬ মাসে প্রায় ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছে বিদ্যুৎ বিভাগ। এটি বাস্তবায়ন হলে অন্তত ৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে। উৎপাদিত বিদ্যুতের আর্থিক মূল্য ২৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি হবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
বিদ্যুৎ বিভাগ বলছে, এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ১৮ লাখ টন জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার কমার পাশাপাশি অন্তত ৫৪ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক অর্থ সাশ্রয় হবে। কার্বন ডাই-অক্সাইডের নিঃসরণ কমবে ২৫ লাখ টন। এ ছাড়া কার্বন ক্রেডিটের মাধ্যমে ২০ মিলিয়ন ডলার আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। পুরো কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রায় ১৫ হাজার কর্মসংস্থান বাড়বে।
সম্প্রতি উপদেষ্টা পরিষদে উপস্থাপন করা রুফটপ সোলার-সংক্রান্ত বিদ্যুৎ বিভাগের কার্যক্রমের সার-সংক্ষেপে এসব বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।
খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই বিশাল কার্যক্রম সারা দেশে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বৃদ্ধিতে বৈপ্লবিক ভূমিকা পালন করবে। বিশেষত রুফটপ সোলার প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ দ্রুততম সময়ে তার নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারবে।
গত ২৬ জুন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ শীর্ষক একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে দেশের সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবনের ছাদে সোলার প্যানেল বসিয়ে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য ‘জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি’ গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে সব সরকারি ভবন, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও সব সরকারি হাসপাতালের ছাদে রুফটপ সোলার সিস্টেম স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার ওই নির্দেশনার পর ২৯ জুন উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে জাতীয় রুফটপ সোলার কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে।
নবায়নযোগ্য জ¦ালানির সম্প্রসারণে অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে ইনভার্টার, সোলার প্যানেল, ব্যাটারির ওপর ভ্যাট ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১ শতাংশ করেছে, যার ফলে সোলার রুফটপ বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞ এবং খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
রুফটপ সোলার নিয়ে ৬ মাসের পরিকল্পনা :
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রমতে, ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুতের ব্যবহার বাড়াতে ৬ মাস মেয়াদি দুই ধরনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং অপরটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছাদে। এর মধ্যে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ছাদে সৌরবিদ্যুতের সিস্টেম স্থাপন করে ডিসেম্বরের মধ্যে ১ থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে দেশের সব প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসা, পলিটেকনিকসহ অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাদে একই সময়ে প্রায় একই পরিমাণ সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে সব বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থা নিজেই অথবা সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে এই কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবে। এই কার্যক্রম বাস্তবায়নে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর কোনো বিনিয়োগ করতে হবে না। এমনকি প্যানেল স্থাপন, বিদ্যমান সংযোগের রেনোভেশন বা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব বহন করতে হবে না। উপরন্তু, এই মডেলের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ছাদ ব্যবহার করতে দেওয়ার জন্য একটি ভাড়া পাবে যা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব তহবিলে সংযুক্ত হবে।
অন্যদিকে সরকারি অফিসের ছাদে সৌরবিদ্যুৎ কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য, সিস্টেমের ক্যাপাসিটি ভেদে প্রাক্কলিত মূল্যের ওপর ভিত্তি করে সব সরকারি অফিস তার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়ের কাছে বরাদ্দ চাইবে। মন্ত্রণালয় সারা দেশ থেকে প্রাপ্ত চাহিদার ওপর ভিত্তি করে সম্মিলিতভাবে বরাদ্দ প্রদান করবে। পরে প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে সোলার সিস্টেম স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি ওপেক্স মডেলে বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোর মাধ্যমেও সিস্টেম স্থাপনের সুযোগ রয়েছে।
ওই দুই ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আগামী ৬ মাসের মধ্যে জাতীয় গ্রিডে ২ হাজার-৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ যুক্ত হবে বলে আশা করছেন কর্মকর্তারা।
মূলত এই সিস্টেমগুলো নেট মিটারিংয়ের আওতায় আসবে। যার মাধ্যমে গ্রাহকের বিল সমন্বয় করা হবে। অর্থাৎ রুফটপ সোলার থেকে উৎপাদিত গ্রাহকের চাহিদার অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে চলে যাবে স্বয়ংক্রিয়ভাবে। আবার যখন প্রয়োজন হবে তখন গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ গ্রহণ করবে গ্রাহক। প্রতি তিন মাসে বিদ্যুৎ গ্রহণ ও সরবরাহ সমন্বয় করে তার বিদ্যুৎ বিল নির্ধারণ করা হবে।
জানতে চাইলে বিদ্যুৎ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা) নূর আহমদ বলেন, ইতিমধ্যে এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়েছে। এখন গাইডলাইনগুলোর কিছু বিষয় আরও সুনির্দিষ্ট করে যত দ্রুত সম্ভব এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে দেশের বর্তমান অবস্থা :
ইন্টারন্যাশনাল রিনিউবেল এনার্জি এজেন্সির ২০২৪ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সৌরবিদ্যুৎ প্রসার ও ধার্যকৃত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বাংলাদেশ প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় অনেক পিছিয়ে রয়েছে। ভারতে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২৪ শতাংশ, পাকিস্তানে ১৭.১৬ শতাংশ, শ্রীলঙ্কায় ৩৯.৭ শতাংশ উৎপাদন হলেও বাংলাদেশে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার মাত্র ৫.৬ শতাংশ (১৫৮০ মেগাওয়াট) সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করছে বাংলাদেশ। যদিও বাস্তবে এই হার আরও কম। কারণ ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুতে নি¤œমানের যন্ত্রপাতি ব্যবহারের কারণে বড় অংশই অকেজো হয়ে পড়ে আছে।
বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা ২০০৮ এ নবায়নযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে ৫ শতাংশ এবং ২০২০ সালের মধ্যে ১০ শতাংশ জ্বালানির চাহিদা নবায়নযোগ্য উৎস থেকে পূরণের কথা থাকলেও তা পূরণ হয়নি। পরে একাধিক লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হলেও তা অর্জন করতে পারেনি সরকার।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা ২০২৫ অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ২০ শতাংশ (আনুমানিক ৪ হাজার ৪৪৪ মেগাওয়াট) এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৩০ শতাংশ (আনুমানিক ৮ হাজার ৮৮৮ মেগাওয়াট) নবায়নযোগ্য জ¦ালানি থেকে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ।
এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ইতিমধ্যেই ৫২৩৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার স্থলভিত্তিক ৫৫টি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্রের টেন্ডার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তবে এটি বাস্তবায়ন হতে ২০২৮ সাল পর্যন্ত সময় লাগবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তারা জানান।
প্যারিস চুক্তির ন্যাশনালি ডিটারমিনেন্ট কন্ট্রিবিউটর (এনডিসি) অনুযায়ী, বাংলাদেশের ২০৪০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অবদান জাতীয় গ্রিডে ৪০ শতাংশ হওয়ার কথা।
রুফটপ সোলারের সম্ভাবনা ও প্রতিবন্ধকতা :
বাংলাদেশে বর্তমানে মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ৩১ হজার ৪৫২ মেগাওয়াট, এই বিদ্যুতের মধ্যে ৫৬ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় দেশীয় প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। তবে প্রাকৃতিক গ্যাসের রিজার্ভ ক্রমশ কমে আসছে যা নতুন কোনো গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত না হলে আগামী ২০৫০ সালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। অপরদিকে গ্যাসভিত্তিক এসব বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার জন্য সরকারকে প্রতিবছর প্রায় ৯৮টি এলএনজি কার্গো আমদানি করতে হচ্ছে যার জন্য সরকারকে প্রতিবছর প্রায় ২.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হচ্ছে ।
এ ছাড়া সাম্প্রতিক বৈশ্বিক যুদ্ধাবস্থার কারণে আগামীতে বিশ্বব্যাপী জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পেতে পারে এবং সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে নবায়নযোগ্য জ¦ালানির ব্যবহার বৃদ্ধির তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এক্ষেত্রে তুনলামূলক কম সময়ে রুফটপ সোলারের মাধ্যমে নবায়নযোগ্য জ¦ালানির ব্যবহারের বড় সুযোগ রয়েছে।
ইন্টারন্যাশনাল রিনিউবল এনার্জি এজেন্সির তথ্যমতে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে রুফটপ সোলার বাজার প্রায় ১.২ গিগাওয়াটে পৌঁছাতে পারে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, শুধু রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ইপিজেড) ৩০ শতাংশ জায়গা ব্যবহার করলে ৩৩৩ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী এম জাকির হোসেন খান বলেন, বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য জ¦ালানির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। বিশেষ করে রুফটপ সোলার নবায়নযোগ্য জ¦ালানির লক্ষ্যপূরণে বড় সহায়ক ভূমিকা রাখতে পারে।
এক্ষেত্রে বেশ কিছু পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, রুফটপ সোলার স্থাপনে মানুষকে আগ্রহী করতে সরকারকে নানা ধরনের প্রণোদনা দেওয়ার পাশাপাশি নেট মিটারিং সিস্টেমের অনুমোদন আরও সহজ করতে হবে। বিতরণ কোম্পানির কাছে সৌরবিদ্যুৎ বিক্রিতে বেশি দর নির্ধারণ এবং বাড়তি সুবিধা দেওয়া দরকার।
সরকার একটা ‘ডেডিকেটেড ফান্ড’ রাখতে পারে যেখান থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে সোলার সিস্টেম স্থাপনে বিনিয়োগের সুযোগ থাকবে। এক্ষেত্রে ভর্তুকি দেওয়ার পাশাপাশি সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ সুদে সহজ শর্তে ঋণ দেওয়া যেতে পারে। সেই সঙ্গে মানসম্মত সৌর যন্ত্রাংশের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, যোগ করেন তিনি।
অপর এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ঢাকায় যে পরিমাণ ভবনের ছাদ রয়েছে তার ১০ শতাংশ ব্যবহার হলেও প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব।
ইডকলের নির্বাহী পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী র্কমর্কতা আলমগীর মোরশেদ বলেছেন, রুফটপ সোলার উৎস থেকে বাংলাদেশের ৫ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি বিদ্যুৎউৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ইডকল ২০২৬ সাল নাগাদ ৩০০ মেগাওয়াট পিক রুফটপ সোলার প্রকল্পে অর্থায়ন করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
সাস্টেইনেবল অ্যান্ড রিনিউএবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (স্রেডা) তথ্যমতে, নেট মিটারিংয়ের আওতায় এখন পর্যন্ত দেশে ৩১৩২টি রুফটপ সোলার স্থাপন করা হয়েছে যার স্থাপিত ক্ষমতা প্রায় ১৪০ মেগাওয়াট।
খাতসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে, বেশ কিছু প্রতিবন্ধকতার কারণে দেশে রুফটপ সোলার সিস্টেম স্থাপনে অগ্রগতি খুবই সামান্য। এরমধ্যে একটি কারণ হলোনি¤œমানের সৌরবিদ্যুৎ যন্ত্রাংশ ব্যবহার। বিদ্যুৎ বিভাগের ঠিকমতো তদারকি না থাকায় অনেকেই এ ধরনের সিস্টেম বসিয়ে প্রতারিত হওয়ায় সৌরবিদ্যুৎ নিয়ে কিছু মানুষের মধ্যে ভ্রান্ত ধারণা তৈরি হয়েছে।
এ ছাড়া নেট মিটারিং সিস্টেমে যুক্ত হতে গ্রাহকের মিটার ও অন্যান্য যন্ত্রাংশ বাবদ বাড়তি ব্যয় হয়। আবার বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থাগুলোর অনুমোদন পেতেও কিছুটা সময় লাগে এবং নানা ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয় গ্রাহকের। এ ছাড়া গ্রাহককে এককালীন যে বিনিয়োগ করতে হয় তা অনেকের সামর্থ্য নেই। আবার থাকলেও আগ্রহী হন না অনেকে।
এসব সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি গ্রাহককে নগদ ভর্তুকি, করছাড় ও কার্বন ইনসেনটিভসহ বিভিন্ন সুবিধা দেওয়া হলে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনে অনেকেই এগিয়ে আসবেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কিছু গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল কারখানা সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করে তাদের বিদ্যুৎ বিল ২৫-৪০% পর্যন্ত কমিয়েছে। গাজীপুরের একটি কারখানায় ২.৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি সৌরবিদ্যুৎ সিস্টেম স্থাপনে বছরে প্রায় ৩ কোটি টাকার বিদ্যুৎ খরচ সাশ্রয় করছে এবং ২ হাজার টন কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গমন রোধ করছে।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের গুজরাট সরকার ছাদভিত্তিক সৌরব্যবস্থায় ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেয়। যুক্তরাষ্ট্রে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ইনভেস্টমেন্ট ট্যাক্স ক্রেডিট দেওয়া হয়। এ ছাড়া, শ্রীলঙ্কা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ইতালিসহ বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের প্রণোদনা দেয় দেশগুলোর সরকার।
Sharing is caring!