প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারে জমজমাট আদম ব্যবসা: প্রতারিত হলেও মামলা করতে চান না ভূক্তভোগী

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ৩, ২০২৪, ০৪:১০ অপরাহ্ণ
বিয়ানীবাজারে জমজমাট আদম ব্যবসা: প্রতারিত হলেও মামলা করতে চান না ভূক্তভোগী

Manual8 Ad Code

 

স্টাফ রিপোর্টার:

Manual4 Ad Code

 

বিয়ানীবাজারে প্রকাশ্যে-নীরবে চলছে আদম ব্যবসা। কেউ বৈধপথে আবার কেউ অবৈধপথে মানব পাচার করে হাতিয়ে নিচ্ছেন লাখ-লাখ টাকা। উজ্জল ভবিষ্যতের আশায় অনেক বিদেশ যাত্রী আবার সর্বস্ব হারাচ্ছেন। উপজেলার শত শত যুবক বর্তমানে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথ-জঙ্গল পাড়ি দিয়ে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও তারা এই পথে পা দিচ্ছেন। কেন দিচ্ছেন— তাদের সহজ উত্তর, যদি কোনোভাবে সেখানে পৌঁছানো যায় তাহলে তাদের জন্য অপেক্ষা করছে স্বপ্নের আগামী।

 

পৌরশহরসহ উপজেলার অন্যান্য এলাকায় অনেকটা আদম ব্যবসার হাট খুলে বসা হয়েছে। চোখের সামনেই তাদের হাতে প্রতারিত হচ্ছে মানুষ। স্বপ্নের ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে টাকা দিয়ে এসব প্রতিষ্ঠানে ধরনা দেন যুবকরা। এসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এখন ক্ষুব্ধ-বিক্ষুব্ধ মানুষ। তবে তারা আইন-আদালতের দ্বারে-কাছে যাননা।

Manual6 Ad Code

জানা যায়, ইউরোপ-আমেরিকায় পাঠানোর জন্য দালালেরা পর্যটকবান্ধব দেশ বেছে নেন। এসব দেশ তাদের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে তেমন বাছবিচার ছাড়াই বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়। এই সুযোগ কাজে লাগায় দালালেরা। তবে, বাংলাদেশসহ ভারত ও নেপালের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই রুট সম্পর্কে দুই দেশকে অবগত করলে তারা কিছুটা সচেতন হয়। তারা দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশের যাত্রীদের ভ্রমণের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করে।

 

Manual8 Ad Code

এদিকে যারা গন্তব্যে যেতে পারে না তাদের বিভিন্ন কারনে আদম ব্যবসায়ীকে দেওয়া টাকা তুলতে গেলে আজ-কাল-পরশু করে বছরের পর বছর টাকা না দেওয়ার টালবাহানা করতে থাকে। আর যত সময় যায় ততোই জীবনে অশান্তি নেমে আসে বিদেশ যেতে না পারা ভূক্তভোগীদের। সুদের উপরে টাকা নেওয়া, ধার-দেনা, জমি বিক্রি করা, ভিটা মাটি বিক্রি করা, দোকান বিক্রি করা বিদেশ যেতে আগ্রহী যুবক একসময় অসহায় হয়ে পড়ে। সমাজিক সালিশের মাদ্যমে টাকা ফেরতের চেষ্টা করলেও তাকে ঘুরতে হয় বছরের পর বছর।

 

থানা পুলিশ সূত্র জানায়, চলতি বছর বিয়ানীবাজার থানায় আদম ব্যবসার অপরাধে কিংবা মানব পাচার আইনে কোন মামলা দায়ের করা হয়নি। মানবপাচারের ঘটনায় অনেকেই প্রতারিত হলেও মামলা করতে চান না। মামলা করলেও তারা হাজিরা দিতে আসেন না কিংবা তদন্তে সহায়তা করেন না। এসব মামলার অধিকাংশ আসামিই মানবপাচারকারী ও দালাল চক্রের সদস্য। অধিকাংশকে এলাকায় পাওয়া যায় না, আবার অনেকে বিদেশে থাকেন। কেউ কেউ প্রভাবশালী ও বিত্তশালী। তারা ভিক্টিমকে ভয়ভীতি দেখান। এ কারণে অনেক ভুক্তভোগী তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন না। দালালেরা তাদের ফুসলিয়ে মামলা থেকে বিরত রাখে।

বিয়ানীবাজার কমিউনিষ্ট পার্টির সভাপতি এডভোকেট আবুল কাশেম বলেন, আমাদের এখানে কর্মসংস্থানের জায়গাটা সীমিত। এখানে বিদেশকেন্দ্রীক ভবিষ্যৎই মুখ্য। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে ভালো দিনের প্রত্যাশায় বিদেশ যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

 

Manual6 Ad Code

বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: এনামুল হক চৌধুরী বলেন, অবৈধ পথ বেছে নিয়ে বিদেশ যাওয়া ঠিক নয়। এসব ঘটনা নিয়ে খুব অল্পসংখ্যক ভূক্তভোগী পুলিশের কাছে আসে। যারা মামলা করেন, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা প্রতারক চক্রকে গ্রেপ্তার করি, চার্জশিট দেই। এসব অভিযোগে কাউকে তিল পরিমাণ ছাড় দেওয়া হয় না, আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code