প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

জনশক্তি রপ্তানিতে বিপর্যয়ের শঙ্কা

editor
প্রকাশিত জুলাই ১৯, ২০২৫, ১০:০০ পূর্বাহ্ণ
জনশক্তি রপ্তানিতে বিপর্যয়ের শঙ্কা

Manual2 Ad Code

 

Manual1 Ad Code

প্রজন্ম ডেস্ক:

বাংলাদেশের বৈদেশিক শ্রমবাজারে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে আসার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বন্ধ থাকা শ্রমবাজারগুলো খোলার আপাতত কোনো নিশ্চয়তা পাওয়া যায়নি। পাশাপাশি ঈদুল আজহার পর থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরবের ভিসা বন্ধ রয়েছে।

Manual7 Ad Code

তাকামুল (দক্ষতা) সার্টিফিকেট ছাড়া কোনো বাংলাদেশির ভিসা আর স্ট্যাম্পিং করবে না ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস। অথচ বাংলাদেশের মোট জনশক্তি রপ্তানির ৭০ ভাগই যায় সৌদি আরবে। আর সৌদিতে যাওয়া বাংলাদেশি শ্রমিকদের ৯৫ ভাগই অদক্ষ। তবে দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে সৌদির শর্ত আগামী এক বছর শিথিল রাখার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার। এই সময়ের মধ্যে দক্ষ শ্রমিক পাঠানোর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে চাইছে বাংলাদেশ সরকার।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে দক্ষ জনশক্তি বাছাই করতে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ইতোমধ্যে এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) দিয়ে নথিপত্র পর্যবেক্ষণ শুরু করেছে। এই পদ্ধতিতে প্রকৃত দক্ষ কর্মী ছাড়া ভুয়া কাগজপত্র জমা দিয়ে ভিসা নেওয়া সম্ভব না। সৌদি সরকার দক্ষ কর্মী নিয়োগ নিশ্চিত করতে তাকামুলের মাধ্যমে দক্ষতা পরীক্ষার প্রক্রিয়া চালু করেছে। এর মাধ্যমে সৌদি আরব অদক্ষ কর্মীর পরিবর্তে দক্ষ কর্মী নিয়োগের দিকে ঝুঁকছে। আধুনিক প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশটি ২০৩০ সালকে টার্গেট করে বিভিন্ন সেক্টরে দক্ষ অভিবাসী কর্মী নিয়োগে গুরুত্ব দিচ্ছে। দেশটিতে বিভিন্ন মেগা সিটির উন্নয়নকাজ চলছে। দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি ছাড়া এই শ্রমবাজারটিও হারাতে হবে বাংলাদেশকে।

Manual5 Ad Code

প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সৌদি সরকার তাকামুলের মাধ্যমে স্কিল টেস্ট বা দক্ষতা পর্যবেক্ষণ করে কর্মী নিয়োগ করবে বলে ২০২২ সালের ২৭ মার্চ বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক চুক্তি করে। ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি প্রথমে পাইলট প্রকল্পের আওতায় ঢাকায় ৫টি ট্রেডে স্কিল টেস্ট কাজ শুরু করে সৌদি সরকার। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় দক্ষ কর্মী তৈরিতে বাস্তবমুখী উদ্যোগ নিতে পারেনি। দেশে ১১১টি সরকারি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারে (টিটিসি) মানসম্পন্ন প্রশিক্ষণের অভাবে দক্ষ কর্মীর সংখ্যা আশানুরূপ বাড়েনি। সূত্র জানায়, বিএমইটির বিভিন্ন টিটিসিতে দক্ষ কর্মীদের কোনো কারণ ছাড়াই ফেল দেখানো হচ্ছে। ফলে এসব সেন্টার থেকে এআইয়ের মাধ্যমে দক্ষতার খোঁজ নেওয়া হলে অনুত্তীর্ণ প্রার্থীর তালিকাই জমা পড়ে সৌদি কর্তৃপক্ষের অনুসন্ধানে। তাকামুলে স্কিল টেস্ট বাবদ প্রতিবার কর্মীদের দিতে হয় ৫০ মার্কিন ডলার। এতে বিএমইটি ও টিটিসি চার্জ হিসেবে ২৫ মার্কিন ডলার পেয়ে লাভবান হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সৌদি সরকার তাকামুলের মাধ্যমে দক্ষ কর্মী নেওয়ার সিদ্ধান্তে অটল থাকলে বাংলাদেশ থেকে কোনো কর্মীই সে দেশে যেতে পারবে না। কারণ, দেশটিতে বাংলাদেশের বেশির ভাগ কর্মীই যায় অদক্ষ। সৌদি আরবের জন্য দক্ষ কর্মী তৈরির কাজটিও অত্যন্ত জটিল।

সূত্র আরও জানায়, গত সোমবার ঢাকায় নিযুক্ত সৌদি রাষ্ট্রদূত ড. আবদুল্লাহ জাফর এইচ বিন আবিয়াহ পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ও পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূতের কাছে তাকামুলের ব্যাপারে আরও সময় ও সহযোগিতা চাওয়া হয়। উত্তরে রাষ্ট্রদূত তার সরকারের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করবেন বলে আশ্বাস দেন।

Manual5 Ad Code

এদিকে গত এক বছরে মালয়েশিয়া, ইউএই এবং ওমান সরকার বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। কাতার, কুয়েত সরকারও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ কমিয়েছে। এ অবস্থায় অভিবাসন খাতের বিপর্যয় ঠেকাতে প্রচলিত বাজার পুনরুদ্ধারের পাশাপাশি নতুন বাজার সৃষ্টির দিকে সরকারের নজর বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন জনশক্তি রপ্তানিকারকরা।

প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সরকার নতুন শ্রমবাজার খোঁজার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে রয়েছে রাশিয়া, পর্তুগাল, মাল্টা, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম ও ইরাক। এ জন্য দক্ষ শ্রমিক তৈরি করতে প্রশিক্ষণ বাড়ানো এবং ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে সরাসরি চুক্তি করার উদ্যোগও নিয়েছে সরকার।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code