প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১লা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

জনজীবনে অশ্লীলতার থাবা

editor
প্রকাশিত আগস্ট ৩০, ২০২৫, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ণ
জনজীবনে অশ্লীলতার থাবা

Manual5 Ad Code

 

Manual2 Ad Code

প্রজন্ম ডেস্ক:

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে, বিশেষ করে ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে ভুয়া তথ্য প্রচার এবং রাজনৈতিক নেতাসহ বিশিষ্টজনদের চরিত্রহানি এখন চরমে। কটূক্তি, অশ্লীল ও আক্রমণাত্মক মন্তব্যে কোনো লাগাম নেই। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম। ভুয়া ছবি-ভিডিও তৈরিতে ব্যবহূত হচ্ছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি, ডিপফেক ভিডিও।
একটি দলের পক্ষ থেকে কয়েক মাস আগে প্রকাশ্যে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে প্রতিপক্ষের চৌকস নেতাদের মুখোশ খুলতে, তাঁদের চরিত্র হনন করতে। সম্ভাব্য এই আক্রমণ, অশ্লীলতার জবাব দিতে অন্য দলের পক্ষ থেকেও তাদের কর্মীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সক্রিয় হতে বলে।

এই পরিস্থিতিতে দেশ, রাষ্ট্র, সমাজ, রাজনীতি নিয়ে কোনো পোস্ট দিতে ভয় পাচ্ছেন সজ্জন ব্যক্তিরা। তাঁদের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে—‘ফেসবুক এ দেশে এখনো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠল না।
এটা চলে গেছে মূর্খ আর ইতরদের দখলে। ফেসবুককে এখন পাবলিক টয়লেটের দেয়াল মনে হচ্ছে। উগ্রতা, অশ্লীলতা এখন চরম পর্যায়ে। যার যা খুশি মন্তব্য করছে, গালাগালি করছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ছাড়িয়ে রাজপথে বিভিন্ন আন্দোলনে ব্যানার-ফেস্টুনে, স্লোগানেও ব্যবহৃত হচ্ছে ভদ্রসমাজে উচ্চারণ করা যায় না এমন সব শব্দ।’ এই পরিস্থিতিতে নির্বাচন কর্মকর্তারাও উদ্বিগ্ন। সামনে নির্বাচন। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এআই ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপব্যবহার রোধ এবং নির্বাচন আচরণবিধি প্রতিপালন করানোকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন গত ৯ আগস্ট রংপুরে নির্বাচনসংক্রান্ত মতবিনিময়সভা শেষে সাংবাদিকদের এই চ্যালেঞ্জ ও উদ্বেগের কথা জানান।

সরকারের পক্ষ থেকেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার নিয়ন্ত্রণে কাউন্টার ন্যারেটিভ প্রস্তুতের ভাবনা-চিন্তা হচ্ছে। এ বিষয়ে গত ৩ জুন এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়, বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসত্য ও ভিত্তিহীন অডিও ও ভিডিও অপপ্রচার নিয়ন্ত্রণে কাউন্টার ন্যারেটিভ প্রস্তুত করে জনগণকে অবহিত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে মন্ত্রণালয়ে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির নবম সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

বিশিষ্টজনদের পর্যবেক্ষণ : লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ সম্প্রতি তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘একসময় রাজনৈতিক বিষয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিতাম। এখন পারতপক্ষে দিই না। মূর্খ আর বেয়াদব অর্বাচীনরা যেভাবে হামলে পড়ে, ট্রল করে, তা দেখলে রক্তচাপ বেড়ে যায়। তাই গাছপালা, ফসল আর প্রকৃতির ছবি দিই। নিজের বইয়ের প্রচার করি। মূর্খ আর বেয়াদবরা বই পড়ে না। সুতরাং সেদিক থেকে আমি অপেক্ষাকৃত নিরাপদ। মাঝেমধ্যে কলাম লিখি। তা-ও একটিমাত্র পত্রিকায়। সেটাও কম লোকে পড়ে। তার পরও ভয়ে অনলাইনে মন্তব্যগুলো দেখি না। কিছু কিছু মন্তব্য পড়লে মনে হয়, মানুষ এত ইতর হয় কিভাবে। এরা পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া বাধাতে চায়। এদের ফাঁদে পা দিলেই বিপদ। আগে তাদের কমেন্ট দেখে রি-অ্যাক্ট করতাম। এখন চুপ থাকি। জবাব দিই না। ফেসবুক এ দেশে এখনো সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হয়ে উঠল না। এটা চলে গেছে মূর্খ আর ইতরদের দখলে। এরা উগ্র জাতিবাদী, ধর্মোন্মাদ, সাম্প্রদায়িক, প্রচণ্ড রকম নারীবিদ্বেষী। চিলে কান নিয়ে গেছে শুনলে এরা চিলের পেছনে দৌড়ায়। এদের পোস্ট কিংবা মন্তব্য পড়লে বোঝা যায়, এদের ন্যূনতম পড়াশোনা নেই, হোমওয়ার্ক নেই, শোভন ভাষা ব্যবহারের পারিবারিক শিক্ষা নেই। এরা উইট বোঝে না। তার পরও ফেসবুক ব্যবহার করি। কারণ, এর মাধ্যমে কিছু ভালো বন্ধু পেয়েছি। তাঁদের কাছে শিখি।’

সম্প্রতি রাজনৈতিক নেতাদের নিয়ে গালাগাল সম্পর্কে একজন নারী সাংবাদিক তাঁর ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘গালাগাল নতুন নয়। কিন্তু যখন তা রাজনীতির স্লোগান হয়, তখন প্রতিবাদের ভাষা হয়ে যায় অশ্লীলতা, ঘৃণা। আজ এই অশ্লীল গালি সহজেই আমাদের সন্তানদের ডিভাইস বেয়ে তাদের মন-মগজে ঢুকছে, এটাই সবচেয়ে ভয়ংকর।’

Manual2 Ad Code

ওই সাংবাদিক রাষ্ট্র ও সরকারের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের প্রশ্ন রেখেছেন, ‘আপনারা কি বুঝতে পারছেন না, এই কদর্যতা শুধু আমার ঘরে নয়, আপনাদের ঘরেও ঢুকে পড়ছে? আপনাদের সন্তানের মনও কলুষিত করছে! দুই দিন পর কিন্তু কিছু চেয়ে না পেলে এই অশ্লীল গালিই হবে তার ক্ষোভ প্রকাশের ভাষা। অশনিসংকেত টের পাচ্ছেন না?’

একজন অভিনেত্রী রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যবহৃত অশ্লীল স্লোগান নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সম্প্রতি লেখেন, ‘আগে স্লোগান শুনলেই দেশের জন্য মন উত্তাল হয়ে উঠত। বিভিন্ন দলের আদর্শ প্রকাশ পেত তাদের মিছিল ও স্লোগানে। কিন্তু এখন স্লোগান শুনলে দ্রুত ফোনের সাউন্ড বন্ধ করে চারপাশে কেউ আছে কি না দেখে নিই। বাচ্চা, বয়োজ্যেষ্ঠরা পাশে থাকলে লজ্জায় মাথা নত হয়ে যায়। ছিঃ, কী ভাষা!’

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও রাজনৈতিক স্লোগানে অশ্লীল শব্দের ব্যবহারকে ‘শব্দ সন্ত্রাস’ বা শাব্দিক সন্ত্রাস বলে মনে করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন আন্দোলনকেন্দ্রিক স্লোগানে অনেকের প্রকাশভঙ্গিতে আমরা অশ্লীলতা দেখতে পাচ্ছি। সমাজে সহিষ্ণুতা কমেছে, সামগ্রিক সংহিসতা বেড়েছে। এর সঙ্গে শাব্দিক সন্ত্রাসও বেড়েছে। অ্যাকোমোডেশন বা কেউ কাউকে জায়গা দিতে না চাওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। সবকিছুতে প্রতিযোগিতা। এটি গেল একটি দিক। অন্যদিকে পরিশীলিত সংস্কৃতির চর্চায় দেশে এক ধরনের স্থবিরতা চলছে। মানুষ জন্মায় রনেস (অমার্জিত) অবস্থা নিয়ে। এই রনেসটা ক্রমে রিফাইন্ড (পরিমার্জিত) হয় শিক্ষার মাধ্যমে, বিভিন্ন বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানসম্মত সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে। এই পরিশীলিত সংস্কৃতির চর্চাটা হচ্ছে না।’

রাজনীতিকরা যা বলছেন : বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম সমন্বয়ক সাইফুল হক বলেন, ‘আমরা অসাধারণ গণজাগরণের মাধ্যমে গণ-অভ্যুত্থান করলাম। কিন্তু সামগ্রিকভাবে সেটা বদহজম হয়েছে। এখন গণ-অভ্যুত্থানের স্ববিরোধিতা দেখছি। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে অসহিষ্ণুতা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা বিরোধিতায় পর্যবসিত হয়েছে। ঐক্যের পরিবর্তে বিভেদ-বিভাজন বেড়েছে। অশালীন শব্দ-বাক্য উচ্চারণ এখন নৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমাদের রাজনৈতিক পেরিফেরিতে রাজনৈতিক বিতর্ক ও বিরোধিতা ছিল, কিন্তু এমন কোনো অশ্লীল ভাষা, যেটা আমাদের মূল্যবোধের সঙ্গে যায় না, সেই ভাষার ব্যবহার ছিল না। কিন্তু এখন অহরহ তা ব্যবহার হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ইউটিউবারদের বড় ভূমিকা রয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আদর্শিকভাবে মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়ে মানুষ গালিগালাজের আশ্রয় নিচ্ছে। কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করা হচ্ছে। এটা অসহায়ত্বের জায়গা থেকে করা হয়। যাঁরা এ ধরনের ভাষা ব্যবহার করেন, তাঁরা প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে মোকাবেলায় ব্যর্থ। তাই কখনো কখনো মা-খালা-বাবা তুলে গালাগালি করেন। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শত্রু ভাবেন। এতে পুরো রাজনৈতিক সংস্কৃতির গুরুতর অবনমন ঘটেছে, যা সমাজে ভয়াবহ নৈরাজ্য সৃষ্টি করবে।’

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট জায়েদ বিন নাসের বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং সরাসরি রাজনৈতিক বক্তব্যে অশ্লীল শব্দের অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগ বেড়েছে বলে আমরা মনে করি না। তবে যে দু-একজন তথাকথিত রাজনীতিবিদ এমনটা করছেন, তাঁদের বক্তব্যই বেশি প্রচার হচ্ছে। একটি গোষ্ঠী অনলাইনে বাজে কথাগুলো ছড়িয়ে তিক্ততা ছড়াচ্ছে এবং ক্রিয়াশীল রাজনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে দূরত্ব বাড়ানোর অপচেষ্টা করছে। রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত বক্তব্য, অশ্লীল শব্দের প্রয়োগ এবং কুরুচিপূর্ণ স্লোগান নিঃসন্দেহে জুলাইয়ের মূল্যবোধের সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।’

Manual8 Ad Code

তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের দলের হাইকমান্ড থেকে বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করা আছে, কারণ এনসিপি জুলাইয়ের মূল্যবোধকে ধারণ করে। আর জুলাইকে ধারণ করলে বাকস্বাধীনতার পক্ষে অবস্থান নেওয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। তবে এও সত্য যে দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষা, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতার রাজনৈতিক বন্দোবস্ত প্রতিষ্ঠা করার স্বার্থে আমাদের দলীয় হাইকমান্ড থেকে অশ্লীল শব্দচয়ন ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত আচরণ করার বিপক্ষে সুস্পষ্ট অবস্থান রয়েছে।’

ভুয়া ও মিথ্যা তথ্যের ব্যবহার বেড়েছে : দেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুয়া ও মিথ্যা তথ্যের ব্যবহার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে বলে মনে করে দেশের অন্যতম শীর্ষ ফ্যাক্ট-চেকিং সংস্থা রিউমার স্ক্যানার। গত মাসে সংস্থাটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ৩১০টি ভুল তথ্য শনাক্ত করেছে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানানো সংস্থাটির গত ১ আগস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফ্যাক্টচেক থেকে গণনা করা ৩১০টি ভুয়া তথ্যের মধ্যে ১৮৪টি রাজনৈতিক, যা মোট ভুল তথ্যের প্রায় ৫৯ শতাংশ। এ ছাড়া গত মাসে জাতীয় বিষয়ে ৬১টি, বিনোদন ও সাহিত্য বিষয়ে ১৫টি, ধর্মীয় বিষয়ে ১৩টি, আন্তর্জাতিক বিষয়ে ১১টি, প্রতারণা বিষয়ে সাতটি, খেলাধুলা বিষয়ে পাঁচটি, শিক্ষা বিষয়ে ছয়টি, স্বাস্থ্য বিষয়ে একটি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে দুটি এবং পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়ে পাঁচটি ভুল তথ্য শনাক্ত হয়েছে।

রিউমার স্ক্যানার টিমের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এসব ঘটনায় ভিডিওকেন্দ্রিক ভুলই ছিল সবচেয়ে বেশি, ১৭১টি। এ ছাড়া তথ্যকেন্দ্রিক ৮২টি এবং ছবিকেন্দ্রিক ভুল ছিল ৫৭টি। শনাক্ত হওয়া ভুল তথ্যগুলোর মধ্যে মিথ্যা হিসেবে ২২১টি, বিকৃত হিসেবে ৩৮টি এবং বিভ্রান্তিকর হিসেবে ৫১টি ঘটনাকে সাব্যস্ত করা হয়েছে।

প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গত মাসে ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি, ২৯৫টি ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। এ ছাড়া ইনস্টাগ্রামে ১৩৯টি, ইউটিউবে ৭৫টি, এক্সে ৪৪টি, টিকটকে ৫২টি, থ্রেডসে অন্তত সাতটি ভুল এবং টেলিগ্রামে অন্তত একটি ভুল তথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে। ভুল তথ্য প্রচারের তালিকা থেকে বাদ যায়নি দেশের গণমাধ্যমও। ১৬টি ঘটনায় দেশের একাধিক গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার হতে দেখেছে রিউমার স্ক্যানার।

সংস্থাটির আরো পর্যবেক্ষণ, গত মাসে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে জড়িয়ে তিনটি ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। ভুল তথ্যগুলোর ধরন বুঝতে এগুলোকে রিউমার স্ক্যানার দুটি আলাদা ভাগে ভাগ করেছে। সরকারের পক্ষে যায় এমন ভুল তথ্যের প্রচারকে ইতিবাচক এবং বিপক্ষে যায় এমন ভুল তথ্যের প্রচারকে নেতিবাচক হিসেবে ধরে নিয়ে রিউমার স্ক্যানার দেখেছে, এসব ভুল তথ্যের ৭৫ শতাংশ ক্ষেত্রেই সরকারকে নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে।

বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক অপতথ্য প্রচারের বিষয়টি বেশ কয়েক মাস ধরে আলোচনায় থাকলেও সম্প্রতি তা কিছুটা কমের দিকে। তবে জুলাই মাসে তা আবার বাড়তে দেখেছে রিউমার স্ক্যানার। এই সময়ে ১০টি সাম্প্রদায়িক অপতথ্য শনাক্ত করেছে রিউমার স্ক্যানার। এর মধ্যে সাতটি ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভারতীয় পরিচয়ধারী অ্যাকাউন্ট ও পেজ থেকে অপতথ্য প্রচারের প্রমাণ মিলেছে।

Manual6 Ad Code

এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়া ৩৫১টি ভুল তথ্য শনাক্ত করে রিউমার স্ক্যানার। গত বছরের আগস্টের পর এক মাসে এটিই ছিল সর্বোচ্চ ভুল তথ্য শনাক্তের সংখ্যা। সে সময়েও রাজনৈতিক বিষয়ে সবচেয়ে বেশি, ১৪৩টি ভুল তথ্য ছড়ানো হয়, যা মোট ভুল তথ্যের ৪১ শতাংশ। গত বছর আগস্টে শনাক্ত হয়েছিল ৩৮৬টি ভুল তথ্য। ভুল তথ্যের প্রবাহ চলছে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোকে নিয়েও।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code