প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১লা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

বিস্ফোরন্মুখ মধ্যপ্রাচ্য, যে কোনো সময় যুদ্ধের আশঙ্কা

editor
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৪, ২০২৫, ০৮:২০ পূর্বাহ্ণ
বিস্ফোরন্মুখ মধ্যপ্রাচ্য, যে কোনো সময় যুদ্ধের আশঙ্কা

Manual4 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

সময়টি মধ্যপ্রাচ্যের জন্য সবচেয়ে বিপজ্জনক ও অনিশ্চিত বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। একাধিক ফ্রন্টে বেড়ে ওঠা উত্তেজনা ও সংঘাতের ঝুঁকি যে কোনো সময় সরাসরি যুদ্ধের রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সম্ভাব্য সেই যুদ্ধে মুখোমুখি হবে ইসরায়েল, ইরান ও তাদের আঞ্চলিক সহযোগীরা। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সঙ্কট ঘনীভূত হওয়ার পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ ভূমিকা রয়েছে।

 

Manual7 Ad Code

ইয়েমেন: হুতিদের নতুন হুমকি

Manual6 Ad Code

ফিলিস্তিনি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ আশরাফ আকা মনে করেন, হুতিদের সাম্প্রতিক ঘোষণায় নতুন সংঘাতের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তার মতে, ইয়েমেন ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বড় ধরনের হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ ধরনের হামলা হলে তা কেবল গাজার যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করবে না, বরং যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক কৌশলেও বড় বাধা তৈরি করবে।

Manual8 Ad Code

 

লেবানন-সিরিয়া: উত্তপ্ত সীমানা

লেবানিজ লেখক মরতাদা সামাভির মতে, লেবানন ও সিরিয়ার বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ধারাবাহিক হামলা এবং মিসর ও জর্ডানের প্রতি উসকানিমূলক অবস্থান পুরো অঞ্চলকে আরও অস্থিতিশীল করে তুলছে। তিনি বলেন, ইসরায়েলের মূল লক্ষ্য গাজায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা এবং লেবাননের প্রতিরোধ শক্তিকে ভেঙে দেওয়া। একই সঙ্গে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের পর ইরানও নতুন সংঘাতের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সামাভির আশঙ্কা, লেবানন খুব শিগগিরই ‘উত্তপ্ত দিনগুলো’র মুখোমুখি হতে পারে।

 

ইরান: সীমিত বিকল্পে ইসরায়েল

তেহরানের বিশেষজ্ঞ হাদি ইসা দালুল জানান, ইসরায়েল এখনো সরাসরি ইরানের অভ্যন্তরে বড় ধরনের হামলা চালাতে পারেনি; বরং সীমান্তবর্তী এলাকায় ড্রোন নেটওয়ার্ক ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার ওপর নির্ভর করছে। তবে ইরান এসব নেটওয়ার্ক ভেঙে দিয়েছে। ফলে ইসরায়েলের বিকল্প এখন সীমিত। দালুলের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা ছাড়া ইসরায়েল একা ইরানের মোকাবিলা করতে পারবে না।
গবেষক সালেহ আল-কাজউইনি যোগ করেন, ইরানের সাম্প্রতিক প্রতিক্রিয়া ইসরায়েলের জন্য এক সতর্কবার্তা। তবে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যই হলো পুরো অঞ্চলের প্রতিরোধ শক্তিকে দুর্বল করা।

 

ইরাক: দুর্বলতম কড়ি

বাগদাদের নিরাপত্তা বিশ্লেষক মুখলিদ আল-দার্ব মনে করেন, ইরাক ইরানপন্থি ফ্রন্টের সবচেয়ে দুর্বল সংযোগ। ইরাক যদি সরাসরি ইরানকে সমর্থন করে, তবে ইসরায়েল কিংবা যুক্তরাষ্ট্র পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে। সেক্ষেত্রে দেশটির ভেতরে নিরাপত্তা ভেঙে পড়ার আশঙ্কা থাকবে এবং সুপ্ত জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠতে পারে।

জেরুজালেম: ‘নির্ধারক’ যুদ্ধের আভাস

গবেষক হোসেইন আল-দিকের মতে, আসন্ন সংঘাত অতীতের যেকোনো যুদ্ধের চেয়ে ‘বেশি সহিংস ও নির্ধারক’ হতে পারে। তিনি দাবি করেন, এই লড়াইয়ে ইরানের শীর্ষ রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্বও টার্গেটে পড়তে পারে। তার ভাষায়, যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যেই ইসরায়েলকে ‘সবুজ সংকেত’ দিয়েছে, আর দুই দেশ সব ফ্রন্টে অভিন্ন অস্ত্রনীতি অনুসরণ করছে।

 

Manual4 Ad Code

বিস্ফোরণের দ্বারপ্রান্তে অঞ্চল

মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ করলেও সবাই একমত যে অঞ্চলটি এখন সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায়ে রয়েছে। ইসরায়েলের কৌশল প্রতিরোধ শক্তিকে ধ্বংস করা, অন্যদিকে ইরানের লক্ষ্য আঞ্চলিক মিত্রদের ধরে রাখা। এর মাঝে ইরাক, লেবানন কিংবা সিরিয়ার মতো দুর্বল রাষ্ট্রগুলো সহজেই বড় শক্তির সংঘাতের ময়দানে পরিণত হতে পারে। সামান্য ভুল পদক্ষেপও পুরো অঞ্চলকে ভয়াবহ আঞ্চলিক যুদ্ধে ঠেলে দিতে পারে।

তথ্যসূত্র: শাফাক নিউজ

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code