প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৯শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৪ঠা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৮শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

‘তুমি সবসময় নেগেটিভ’ — ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর উত্তপ্ত ফোনালাপ

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ৬, ২০২৫, ০৬:১৬ পূর্বাহ্ণ
‘তুমি সবসময় নেগেটিভ’ — ট্রাম্প-নেতানিয়াহুর উত্তপ্ত ফোনালাপ

Manual6 Ad Code

নিউজ ডেস্ক:
গাজা যুদ্ধ শেষ করার লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রস্তাবে হামাসের আংশিক সম্মতিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন ট্রাম্প নিজে। কিন্তু ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বিষয়টিকে একেবারেই ভিন্নভাবে দেখেছেন। এই মতভেদ নিয়েই দুজনের মধ্যে এক পর্যায়ে উত্তপ্ত ফোনালাপ হয়েছে।

Manual2 Ad Code

মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস জানিয়েছে, গত শুক্রবার হামাস যখন ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে আংশিক সম্মতি জানায় তখনই ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ফোন করে বলেন, এটি একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। কিন্তু নেতানিয়াহু জবাবে বলেন, ‘এটা উদযাপনের কিছু নয়, এর কোনো অর্থ নেই।’

Manual3 Ad Code

এতে ট্রাম্প চরম বিরক্ত হন। প্রতিবেদনে বলা হয়, তিনি নেতানিয়াহুকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আমি বুঝি না, কেন তুমি সবসময় এত নেতিবাচক।’ এর মধ্যে একটি অশালীন শব্দও ব্যবহার করেন তিনি। পরে ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে বলেন, ‘এটা একটা জয়, এটা গ্রহণ করো।’ (I don’t know why you’re always so f ing negative. This is a win. Take it.)

একজন মার্কিন কর্মকর্তা এক্সিওস-কে বলেন, এই সংলাপ দেখিয়েছে—নেতানিয়াহুর আপত্তি সত্ত্বেও ট্রাম্প যুদ্ধ শেষের দিকে এগোতে এবং হামাসের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত করতে কতটা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

হামাস তাদের আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, তারা সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি, তবে যুদ্ধ পুরোপুরি বন্ধ ও গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। একইসঙ্গে প্রস্তাবের অনেক বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন আছে বলেও জানায় সংগঠনটি।

Manual8 Ad Code

অন্যদিকে নেতানিয়াহু তার ঘনিষ্ঠ কর্মকর্তাদের বলেন, তিনি হামাসের প্রতিক্রিয়াকে ট্রাম্পের পরিকল্পনা ‘প্রত্যাখ্যান’ হিসেবে দেখছেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিক্রিয়া সমন্বয় করতে চান, যাতে হামাসের প্রতিক্রিয়াকে ইতিবাচক হিসেবে দেখানোর সুযোগ না পায়।

কিন্তু ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিনি আশঙ্কা করেছিলেন, হামাস হয়তো পরিকল্পনাটি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করবে। তাই আংশিক সম্মতিকে তিনি ‘চুক্তির সুযোগ’ হিসেবে দেখেন।

দুই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, ফোনালাপে নেতানিয়াহুর শীতল প্রতিক্রিয়া ট্রাম্পকে হতাশ করে। তাই তিনি কঠোর সুরে প্রতিক্রিয়া জানান। পরে এক্সিওস-এর সঙ্গে এক সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি নেতানিয়াহুকে বলেছিলাম, এটি তোমার জয়ের সুযোগ। শেষ পর্যন্ত সে এতে রাজি হয়েছে। তার রাজি হওয়া ছাড়া উপায়ও নেই—আমার সঙ্গে থাকলে রাজি হতেই হয়।’

ফোনালাপের অল্প সময় পরই ট্রাম্প ইসরায়েলকে গাজায় বিমান হামলা বন্ধের আহ্বান জানান। তিন ঘণ্টা পর নেতানিয়াহু বিমান হামলা বন্ধের নির্দেশ দেন।

যদিও ইসরায়েলি কর্মকর্তারা পরে বলেন, ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর অবস্থান এখন সম্পূর্ণ এক। নেতানিয়াহু এক ভিডিওবার্তায় ট্রাম্পকে প্রশংসা করেন এবং তার বক্তব্যের সঙ্গে নিজেদের অবস্থান মেলানোর চেষ্টা করেন।

তবে মার্কিন কর্মকর্তারা বলেন, ফোনালাপের পরিবেশ ছিল ‘উত্তপ্ত ও কঠিন’। তবুও দুই নেতা শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় পৌঁছান। তাদের মধ্যে একজন বলেন, ‘অবশেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শান্তি চান, সেটিই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। প্রশাসন ইতিমধ্যেই ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে এ লক্ষ্য অর্জনে।’

হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।

Manual8 Ad Code

শনিবার ট্রাম্প আবারও দুই পক্ষকে দ্রুত চুক্তিতে পৌঁছানোর আহ্বান জানান এবং হামাসকে সতর্ক করেন—যদি তারা বিলম্ব করে, পুরো চুক্তি বাতিল হয়ে যাবে।

একইদিন ইসরায়েল গাজার কিছু অংশ থেকে প্রাথমিক সেনা প্রত্যাহারের হালনাগাদ মানচিত্রে সম্মত হয়। সোমবার মিশরে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে পরোক্ষ আলোচনা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও জ্যারেড কুশনার অংশ নেবেন।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code