প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১১ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৬শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২০শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের জোর করে বোরকা পরাবে না: শফিকুর রহমান

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২৬, ২০২৫, ০৫:০৫ পূর্বাহ্ণ
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের জোর করে বোরকা পরাবে না: শফিকুর রহমান

Manual8 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
জামায়াত ক্ষমতায় গেলে নারীদের বোরকা পরতে জোর করা হবে—এমন অভিযোগ ‘ভয় দেখানো’র কৌশল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ক্ষমতায় গেলে কাউকে কোনো পোশাক পরতে বাধ্য করা হবে না। নারী–পুরুষ সবার নিরাপত্তা, সম্মান ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করাই হবে তাদের প্রতিশ্রুতি।

মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর মিরপুরে রূপসী প্রো-অ্যাকটিভ ভিলেজ রোডে আয়োজিত এক নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জামায়াত আমির। অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকার মহানগর উত্তর পেশাজীবী পরিষদ।

Manual6 Ad Code

নারী অধিকার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যোগ্যতা ও প্রয়োজন অনুযায়ী নারীরা দেশগঠনে ভূমিকা রাখবেন। বর্তমানে নারীদের নিরাপত্তা ও সম্মান নেই উল্লেখ করে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, জামায়াত ক্ষমতায় গেলে তাদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে।

নারীদের বোরকা নিয়ে আতঙ্ক ছড়ানো হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘মায়েদের ব্যাপারে ভয় দেখানো হয়—জামায়াত ক্ষমতায় এলে সবাইকে একটা করে কালো চাদর পরাবে, শুধু চোখ খোলা রাখবে। ইসলামের বিধানে চোখ খোলা রাখাও আছে আবার মুখ খোলা রাখাও আছে। হ্যাঁ, কেউ যদি চোখও না ঢাকেন, মুখও না ঢাকেন—জামায়াতে ইসলামী কাউকে জোর করে বলবে না। এই কল্যাণ রাষ্ট্রের সৌন্দর্য উপলব্ধি করে, আগ্রহী হয়ে নারীরাই সৌন্দর্যের শালীন পোশাক কবুল করে নেবেন, ইনশা আল্লাহ।’

Manual3 Ad Code

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, জনগণ যেন বিবেকের প্রতিফলন ঘটিয়ে ভোট দেন। সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যে দল ক্ষমতায় আসবে, জামায়াত তাদের অভিনন্দন জানাবে। আর জনগণ জামায়াতকে নির্বাচিত করলে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে দেশ পুনর্গঠন করা হবে।

Manual8 Ad Code

ক্ষমতায় এলে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার অঙ্গীকার করেন তিনি। পাশাপাশি দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা, ভেঙে পড়া অর্থনীতি পুনর্গঠন এবং কাঙ্ক্ষিত সংস্কার বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি—তোমাকে লাল কার্ড, সন্ত্রাস—তোমাকে কালো কার্ড।’

Manual4 Ad Code

রাজনৈতিক নিপীড়নের প্রসঙ্গে তিনি জানান, গত সাড়ে ১৫ বছর তাকে বাড়ি বাড়ি লুকিয়ে থাকতে হয়েছে। তার ভাষায়, ‘আমরা ফাঁসির রশি গলায় নিয়েছি, কিন্তু দেশ থেকে পালাইনি।’ তিনি অভিযোগ করেন, যারা একসময় ‘পালাই না’ বলেছিলেন, এখন তাদের খুঁজে পাওয়া যায় না।

নির্বাচন নিয়ে সতর্কতা জানিয়ে তিনি বলেন, পুরোনো ধাঁচের ভোটে দেশের কল্যাণ সম্ভব নয়। ‘নির্বাচনের মতো নির্বাচন’ ছাড়া জনগণের মুক্তি আসবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি। রাজনৈতিক দলগুলোকে ‘কাদা–ছোড়াছুড়ি’ পরিহার করে নীতিনিষ্ঠ রাজনীতি করার আহ্বান জানান।

১৯৭০ সালের নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ১৯৭০ সালের নির্বাচনের স্মৃতিচারণা করে তিনি বলেন, ‘৭০-এর ইলেকশনে আমরাই বলেছিলাম ভোট দেন নৌকায়, রাতে দরজা খুলে ঘুমাতে পারবেন।’ কিন্তু আজও সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ হয়নি। সৎ নেতৃত্বের অভাবেই দেশকে ‘বাগানের মতো সুন্দর’ করা যায়নি বলে তিনি আক্ষেপ করেন। শোষক-শোষিত মানুষের বিভেদ দূর করার কথাও বলেন তিনি।

জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা সংস্কারের দিকে যতবার এগোতে চেয়েছি, কেউ না কেউ আমাদের কোমর ধরে পিছের দিকে টেনে রেখেছে, এটা চাই না, ওইটা চাই না, এটার দরকার নাই, শুধুমাত্র ইলেকশন। নির্বাচন তো আগেও হয়েছে, এই দেশের মানুষকে কল্যাণ এবং মুক্তি তো দিতে পারেনি। নির্বাচন অবশ্যই প্রয়োজন। তবে নির্বাচনের মতো নির্বাচন প্রয়োজন। পুরোনো স্টাইলে নির্বাচন দিয়ে দেশে কোনো কল্যাণ কেউ দিতে পারবে না।’

যুবকদের ‘ফ্যাসিবাদের’ বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর প্রশংসা করে তিনি বলেন, এখনো তাদের কাঙ্ক্ষিত সংস্কার দেওয়া সম্ভব হয়নি। ভবিষ্যতে তাদের মেধার মূল্যায়ন করে দেশগঠনে কাজে লাগানোর অঙ্গীকারও করেন জামায়াত আমির।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual8 Ad Code