প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারের মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা জমা দেয়ার নির্দেশ

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২১, ২০২৪, ০২:৩৮ অপরাহ্ণ
বিয়ানীবাজারের মাদ্রাসা অধ্যক্ষকে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে টাকা জমা দেয়ার নির্দেশ

Manual8 Ad Code

 

Manual5 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:

Manual3 Ad Code

 

বিয়ানীবাজারের মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের অনিয়ম-দূর্নীতির তথ্য জেনে বিব্রত খোদ প্রশাসনের কর্মকর্তারা। বছরের পর বছর থেকে চলা তার এসব লাগামহীন দূর্নীতি নিয়ে এতদিন সবাই রহস্যজনক নীরব ছিলেন। ক্ষমতার ছায়াতলে থেকে মাদ্রাসা অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম দ্বীনি এই প্রতিষ্টানে ইচ্ছেমত অনিয়মের নাটাঁই ঘুরিয়েছেন। এমনকি বিভিন্ন মাদ্রাসায়ও নিজের রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করেছেন।

তবে গত ৫ আগস্ট ক্ষমতার পালাবদলের পর খেই হারিয়ে ফেলেন আব্দুল আলীম। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় সচেতনমহল জেগে ওঠলে বেরিয়ে আসতে থাকে থলের বিড়াল। যা নিয়ে রীতিমত তোলপাড় চলছে মাথিউরার গ্রামাঞ্চলে। উপজেলার শিক্ষা পরিবারেও চলছে নানাকথা।

Manual8 Ad Code

 

জানা যায়, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাওলানা আব্দুল আলীমের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে সরকারি বিভিন্ন কর্তৃপক্ষ। প্রথমে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন। এতে অনিয়মের অনেক তথ্য বেরিয়ে আসে। গত ২০ নভেম্বর মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ডাকে উভয়পক্ষের মধ্যে ফের শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো: জাকির হোসাইন উভয়পক্ষের শুনানী শেষে মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষের অনিয়ম-দূর্নীতির সত্যতা পান। তখন অধ্যক্ষকে নানা বিষয়ে নির্দেশনা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। সূত্র জানায়, তদন্তকালে কানাডা প্রবাসী শিক্ষকের অনুকুলে কথিত বরাদ্দ করা ৬ মাসের বেতন রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা ও ২০০০ সালের পরবর্তী সময় থেকে প্রতিষ্টানের আ্ভ্যন্তরীণ হিসাব প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও নিবন্ধনের চেয়ে বাস্তবে কম সংখ্যক শিক্ষার্থীর অধ্যায়ন, সম্প্রতি দাখিল পরীক্ষার গণিত বিষয়ে দু’জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতিতে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে অধ্যক্ষের কাছে ব্যাখা চাওয়া হয়।

এলাকাবাসী জানান, মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম বার্ষিক আয়-ব্যয়ের হিসাব দিতে কখনো রাজি নয়। নিজের মনগড়া ম্যানেজিং কমিটি আর স্থানীয় রাজনীতিকদের ম্যানেজ করে ইচ্ছেমত আয়-ব্যয়ের মেমো জমা করতেন তিনি।

 

Manual7 Ad Code

সূত্র জানায়, মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় দাখিল পরীক্ষার কেন্দ্র ঘোষণায় অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম প্রতিবেশী অনেক মাদ্রাসার অধ্যক্ষের সই-সিল জাল করে সুপারিশপত্র তৈরী করেন। কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিবের দায়িত্ব পাওয়া ওই অধ্যক্ষ দাখিল পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি উল্লেখযোগ্য হারে চাঁদা উঠালেও পরীক্ষার হলে দায়িত্বরত শিক্ষকদের তুলনামুলক কম সম্মানী প্রদান করেন। কেবল পরীক্ষা কেন্দ্রর ফি’ থেকে প্রতি বছর প্রায় লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করছেন তিনি। পরীক্ষায় চলে নকলের প্রতিযোগতা। শিক্ষকরা তাতে বাঁধা দিলে অধ্যক্ষ কর্তৃক হয়রানীর শিকার হতে হয় বলে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন একজন সিনিয়র শিক্ষক।

 

বিয়ানীবাজারের একসময়ের সাড়া জাগানো মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা এখন শিক্ষাক্ষেত্রে পিছিয়ে গেছে। শিক্ষার মান ক্রমশ: নিম্নগামী হচ্ছে। এই প্রতিষ্টানের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষায় দেদারছে নকল সরবরাহ, বাড়ি থেকে উত্তরপত্র লিখে আনা, প্রশ্ন ফাঁসসহ নানা অনিয়মের কারণে মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা প্রদানের তালিকা থেকে এই মাদ্রাসাটি বাদ পড়ার উপক্রম। গত ৬ নভেম্বর মাদ্রাসার দাখিল নির্বাচনী পরীক্ষার গণিত বিষয়ে ২৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র ২ জন অংশ নেয়। অপর শিক্ষার্থীরা অনুপস্থিত কেন জানতে চাইলে গণিত শিক্ষক শেখ আনোয়ার হোসেন জানান, নকল করতে পারবেনা বলে তারা অনুপস্থিত থেকেছে বলে শুনেছি। কারণ আমি নকল সরবরাহে কোন ধরনের সহযোগীতা করিনা। তাছাড়া গণিত শিক্ষক হিসেবে ওই দিনের পরীক্ষার হলে আমি নিজেই দায়িত্ব পালন করি।

 

এসব বিষয়ে মাথিউরা সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল আলীম বলেন, তদন্তকারী কর্তৃপক্ষকে সব কাগজপত্র জমা দিয়েছি। তারা তদন্ত করে দেখছেন।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code