প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারে বিয়েশাদির রান্নায় বাণিজ্যিকরণের থাবা!

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২৪, ২০২৪, ০২:৩৬ অপরাহ্ণ
বিয়ানীবাজারে বিয়েশাদির রান্নায় বাণিজ্যিকরণের থাবা!

Manual5 Ad Code

 

স্টাফ রিপোর্টার:

 

Manual8 Ad Code

করপোরেট বা অতি বাণিজ্যিকরণ থেকে বাদ যাচ্ছেনা কিছুই। বিয়েশাদি ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনও বাণিজ্যিক সিন্ডিকেটের কবলে পড়েছে। কমিউনিটি সেন্টার কিংবা নিজের বাড়ি, যেখানেই রান্না করা হোক করপোরেট প্রতিষ্টানের থাবা আছেই। প্রবাসী অধ্যুষিত বিয়ানীবাজারে বাণিজ্যের সেই আগ্রাসনে বিপাকে পড়েছেন মধ্যবিত্ত পরিবারের অনুষ্ঠান আয়োজক গৃহকর্তারা। বাবুর্চি, মসলা কেনা, খাবার সার্ভিস সহযোগি থেকে শুরু করে জরুরী নয় এমন পণ্য ক্রয়ে আয়োজককে বাধ্য করার মানষিকতায় রান্নাবান্নায় বাণিজ্যিকরণের আলোচনা এখন উপজেলাজুড়ে।

 

বিয়ানীবাজারের ভোক্তারা রান্না সংশ্লিষ্টদের মনোপলিতে অনেকটা জিম্মি হয়ে পড়েছেন। এতে করে উপজেলায় সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনে বাড়তি টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে আয়োজকদের।

জানা যায়, বিয়ানীবাজারে রন্ধন কারিগরদের একাধিক কমিটি রয়েছে। এসব কমিটির নেতৃবৃন্দকে মাসিক উপঢৌকন দেয় বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্টান। মসলার কোম্পানী, লবনের ডিলার, ভেজাল ঘি’র পরিবেশকসহ রন্ধন শিল্পের সাথে জড়িত প্রতিষ্টানগুলো তাদের পণ্যের চাহিদা বৃদ্ধির জন্য বাবুর্চিদের নানাভাবে প্রভাবিত করে। ঈদ-রোজায় বাবুর্চিদের হাতে নগদ টাকাও তুলে দেয়া হয়। ভেজাল ঘি’ পরিবেশনের জন্য কৌটা প্রতি বাবুর্চিদের হাতে ৫০০-৭০০ টাকা দিতে হয় বিক্রেতাদের। মসলার বড় কোম্পানীগুলো রন্ধন শিল্পীদের নানাভাবে কদর করে। এছাড়াও বাবুর্চি সহযোগি এবং খাবারের সার্ভিস সহযোগিদেরও সিন্ডিকেট গড়ে ওঠেছে। তাদের মধ্যে আভ্যন্তরীণ সমঝোতায় দিনপ্রতি মজুরীর হার নির্ধারণ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট এই রেটের বাইরে বিয়ের রান্না কিংবা খাবারের সার্ভিস সহযোগি হিসেবে কাউকে পাওয়া যায়না। প্রধান বাবুর্চিকে বিয়ের আয়োজন অনুপাতে মজুরী দিতে হয়। এক্ষেত্রে অতি গোপনে একটি বিয়ের অনুষ্টানের মাথাপিছু উপস্থিতির হার হিসেব করেন প্রধান বাবুর্চি।

Manual2 Ad Code

অনুসন্ধানে জানা যায়, কমিউনিটি সেন্টার-ভেদে বাবুর্চিদের রেট ওঠানামা করে। বিয়ানীবাজারে প্রধান বাবুর্চির সংখ্যা অন্তত: অর্ধশত। তাদের সহযাগিদের সংখ্যা আরোও অন্তত: দুই সহস্রাধিক। ইদানীং আবার পৌরশহরের একাধিক হল ও হোটেলে তালিকাভুক্ত ক্যাটারিংয়ের খাবার নিতে হয়। এজন্য হোটেলের মান অনুযায়ী জনপ্রতি গুণতে হয় ৬শ’ থেকে হাজার টাকা। বিয়ানীবাজারের বাবুর্চিদের ট্রেড লাইসেন্স নেই। কেউ আয়করও দেয়না।

 

নিজের মেয়ের বিয়ে আয়োজনের অভিজ্ঞতা প্রসঙ্গে বিয়ানীবাজারের দেউলগ্রামের নিজাম উদ্দিন বলেন, আমাদের পারিবারিক যেকোনো অনুষ্ঠানে বাবুর্চি রান্নাবান্না করেন। সেভাবেই আমরা অভ্যস্ত। গত কয়েকমাস থেকে এক এলাকার বাবুর্চি অন্য এলাকায় আসতে চাননা। তাছাড়া বাবুর্চির করা তালিকা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর মসলা কিনতে হয়। বাটার ওয়েল, ভেজাল ঘি’র কথা না বলাই ভালো। তিনি বলেন, রান্নায় প্রয়োজনীয় নয়, এমন বাটার ওয়েল ও ভেজাল ঘি বাবুর্চিরা আয়োজককে ক্রয় করাতে বাধ্য করেন। আর এসব কৌটার কুপন দিয়ে বিক্রেতার কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নেন তারা।

Manual1 Ad Code

বিয়ানীবাজারের পরিচিত বাবুর্চি ইকবাল হোসেন বলেন, ‘এই পেশায় ৫০ বছর শেষ করেছি। এরপরও আমরা সংসার চালাতে পারি না। তবে কতিপয় বাবুর্চি নানা সিন্ডিকেটে জড়িয়ে পড়েছেন।’

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code