প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বাঁশ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে চলছে জীবন

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ৯, ২০২৪, ০৯:০৫ পূর্বাহ্ণ
বাঁশ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে চলছে জীবন

Manual7 Ad Code

নিউজ ডেস্ক:
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বাঁশ শিল্পের ওপর নির্ভরশীল কয়েক হাজার পরিবার। বাঁশ দিয়ে বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে তা বাজারে বিক্রি করে তাদের সংসার চলছে। এর মধ্যে আছে ঝুড়ি, খালই, খাঁচাসহ বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় জিনিস। কিন্তু দাদন ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের প্রভাবে উপযুক্ত মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

Manual6 Ad Code

জানা যায়, আর্থিক সংকটের কারণে অনেক সময় বেকার হয়ে ঘরে বসে থাকতে হয় এই শিল্পীদের। নির্ভর করতে হয় ঋণের ওপর। আবার ঋণ পরিশোধ করার জন্য দাদন ব্যবসায়ীর কাছে যেতে হয়। এ সুযোগে দাদন ব্যবসায়ীরা তাদের জিম্মি করে। ফলে কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাচ্ছে এই কুটির শিল্প। তারা জীবিকার জন্য বাঁশ শিল্পকে আঁকড়ে ধরে আছেন। আবার ঐতিহ্যবাহী গ্রামবাংলার পণ্যকে টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে পরিবারগুলো।

সরেজমিনে জানা গেছে, একসময় গ্রামীণ জনপদে ঘরে ঘরে তৈরি হতো বাঁশ দিয়ে হাজারো পণ্য। কিন্তু কালের বিবর্তনে বাঁশ ও বেত শিল্প হারিয়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড বারৈয়ারঢালা ইউনিয়নের প্রায় কয়েক হাজার পরিবার এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। ইউনিয়নের পূর্ব লালানগর, পশ্চিম লালানগর, ফেদাই নগর, বহরপুর, মহালঙ্কাসহ বিভিন্ন গ্রামের নারীরা এর সঙ্গে জড়িত থেকে স্বামীর পাশাপাশি আয়ে অবদান রাখছেন।

Manual5 Ad Code

আসমা বেগম নামের এক গৃহিণী বলেন, ‘আমার স্বামী কৃষক। তার পাশাপাশি আমি বাঁশ শিল্পের বিভিন্ন পণ্য তৈরি করে বিক্রি করি। এতে আর্থিকভাবে সহযোগিতা হয়। আমার শ্বশুর-শাশুড়িও এ পেশায় ছিলেন। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কারণে উপযুক্ত দাম পাই না। বাইরের কোনো ব্যবসায়ীকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হয় না। পণ্য কিনতে এলে তাদের ওপর হামলা হয়। এক জোড়া খাঁচা স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ১৫০ টাকা দিয়ে নেয়। বাহির থেকে কোনো ব্যবসায়ী এলে আমরা ২০০ টাকা বিক্রি করতে পারি।’

Manual3 Ad Code

একই এলাকার বিবি খতিজা নামের আরেক গৃহিণী বলেন, ‘একটি বাঁশের দাম ১২০ টাকা থেকে দেড়শ টাকা। একটি বাঁশ দিয়ে ৫টি খাঁচা হয়। সময় লাগে প্রায় দুই দিন। সরকারি ভাবে যদি আমাদের ঋণ দিয়ে সহযোগিতা করা হয়, তাহলে উন্নতি করা সম্ভব।’

কাজল রেখা নামের আরেক গৃহিণী বলেন, ‘আমাদের ঘরগুলো ছোট। বর্ষাকালে ঘরে কাজ করতে খুবই অসুবিধা হয়। এ ছাড়া স্থানীয় ব্যবসায়ীদের জিম্মিদশা থেকে মুক্তির জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চাই।’

Manual2 Ad Code

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মালেক বলেন, ‘একসময় এলাকায় বাঁশ পাওয়া যেত। বিভিন্ন শিল্প-কারখানা গড়ে ওঠায় দিন দিন বন উজাড় হচ্ছে। ফলে অনেক দূর থেকে বাঁশ কিনে আনতে হয়। ঘরে বসার কোনো জায়গা নাই। বৃষ্টি হলে কাজে ব্যাঘাত ঘটে। এ ইউনিয়নে কয়েক হাজার মানুষ বাঁশ শিল্পের সঙ্গে জড়িত। সরকারি ভাবে যদি তাদের তদারকি করা হয়, তাহলে অনেক উন্নতি হবে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কেএম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কুটির শিল্প একটি জনবান্ধব শিল্প হিসেবে পরিচিত। এ শিল্পের সঙ্গে গ্রামের অধিকাংশ নারী জড়িত। এর মাধ্যমে নারীদের উন্নয়ন করা সম্ভব। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মুক্তি ও এ শিল্প বিকাশের জন্য সর্বোচ্চ উপজেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করা হবে।’

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code