প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যাচ্ছে ডলারে কেনা রসুন

editor
প্রকাশিত জানুয়ারি ২২, ২০২৫, ০৬:৩০ পূর্বাহ্ণ
সিলেট সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে যাচ্ছে ডলারে কেনা রসুন

Manual4 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
দেশের চাহিদা মেটাতে চায়না থেকে আমদানি করা হয় রসুন। ডলারে কেনা সেই রসুন সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে চোরাচালানের মাধ্যমে চলে যাচ্ছে ভারতে। প্রায় প্রতিদিনই পাচারকালে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত থেকে বিপুল পরিমাণ রসুন জব্দ করছে বিজিবি। জব্দকৃত রসুনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি পাচার হচ্ছে বলে দাবি স্থানীয়দের।

Manual1 Ad Code

আর ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাচাররোধ করা না গেলে আমদানির পরও দেশের বাজারে রসুনের সংকট থাকবে, বাড়বে দামও। এছাড়া এলসির মাধ্যমে আনা রসুন পাচার হওয়ায় ডলার সংকটও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সূত্র জানায়, চায়না থেকে আমদানিকৃত রসুন প্রতিদিন ট্রাকে করে সিলেট আসে। দক্ষিণ সুরমার কদমতলী আসার পর চোরাকারবারীরা বড় অংশ নিয়ে যায় সীমান্ত এলাকায়। পরে দুর্গম সীমান্ত এলাকা দিয়ে রসুন পাচার করে দেওয়া হয় ভারতে। এক্ষেত্রে তারা সিলেটের গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ, কানাইঘাট ও সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা ব্যবহার করে থাকে।

Manual5 Ad Code

বাংলাদেশ থেকে যাওয়া রসুন ও শিং মাছের বিপরীতে ভারত থেকে চোরাকারবারীরা নিয়ে আসে চিনি, কাপড়, কসমেটিকস, গরু-মহিষ ও মাদক। চলতি মাসের ১৬ দিনে সিলেট ও সুনামগঞ্জের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা থেকে বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের বিভিন্ন বিওপির টহল দল ১০টির বেশি রসুনের চালান জব্দ করেছে।

এর মধ্যে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার বিছনাকান্দি বিওপির টহল দল ১, ৪, ৬, ১০, ১১ ও ১৬ জানুয়ারি ৭টি চালান জব্দ করে। এছাড়া ১০ জানুয়ারি সুনামগঞ্জের বাংলাবাজার বিওপি এবং ১০ ও ১১ জানুয়ারি সিলেটের সোনারহাট বিওপি রসুনের তিনটি চালান জব্দ করে।

সূত্র আরও জানায়, সিলেটে চায়না থেকে আমদানি করা রসুনের বড় অংশ ভারতে পাচার হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে। সিলেটের সবচেয়ে বড় পাইকারি আড়ত কালিঘাটের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রায় তিন সপ্তাহ আগেও চায়না রসুন আড়তে ১৬০-১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এখন বিক্রি হচ্ছে ২০৫ টাকায়।

Manual1 Ad Code

আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী নেতারা বলছেন, নিত্যপণ্য হিসেবে রসুন চায়না থেকে আমদানি হয়ে থাকে। আমদানিকারকরা এলসি খুলে ডলারের বিনিময়ে রসুন কিনে আনেন। এতে দেশ থেকে ডলারের রিজার্ভ কমে। কিন্তু ডলারে কেনা রসুন পাচার হয়ে যাওয়ায় দেশের ক্রেতারা আমদানির সুফল পুরোপুরি পাচ্ছেন না।

Manual4 Ad Code

দেশের বাজারে সংকট সৃষ্টি করে রসুন পাচার হয়ে যাচ্ছে ভারতে। এতে লাভবান হচ্ছে ভারত। বাংলাদেশের ডলার দিয়ে কেনা রসুন চোরাই পথে নিয়ে যাচ্ছে তারা। কিন্তু ভারত বৈধপথে রসুন নিতে চাইলে বাংলাদেশ রফতানি করতে পারতো। এতে সরকার রাজস্ব আদায়ের পাশাপাশি রেমিটেন্সও পেত।

সিলেট বিভাগীয় ফল ও কাঁচামাল আমদানিকারক গ্রুপের সভাপতি আবুল কালাম বলেন, দেশের চাহিদা অনুযায়ী চায়না থেকে রসুন আমদানি হয়ে থাকে। আমদানিকৃত পণ্য যদি চোরাইপথে পাচার হয়ে যায় তবে একদিকে যেমনি দেশীয় বাজারে সংকট তৈরি হবে, অন্যদিকে দেশে ডলার সংকটও বাড়বে।

সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সহসভাপতি এমদাদ হোসেন বলেন, রসুন পাচার হওয়ার অর্থ হচ্ছে আমাদের ডলার দিয়ে কেনা পণ্য ভারত কোন ধরণের রাজস্ব না দিয়েই নিয়ে যাচ্ছে। এতে দেশিয় বাজারে রসুনের দাম বাড়বে। আমদানিকৃত পণ্য পাচার হলে দেশে ডলার সংকট বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই যে কোনভাবে এই পাচার ঠেকাতে হবে।

বিজিবি ৪৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্ণেল হাফিজুর রহমান জানান, সীমান্তের চোরাচালানরোধ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে বিজিবি সতর্ক রয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় সীমান্তের বিভিন্ন স্থানে চোরাই পণ্য হচ্ছে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code