প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

তিস্তা রক্ষার তাগিদ: চুক্তির দাবিতে সোচ্চার হওয়ার বিকল্প নেই

editor
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৫, ০৬:০৭ পূর্বাহ্ণ
তিস্তা রক্ষার তাগিদ: চুক্তির দাবিতে সোচ্চার হওয়ার বিকল্প নেই

Manual2 Ad Code

সম্পাদকীয়:
তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা ও মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সোম ও মঙ্গলবার ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন। এ কর্মসূচিতে উত্তরের পাঁচ জেলার জনতার ঢল নেমেছিল। লালমনিরহাট, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারীর নদী পারের ১১ পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে এ ব্যতিক্রমী কর্মসূচি উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ভারতকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে যদি বন্ধুত্ব করতে চান, আগে তিস্তার পানি দেন। সীমান্তে হত্যা বন্ধ করেন। আমাদের সঙ্গে বড় দাদা আর মাস্তানি আচরণ বন্ধ করেন।’ বিএনপির মহাসচিবের এ বক্তব্য যথার্থ। আমরা দেখেছি, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ভারতকে তার চাহিদা অনুযায়ী সব সুবিধা দেওয়া হলেও ভারত দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে ঝুলিয়ে রেখেছে তিস্তা চুক্তি, এটি অত্যন্ত লজ্জাজনক। ফলে তিস্তা নদী এখন এক মৌসুমি নদীতে পরিণত হয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে নদী একেবারে শুকিয়ে যায়। আর বর্ষাকালে পানি উপচে পড়ে, সৃষ্টি হয় নদী ভাঙন। বর্ষায় বন্যা ও ভাঙনে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফসলি জমি, বসতবাড়ি আর গ্রামীণ সড়ক; তেমনি শুষ্ক মৌসুমে নদীতে দেখা যায় পানির তীব্র্র সংকট।

Manual5 Ad Code

তিস্তা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রবাহিত অন্যতম একটি অভিন্ন নদী। শুষ্ক মৌসুমে পানি ভাগাভাগি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত হলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরোধিতায় সেটি গত এক দশকেও আলোর মুখ দেখেনি। অভিন্ন নদী হিসাবে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি না করে উজানে তিস্তার পানির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করছে ভারত। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এই তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের ইস্যুটি একটি অমীমাংসিত সমস্যা। দুই দেশের সম্পর্কের আলোচনায় তিস্তা একটি বড় ইস্যু। তাই দুই দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠক হলে তিস্তা ইস্যুতে কী আলোচনা হয় বা সিদ্ধান্ত হয়, তা নিয়ে বিপুল আগ্রহ থাকে বাংলাদেশের জনগণের। বস্তুত বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বিভিন্ন পর্যায়ের বৈঠকে তিস্তা চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে নানা আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও আজও তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের ওপর নানাভাবে নির্ভরশীল হওয়ার কারণেই জোরালোভাবে তিস্তা চুক্তির দাবি তুলে ধরেনি।

এখন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সুযোগ এসেছে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য সোচ্চার হওয়ার। এবং এ দাবি জানাতে হবে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের কাছে নয়। কারণ তিস্তা অভিন্ন তথা আন্তর্জাতিক নদী হওয়ায় বিষয়টি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের এখতিয়ারাধীন। কাজেই তিস্তা চুক্তি হতে হবে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী। উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক পানিসম্পদ নীতির ৭(১) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, পানিসম্পদের তীরবর্তী দেশগুলো তার নিজস্ব সীমানার অভ্যন্তরে আন্তর্জাতিক পানিসম্পদ ব্যবহারে এমন সব ব্যবস্থা গ্রহণ করবে, যাতে করে অপর রাষ্ট্রের পানিসম্পদে উল্লেখযোগ্য কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া না পড়ে। এ নীতির আলোকে যত দ্রুত সম্ভব তিস্তা চুক্তি সম্পাদনের বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো উচিত।

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code