প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার পাহাড়, প্রত্যাহার কবে

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ৩, ২০২৪, ০৩:১৫ অপরাহ্ণ
বিয়ানীবাজারে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলার পাহাড়, প্রত্যাহার কবে

Manual3 Ad Code

 

 

স্টাফ রিপোর্টার:

Manual7 Ad Code

 

পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হয়রানিমূলক মামলার কারণে বিয়ানীবাজারের বিএনপি-জামায়াতসহ বিরোধী রাজনৈতিক দলের হাজারো নেতাকর্মী ছিলেন ঘরছাড়া। এখানকার প্রথম সারির নেতাদের মধ্যে ‘মামলা ছাড়া মুক্ত’ ছিলেন এমন কারো নাম জানা যায়নি।

Manual3 Ad Code

 

স্থানীয় জামায়াত-শিবির নেতাদের একজনের নামে ৩৪টি মামলাও দায়ের করা হয়। অনেককে দফায় দফায় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এসব মিথ্যা মামলার কারণে বিএনপি-জামায়াতের অনেককে স্বাভাবিক জীবন কাটাতে দূর্ভোগ পোহাতে হয়। প্রাণ রক্ষায় অনেক নেতাকর্মী বিদেশ পাড়ি জমান। বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতেও বিয়ানীবাজারের বিএনপি-জামায়াত ও সহযোগি সংগঠনের বহু নেতাকর্মীকে এখনো আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের অনেক মামলা প্রত্যাহার হলেও তৃণমুলের বেশীরভাগ নেতাকর্মী এখনো ঘুরছেন আদালতের বারিন্দায়। তাদের মামলা খরচ, দূর্ভোগের সময়, রিমান্ড, কারাগার কিংবা দু:সহ সেই দিনগুলো এখনো চোখের সামনে ভাসছে।

Manual5 Ad Code

 

বিয়ানীবাজারে গত ১৬ বছরে সবচেয়ে বেশী মিথ্যা মামলার শিকার হন জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা। মামলার পরিসংখ্যানে স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগি সংগঠন অনেক সুবিধাজনক অবস্থায়।

 

 

বিয়ানীবাজার পৌর জামায়াতের আমীর কাজী জমির হোসাইন জানান, তার বিরুদ্ধে ৩৬টি মামলা দায়ের করা হয়। দফায়-দফায় কারবরণ, রিমান্ড ছিল তার নিত্যসঙ্গি। তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিতে হামলা চালানোর পর পুলিশ তাকে বেদম মারধর করে রাস্তায় মৃত ভেবে ফেলে যায়। তিনি জানান, বিয়ানীবাজারে জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ৫৪টি মামলা দায়ের করা হয়। এরমধ্যে এখনো ১৩টি মামলা চলামান। এসব মামলায় নিয়মিত তাদের আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে।

Manual8 Ad Code

 

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন বলেন, হাসিনার দু:শাসনের সময় বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের উপর ৫টি মামলা দায়ের করা হয়। এখনো ৩টি মামলা চলমান। বিএনপি নেতাকর্মীরা জোরে কথা বললে মামলা দিত পুলিশ। ফ্যাসিস্ট দু:শাসন এখনো আমাদের শিউরে তোলে।

 

এদিকে গত ১৫ বছরে রাজনৈতিক কারণে করা সব হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এজন্য জেলা ও আন্ত মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা পর্যায়ের কমিটির সভাপতি হবেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক, সদস্যসচিব অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সদস্য পুলিশ সুপার (মহানগর এলাকার জন্য পুলিশের একজন ডেপুটি কমিশনার) ও পাবলিক প্রসিকিউটর (মহানগর এলাকার মামলার জন্য মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর)।

 

মামলা প্রত্যাহারের জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা কমিটির সভাপতি ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদনপত্র দিতে হবে। এর সঙ্গে এজাহার ও প্রযোজ্য ক্ষেত্রে চার্জশিটের (অভিযোগপত্র) সার্টিফায়েড কপি দাখিলের কথা বলা হয়েছে। আবেদনপ্রাপ্তির সাত কর্মদিবসের মধ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দরখাস্তটি জেলার পাবলিক প্রসিকিউটরের (ক্ষেত্রবিশেষে মেট্রোপলিটন পাবলিক প্রসিকিউটর) কাছে মতামতের জন্য পাঠাবেন। এরপর ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাবলিক প্রসিকিউটর বা মেট্রোপলিটন পাবলিক প্রসিকিউটর তাঁর মতামত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পাঠাবেন। পাবলিক প্রসিকিউটরের মতামত সংগ্রহপূর্বক জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি সাত কর্মদিবসের মধ্যে জেলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করবেন। জেলা কমিটির কাছে যদি প্রতীয়মান হয় যে মামলাটি রাজনৈতিক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য করা হয়েছে, তাহলে তা প্রত্যাহারে সরকারের নিকট সুপারিশ করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এই সুপারিশ, মামলার এজাহার, চার্জশিটসহ আবেদনপ্রাপ্তির ৪৫ কর্মদিবসের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবে।

 

জননিরাপত্তা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আইন ও শৃঙ্খলা) আতাউর রহমান খান বলেন, রাজনৈতিক কারণে করা হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য জেলা ও মন্ত্রণালয় পর্যায়ে দুটি কমিটি গঠন করেছে জননিরাপত্তা বিভাগ। এ কাজ শুরু করার জন্য শিগগিরই জেলা কমিটির কাছে চিঠি পাঠানো হবে। জেলা কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি চূড়ান্ত নেবে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code