প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১০ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৫শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বিয়ানীবাজারে নবান্ন উৎসব চোখে পড়ে না!

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ১৪, ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ণ
বিয়ানীবাজারে নবান্ন উৎসব চোখে পড়ে না!

Manual2 Ad Code

 

স্টাফ রিপোর্টার:

Manual1 Ad Code

 

বাংলার মানুষের জীবনে অবিচ্ছেদ্য আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে ‘অগ্রহায়ণ মাস’ ও ‘নবান্ন’। অগ্রহায়ণ শব্দের অর্থ বর্ষ শুরুর মাস। আর অগ্রহায়ণের প্রথম দিনটিই বাংলাদেশে নবান্ন যাপনের দিন হিসেবে পরিচিত। দেশের প্রাচীনতম উত্সবগুলোর একটি নবান্ন উৎসব। আর মাত্র দু’দিন পর ১লা অগ্রহায়ণ, ওইদিন প্রাচীন ঐতিহ্য মেনে সারাদেশেই হবে নবান্ন উৎসব। যদিও আজকের দিনে অধিকাংশ আচার অনুষ্ঠান বদলে গেছে। সনাতন মাড়াই প্রথা বিলুপ্ত হয়েছে। যন্ত্রযুগে প্রবেশ করেছে গ্রাম। কৃষি ছাড়াও আয়ের অনেক উৎস সৃষ্টি হয়েছে।

নবান্নের শব্দগত অর্থ ‘নতুন অন্ন’। নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসবই নবান্ন। সাধারণত, অগ্রহায়ণ মাসে আমন ধান পাকার পরে এই উৎসব হয়। ঋতুবৈচিত্র্যে হেমন্ত আসে শীতের আগে। কার্তিক আর অগ্রহায়ণ মাস নিয়েই হেমন্ত ঋতু। কিন্তু একসময়ের কৃষিপ্রধান অঞ্চল বিয়ানীবাজারে নবান্ন উৎসব এখন কেবল স্মৃতির পাতায়। কৃষি নির্ভর এই জনপদ বর্তমানে প্রবাসী অধ্যুষিত উপজেলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

 

বিয়ানীবাজার পৌরশহরের খাসা কোনাপাড়া এলাকার কৃষক খলিলুর রহমান বলেন, একসময় ফসল কাটার আগে বিজোড় সংখ্যক ধানের ছড়া কেটে ঘরের চালে বেঁধে রাখা হতো। বাকি অংশ চাল করে সে চালে হতো পায়েস রান্না। ঘরে-ঘরে চলত পিঠা-পুলির আয়োজন। আত্মীয়-স্বজনকে নিমন্ত্রণ করা হতো। এখন আমাদের গ্রামাঞ্চলে এ ধরনের নানা আয়োজন ও আনুষ্ঠানিকতা চোখে পড়েনা।

 

Manual8 Ad Code

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কার্তিক মাসে হৃষ্টপুষ্ট হয়ে ওঠে আগাম আমন ধানের শীষ। মাসের শেষে পাকা ধান কাটা শুরু হয়ে যায়। দিনভর চলে ধান কাটা। তারপর ফসল কাঁধে বাড়ি ফিরছেন। আবার অগ্রহায়ণ মাসকে উপলক্ষ করে কৃষক পরিবারে বইছে খুশির বার্তা। তবে মূল অপেক্ষা অগ্রহায়ণের। লোক কবির ভাষায়- ‘আইলো অঘ্রাণ খুশীতে নাচে প্রাণ/চাষি কাচিতে দিলো শান/কাচি হাতে কচ কচা কচ কাটে চাষি পাকা ধান…।’ অগ্রহায়ণ মানেই আমন ধান কাটার মাস।

সরেজমিনকালে কোনাগ্রামের কৃষক আব্দুল মান্নান বলেন, আমাদের শ্রমে-ঘামে মাঠে ফসল ফলে। অক্লান্ত পরিশ্রমে রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে একবুক উচ্ছ্বাস নিয়ে আমরা ফসল আবাদ করি। অগ্রহায়ণ মাস আসলে আমরা সকল দু:খ-কষ্ট ভূলে যাই।

 

Manual3 Ad Code

বিয়ানীবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের শিক্ষক আব্দুল খালিক খালেদ বলেন, নবান্ন উৎসবের সঙ্গে মিশে আছে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস-ঐতিহ্য আর সংস্কৃতি। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তন হয়েছে সবকিছুর। বাংলার হাজার বছরের এ সংস্কৃতি যেন দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। ঘরে ঘরে হরেকরকম পিঠা তৈরির আমেজ দেখা মেলে না।

 

 

উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক পরিবারের সন্তান মুফতি শিব্বীর আহমদ জানান, বিয়ানীবাজারের ঘরে ঘরে হরেকরকম পিঠা তৈরির আমেজ মেলে না। এক বাড়ি থেকে আরেক বাড়িতে পিঠার ঘ্রাণও পাওয়া যায় না। বাড়ি বাড়ি আত্মীয়দের সমাগম খুব বেশি চোখে পড়ে না। খোলা মাঠ দিনের পর দিন পড়ে থাকলেও কেউ খেলতে যায় না। আগামী প্রজন্মের কাছে গ্রামীণ জনজীবনের এসব চিত্র হয়তো একদিন শুধুই স্মৃতি হয়ে থাকবে।

Manual3 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code