স্টাফ রিপোর্টার:
ব্রিটিশ কাউন্সিল পরিচালিত আইইএলটিএস ইংরেজি ভাষা পরীক্ষায় প্রযুক্তিগত ভুলের কারণে হাজারো অভিবাসীর ফলাফল ভুলভাবে প্রকাশিত হয়েছে— ফলে যে পরীক্ষার্থীরা প্রকৃতপক্ষে অকৃতকার্য হয়েছিলেন, তাদের অনেককে ‘পাস’ হিসেবে দেখিয়ে যুক্তরাজ্যের ভিসা দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। আইইএলটিএস পরীক্ষা নিয়ে এমন চাঞ্চল্যকর খবর প্রকাশিত হওয়ায় বিয়ানীবাজারজুড়ে উদ্বেগ বিরাজ করছে। এখনো পর্যন্ত উপজেলার অন্তত: ৩ হাজার শিক্ষার্থী আইইএলটিএস পাঠগ্রহণ করছে। পরীক্ষার জন্য অপেক্ষামান আছে আরো বহু শিক্ষার্থী। তারা সবাই উচ্চশিক্ষা অর্জনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমাতে চায়।
এদিকে যুক্তরাজ্যের বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্টানে বাংলাদেশী ছাত্র ভর্তি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ এবং অষ্টেলিয়া শিক্ষার্থী ভিসা হ্রাস করেছে।
উচ্চ মাধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়ে বিয়ানীবাজারের শিক্ষার্থীরা ইউরোপ-আমেরিকায় পাড়ি দিতে চায়। এটা এখানকার শিক্ষার্থীদের কাছে বড় স্বপ্ন। আর স্বপ্নের দেশে যেতে হলে আইইএলটিএস বাধ্যতামূলক। কিন্তু আইইএলটিএস পরীক্ষা নিয়ে এমন জালিয়াতির তথ্যে বিয়ানীবাজারের ঘরে-ঘরে হতাশা ছড়িয়ে পড়ে।
বিয়ানীবাজার ইমাজিন এডুকেশনের পরিচালক এনায়েত হোসেন জানান, উপজেলার প্রায় ১৫শ’ শিক্ষার্থী পরীক্ষার জন্য অপেক্ষামান। পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা না করা, পরীক্ষা পরবর্তী ফলাফল নিয়ে তদন্তসহ অন্যান্য কারণে একটা জট তৈরী হয়েছে। তিনি আইইএলটিএস পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে অনিয়মের খবর সত্য হতে পারে বলে মত দেন।
বিয়ানীবাজার থেকে প্রতিবছর প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী ইন্টারন্যাশনাল ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ টেস্টিং সিস্টেমের (আইইএলটিএস) পরীক্ষা দেন। ব্রিটিশ কাউন্সিল, কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস অ্যান্ড অ্যাসেসমেন্ট ও শিক্ষা সংস্থা আইডিপি যৌথভাবে এই পুরো ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করে। স্টুডেন্ট ভিসা বন্ধ, ফলাফল তদন্ত এবং ফলাফল প্রকাশ না করা, শিক্ষার্থীকে সন্দেহ করাসহ নানা কারণে উপজেলাবাসীর মনে উদ্বেগের মাত্রা আরো বাড়ছে।
দ্য টেলিগ্রাফ জানায়, বাধ্যতামূলক ইংরেজি ভাষা পরীক্ষায় ব্যর্থ হওয়ার পরেও ভুল মূল্যায়নের কারণে বহু অভিবাসী ভিসা পেয়েছেন। ব্রিটিশ কাউন্সিল পরিচালিত পরীক্ষায় ৮০ হাজার পরীক্ষার্থী অংশ নেন, যার মধ্যে অনেকে ব্যর্থ হলেও তাদের পাস নম্বর দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনটি আরও জানায়, চীন, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের প্রমাণও মিলেছে। ফলে অনেক শিক্ষার্থী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং অভিবাসী যাদের ভিসা পাওয়ার যোগ্যতা ছিল না, তারাও যুক্তরাজ্যে প্রবেশের সুযোগ পেয়েছেন। এমনকি এনএইচএসে চাকরিরত কিছু কর্মী এবং দুর্বল ইংরেজি দক্ষতার অভিবাসীরাও এমন কাজ বা শিক্ষার সুযোগ পেয়েছেন, যার জন্য তারা উপযুক্ত নন।
Sharing is caring!