স্টাফ রিপোর্টার:
যশোরে বাবার সামনে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাতে এক রিকশাচালককে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় সদর উপজেলার পাগলাদাহ মালোপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুস শহিদ (৪৫) পাগলাদাহ এলাকার বশির আহমেদের ছেলে। ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলেকে বাঁচাতে রিকশায় করে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান তার বাবা। তবে জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক শহিদকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
পুলিশ জানায়, শহিদের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। মাদক সংক্রান্ত পূর্ব বিরোধের জেরে একই গ্রামের কয়েকজন যুবকের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তারা শহিদকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আটকের জন্য পুলিশ অভিযান শুরু করেছে।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মেঝেতে নিহত শহিদের বাবা বশির আহমেদকে ঘিরে স্বজনদের আহাজারি করতে দেখা যায়। ছেলের রক্তে ভেজা অবস্থায় তিনি নিথর দেহের দিকে তাকিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
নিহতের বাবা বশির আহমেদ সাংবাদিকদের জানান, শহিদ তার বড় ছেলে। শনিবার সন্ধ্যায় রিকশা চালিয়ে বাড়ি ফেরার পথে মালোপাড়ার রহমানের দোকানের সামনে একই এলাকার কয়েকজন যুবকের সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। গণ্ডগোলের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই একজন যুবক চাকু দিয়ে শহিদের বুকে ও পিঠে একাধিক আঘাত করে। আশপাশে লোকজন থাকলেও হামলাকারীদের হাতে অস্ত্র থাকায় কেউ এগিয়ে আসেনি।
তিনি আরও বলেন, হামলার পর শহিদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় এক রিকশাচালকের সহায়তায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলেও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বিচিত্র মল্লিক জানান, শহিদের বুকের বাম পাশে ও উপরের অংশে গভীর দুটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে।
যশোর কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক কাজী বাবুল হোসেন বলেন, ‘শহিদের বিরুদ্ধে মাদকসহ একাধিক মামলা রয়েছে। প্রাথমিক ধারণা করছি, মাদকসংক্রান্ত বিরোধ ও টাকার নিয়ে দ্বন্দ্বে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। চিহ্নিত হত্যাকারীদের আটকে অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থা তদন্ত শুরু করেছে।’
Sharing is caring!