প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

ভূমিসেবায় ভোগান্তি

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ১৮, ২০২৪, ০৭:৫০ পূর্বাহ্ণ
ভূমিসেবায় ভোগান্তি

Manual8 Ad Code

সম্পাদকীয়:
ভূমিসংক্রান্ত সেবা পেতে গিয়ে সারা দেশের মানুষকে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বর্তমানে সফটওয়্যার অটোমেশনে নতুন জটিলতার কারণে নামজারি, পরচা, খাজনার রসিদ কাটতে না পারায় সারা দেশে জমি কেনাবেচা অনেকটা বন্ধই রয়েছে। ভুক্তভোগী সেবাগ্রহীতা ও ভূমি অফিসের কর্মীরা বলছেন, অনলাইনে ভূমি উন্নয়ন কর ও নামজারি সেবায় দ্বিতীয় প্রজন্মের সফটওয়্যার চালুর পর থেকে এ ভোগান্তি শুরু হয়েছে। গত ১ ডিসেম্বর নতুন সফটওয়্যার চালুর পর প্রতিদিনই নানা সমস্যা দেখা দিচ্ছে। উল্লেখ্য, ভূমিসংক্রান্ত কাজের গতি বাড়াতে পাঁচটি সফটওয়্যার একত্র করে মানোন্নয়ন করা হয়েছে। ১ ডিসেম্বর ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পের আওতায় চারটি সফটওয়্যারের মানোন্নয়ন এবং একটি নতুন উদ্ভাবিত সফটওয়্যার জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। জানা যায়, নামজারি ও খাজনা পরিশোধ নিয়ে সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়ছেন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ও বিদেশগামীরা। জটিল রোগে আক্রান্ত অনেক ব্যক্তির পরিবার জমি বিক্রি করে রোগীর চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহ করে থাকে। বর্তমানে ভূমিসংক্রান্ত সেবা পেতে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় অনেকে সময়মতো জমি বিক্রি করতে পারছেন না। এ সংক্রান্ত জটিলতায় অনেকের বিদেশযাত্রা থেমে রয়েছে এবং অনেক ব্যবসায়ী ব্যাংক ঋণ পাচ্ছেন না। এছাড়া খাজনা আপডেট করতে না পারায় বহু নাগরিককে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। অবশ্য ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বলেছেন, অটোমেশনের কাজ করতে গিয়ে কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে, যা ইতোমধ্যে সমাধান করা হয়েছে। এ সপ্তাহের মধ্যেই বাকি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।

এদিকে প্রতিটি এসিল্যান্ডের কার্যালয়ে গড়ে দেড় থেকে তিন হাজার নামজারি, পরচা ও খাজনা পরিশোধের পুরোনো আবেদন জমা হয়ে আছে। ২৬ নভেম্বরের আগে করা এসব আবেদন পুরোনো সফটওয়্যারের কার্যক্রম বন্ধ করায় মীমাংসা করা যাচ্ছে না। নতুন সফটওয়্যারে এগুলো মীমাংসা করার সুযোগ রাখা হয়নি। উল্লেখ্য, ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ ডিসেম্বর সকাল ৯টা পর্যন্ত ই-মিউটেশন সিস্টেম, ই-পরচা সিস্টেম এবং ভূমি উন্নয়ন কর সিস্টেম বন্ধ ছিল।

Manual6 Ad Code

ভূমিসংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা পেতে গিয়ে সারা দেশের মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এ কারণে ভূমি ব্যবস্থাপনায় আধুনিকায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু এ উদ্যোগ পুরোপুরি বাস্তবায়িত না হওয়ায় দুর্নীতির খপ্পর থেকে মুক্ত হতে পারেনি দেশের অনেক সাবরেজিস্ট্রি অফিস। ভূমির দলিল নিবন্ধন সেবায় যুক্ত বহু কর্মচারীর বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। এদের পদ-পদবি ছোট হলেও অবৈধ আয়-রোজগার অনেক। এতে স্পষ্ট হয়, এসব অফিসে দুর্নীতি কতটা ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। সম্প্রতি প্রকাশিত দুদকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সাবরেজিস্ট্রি অফিসগুলোতে নানা অনিয়মের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন সমস্যা। তাই রেজিস্ট্রেশন বিভাগকে যুগোপযোগী করতে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনা দরকার। ভূমি ব্যবস্থাপনা পুরোপুরি ডিজিটাল হলে এ খাতে দুর্নীতি এবং সেবাপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমবে, এটি আশা করা যায়। বিগত সরকারের আমলে ভূমিসেবায় অনিয়ম-দুর্নীতি ছিল নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়। বর্তমানে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ভূমিসংক্রান্ত সেবা পেতে নাগরিকদের যাতে হয়রানির শিকার হতে না হয়, সেজন্য অন্তর্বর্তী সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই কাম্য।

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code