-আমিনা বেগম
ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার চাহিদা মেটাতে প্রতিনিয়ত শিল্পায়ন ও নগরায়ণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সমাজের বিত্তবান, রাজনীতিবিদ, প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং অসাধু ব্যবসায়িদের দ্বারা নিত্য নতুন শিল্প কারখানা স্থাপিত হচ্ছে, সমাজের প্রভাবশালী ব্যাক্তিরা জোরপূর্বক অন্যায়ভাবে জায়গা দখল করে ইট ভাটা গড়ে তুলছে।আর এই ইট ভাটা বায়ূ দুষণের অন্যতম উৎস। বাড়ছে যানবাহনের সমস্যা।
শিল্প কারখানা থেকে নির্গত ক্ষতিকর গ্যাস উন্মুক্ত পরিবেশে মিশে যাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের ফলেও পরিবেশের ক্ষতি সাধন হচ্ছে।যানবাহনের কালো ধোঁয়া বায়ুমন্ডলে মিশে বায়ু দূষণ ঘটাচ্ছে। দিন দিন বায়ূ দুষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে গোটা পরিবেশ। সিলেটের প্রায় প্রতিটি এলাকা যেমন বিয়ানীবাজারের সুপাতলা,নিদনপুর, কসবা,শ্রীধরা থেকে শুরু করে তিলপাড়া এলাকা পর্যন্ত কয়েকটি ইট ভাটা, কল-কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। আর এসব ইট ভাটার দূষিত ধোঁয়া বের হওয়ার ফলে মানুষ নাক দিয়ে শ্বাস নয় বরং বিষ নিচ্ছে। ফলে চোখে এলার্জিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
বিয়ানীবাজার হাসপাতালে ভর্তিরত বেশিরভাগ রোগী বায়ূ দুষণের ফলে আক্রান্ত। দূষিত ধোঁয়ায় বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান থাকায় তা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। বায়ূ দূষণের কারণে মানুষ স্বল্প মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি নানা ধরনের সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে এবং অনেক মানুষ মৃত্যুর শিকার হচ্ছে। গাছ মানুষকে অক্সিজেন দেয়,কার্বন-ডাই-অক্সাইড শুষে নেয় এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। কথায় আছে-গাছ লাগান,পরিবেশ বাচাঁন। আর এই কথার উল্টো করছে সমাজের অসাধু ব্যবসায়ীরা। তারা গাছ না লাগিয়ে উল্টো সিলেটের সব এলাকার ছোট-বড় গাছ কেটে কাঠ বানিয়ে ফার্নিচার তৈরি করে বাজারে বিক্রি করছে। ফলে পরিবেশ আরও বেশি দূষিত হচ্ছে।
সমাজের বিত্তশালী নেতা, অসাধু ব্যাবসায়ী রাজনীতিবিদদের কারণেই সিলেটের এ অবস্থা।আর এমন অবস্থা চলতে থাকলে একসময় সিলেটের অস্থিত্ব থাকবে না।তাই বায়ূ দুষণ রোধে আমাদের সোচ্চার হতে হবে এসব বিত্তশালী নেতাদের বিরুদ্ধে।
সরকারের কাছে আকুল আবেদন জানাই-তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে আমাদের মুক্ত করা। বায়ূ দুষণ রোধে প্রভাবশালী নেতাদেরকে এসব অবৈধ শিল্প কারখানা,ইট ভাটা তুলে ফেলতে হবে। বায়ূ দুষণ রোধ করার মাধ্যমে নিশ্চিত করা সম্ভব সিলেটবাসীর সুস্থ-সবল ও সুন্দর পরিবেশ।
-লেখক-পরিবেশকর্মী
Sharing is caring!