প্রজন্ম ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হঠাৎ পরিবর্তনশীল এবং অস্থির নেতৃত্ব বিশ্বব্যাপী ক্লান্তি তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তার নীতির ধারাবাহিকতা না থাকায় মিত্র ও প্রতিপক্ষ উভয়ের মধ্যেই অনিশ্চয়তা বাড়ছে।
ট্রাম্পের আচরণে, বিশেষ করে কূটনৈতিক সিদ্ধান্তগুলোতে ধারাবাহিকতার অভাব এবং আকস্মিক পরিবর্তন বিশ্ব নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।
ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার পর থেকে সাম্প্রতিক সময়ে সংঘঠিত বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে সংবাদমাধ্যম সিএনএন এক বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়েছে, ইউক্রেন যুদ্ধ, ন্যাটোতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা এবং রাশিয়ার সঙ্গে তার সম্পর্কের অপ্রত্যাশিত মোড় বিশ্ব রাজনীতিতে অস্থিরতা বাড়াচ্ছে। এছাড়া বাণিজ্যযুদ্ধের সূত্রপাত ঘটানোর পাশাপাশি গাজা ও ইউক্রেনের অস্থিরতা নিয়ে ট্রাম্পের বিতর্কিত অবস্থান বেশ কিছু জটিলতা সৃষ্টি করেছে।
সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশ কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর চড়া শুক্ল আরোপের মাধ্যমে বিশ্ববাজারে চরম অস্থিরতা সৃষ্টি করেছেন ট্রাম্প। শুরুতে এই দুই দেশের অটোমোবাইল পণ্যে তিনি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলেন। তবে বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠানের চাপাচাপিতে পরের দিনই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হন তিনি। এতে বিশেষ কিছু প্রতিষ্ঠানের শেয়ারে ঊর্ধ্বগতি দেখা গেলেও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রে ‘অরাজকতার শাসন’ আবার ফিরে এসেছে। কারণ, ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসার পর থেকে একের পর এক অস্থির এবং আকস্মিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।
গত সপ্তাহে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ওভাল অফিসে যান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে খনিজ চুক্তি স্বাক্ষর করতে। আমেরিকার জন্য এই চুক্তিকে একটি ‘বড় জয়’ হিসেবে দেখেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ট্রাম্প ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার পর জেলেনস্কি হোয়াইট হাউস থেকে বেরিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের এই ভাঙা সম্পর্ক মেরামতে প্রাণান্ত চেষ্টা করে যাচ্ছেন ইউরোপীয় নেতারা।
এদিকে, ট্রাম্পের নিয়োগ করা ধনকুবের ইলন মাস্ক তার অদৃশ্য করাত দিয়ে মার্কিন আমলাতন্ত্রকে কেটেই চলেছেন। নির্বিচারে কর্মচারী ছাঁটাই তো করছেনই, পাশাপাশি ধ্বংস করছেন সরকারি সংস্থাগুলোকে। ফলে সরকারি অর্থের ওপর নির্ভরশীল নাগরিক ও শিল্পগুলো ব্যাপক অনিশ্চয়তায় ভুগছে। বিশেষ করে, অর্থনীতি যখন অস্থিতিশীল, তখন এমন ধাক্কা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ।
ট্রাম্পের একাধিক শক্তিশালী পদক্ষেপ প্রথম দিকে জো বাইডেনের শেষ মাসগুলোর নিষ্ক্রিয়তা দূর করে প্রশাসনে নতুন গতির সঞ্চার করেছিল। কিন্তু ছয় সপ্তাহ পর, যখন ট্রাম্প স্নায়ুযুদ্ধ-পরবর্তী জাতীয় নিরাপত্তা, বৈশ্বিক মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা এবং ফেডারেল ব্যবস্থা ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন, তখন বোঝা যাচ্ছে প্রকৃতপক্ষে এ ক্ষেত্রে কোনো পরিকল্পনাই নেই ট্রাম্পের। অথচ, একসময় এই ব্যবস্থাগুলোই আমেরিকাকে সুপারপাওয়ার বানিয়েছিল।
ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠা, ১৯ শতাব্দীর শুল্কনীতি দিয়ে পুরোনো শিল্প পুনরুজ্জীবিত করা এবং সরকার কাটছাঁটের প্রচেষ্টা ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের সময়ের মতোই উদ্ভট ও অপরিকল্পিত। এই অবস্থায় বিশ্ব আবারও ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি প্রচার করা প্রেসিডেন্টের খেয়ালখুশির কারণে অস্থির হয়ে পড়ছে।
আমেরিকার বাণিজ্যনীতিকে ‘মনস্তাত্ত্বিক নাটক’ বলে আখ্যা দিয়ে কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি গতকাল বুধবার (৫ মার্চ) বলেছেন, মাসের ৩০ দিনই যুক্তরাষ্ট্রের এসব নাটক সহ্য করতে পারবে না তার দেশ। হোয়াইট হাউস থেকে এখন অনেক অনিশ্চয়তা ও বিশৃঙ্খলা বেরিয়ে আসছে।
ট্রাম্প আসলে কী করতে চান, তা যুক্তরাষ্ট্রের মিত্ররাই বুঝে উঠতে পারে না। গতকাল বুধবারও ট্রাম্প অভিযোগ করেছেন, কানাডা ফেন্টানিল পাচার বন্ধ করতে যথেষ্ট উদ্যোগ নেয়নি। অথচ, পরিসংখ্যানে দেখা যায়, কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে এই ড্রাগের পরিমাণ খুবই নগণ্য।
অন্যদিকে, হোয়াইট হাউসকে প্রায়ই অভিযোগ করতে দেখা যায়, মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে অবাধে অবৈধ অভিবাসীর ঢল নামে। বাস্তবে এই সংখ্যাও কম।
ট্রাম্প চান, কানাডার ভারী শিল্প উৎপাদন কানাডা ছেড়ে তার দেশে চলে আসুক। বিপরীতে অটোয়ায় কর্মকর্তারা মনে করেন, তিনি কানাডাকে দুর্বল করে দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
ট্রাম্প তার হুমকিভিত্তিক বৈদেশিক নীতির মাধ্যমে কিছু সাফল্য অর্জন করেছেন, যদিও তা অনেক ক্ষেত্রেই বিতর্কিত। উদাহরণস্বরূপ, হংকংভিত্তিক একটি চীনা কোম্পানি এত দিন পানামা খালের দুই প্রান্তের দুটি বন্দরের মালিকানায় ছিল। এ নিয়ে তার ক্রোধের সীমা ছিল না। তার ক্রোধের কারণে আমেরিকার বিনিয়োগ কোম্পানি ব্ল্যাকরকের কাছে সেগুলো বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছে চীনা কোম্পানিটি।
ট্রাম্প মিথ্যা দাবি করেছিলেন যে, এই বন্দরের মালিকানা চীনকে পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ দেওয়ার সুযোগ তৈরি করে। যদিও মালিকানা পরিবর্তনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অবস্থান কিছুটা উন্নত হতে পারে।
এদিকে, ৮০ বছরের পুরোনো সামরিক জোট-ন্যাটোকেও দুর্বল করার পায়তারা করছেন ট্রাম্প। কিন্তু তার এই উদ্যোগ ন্যাটো মিত্রদের মধ্যে এক অভূতপূর্ব অস্ত্রাগার পুনর্গঠন প্রোগ্রাম কর্মসূচি শুরু করে দিয়েছে। অথচ, অন্যান্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুগের পর যুগ ধরে চেয়েও এটি পারেননি। তবে প্রায়শই মনে হয়, ট্রাম্প দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার চেয়ে ব্যক্তিগত শক্তি প্রয়োগে বেশি আগ্রহী। যদিও ট্রাম্পের নীতির ফলস্বরূপ এই উদ্যোগটি অনেকেই ইতিবাচকভাবে দেখছেন, তবুও বিষয়তি ব্যক্তিগত শক্তির প্রতি তার আগ্রহের প্রতিফলন হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাণিজ্য দূত মাইকেল ফ্রোমান সিএনএনকে বলেন, শুল্ক আরোপের খরচ প্রায়শই প্রাপ্ত সুবিধাকে ছাড়িয়ে যায়, তবে এটি অন্য দেশগুলোকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসার একটি হাতিয়ার হতে পারে। আমেরিকার সঙ্গে বিস্তৃত সীমান্ত সমস্যা আছে এমন দেশ মেক্সিকোর ক্ষেত্রে এটি সত্য।
ফ্রোমান বলেন, আপনি তাদের কী করতে চান জানতে হবে, তাহলেই এই লিভারেজ কার্যকর হবে।
ট্রাম্পইজমের সারাংশ
ট্রাম্পের রাজনৈতিক দর্শন বা ‘ট্রাম্পিজম’ যেকোনো ধরনের দীর্ঘমেয়াদী কৌশল থেকে অনেকটা ভিন্ন। এর মূল প্রতিপাদ্য হলো ব্যক্তিগত ক্ষমতা, অস্থিরতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর হুমকির ভিত্তিতে নীতি নির্ধারণ। ‘স্টান্ট রাজনীতিতে’ আসক্ত এই প্রেসিডেন্টের নাটকীয়তা তার রাজনৈতিক আবেদনের মূল চাবিকাঠি।
‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’— ক্যাম্পেইনের সমর্থক, ডেমোক্রেটিক পার্টি, গণমাধ্যম ও বিদেশি সরকারগুলোকে খেপিয়ে তোলাই ট্রাম্পের প্রতিভা। জনতুষ্টিবাদী জাতীয়তাবাদী ডানপন্থীদের জন্য ওয়াশিংটনে অরাজকতা সৃষ্টি করা এবং শাসনব্যবস্থা সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো ধ্বংস করা প্রশাসনিক পদ্ধতিতে পরিচালিত একটি রাষ্ট্রকে ভেঙে ফেলার উপায়।
ট্রাম্পের এই শাসন পদ্ধতি তার ম্যানহাটনের আকাশচুম্বী ট্রাম্প টাওারের অফিসে তৈরি হয়েছিল। সেখানে তিনি ব্যবসায়িক দৃষ্টিভঙ্গি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা বিকাশ করেন, যা পরবর্তীতে তার রাজনৈতিক নেতৃত্বে প্রভাব ফেলে। যদিও ট্রাম্পের শাসন, যা মূলত অপ্রত্যাশিত এবং ঝুঁকির ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল, তা দেশের শাসন এবং বৈশ্বিক রাজনীতির ক্ষেত্রে এক বড় দায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। রিয়েল এস্টেটের জগতে অপ্রত্যাশিত একটি শক্তি হিসেবে কাজ করতে পারে, কিন্তু একটি দেশের নেতৃত্বে এটি একটি বিপদ।
ট্রাম্পের এই কৌশলকে ‘ক্লান্তিকর’ বলে আখ্যা দিয়েছেন কানাডার অর্থ মন্ত্রণালয়ের সাবেক কর্মকর্তা জুলিয়ান ভিকান কারাগুয়েসিয়ান। তিনি ট্রাম্পের বিধ্বংসী শুল্ক আক্রমণকে ‘প্রায় অবাস্তব’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, এই বিষয়ে কার্য পরিচালনার পদ্ধতি সম্ভবত অনিশ্চয়তা। এটি শুল্ক নয়, বা অন্য কিছু নয় বরং ইচ্ছাকৃতভাবে বিশৃঙ্খলা ও অনিশ্চয়তার অনুভূতি তৈরি করা।
অটো শুল্কনীতির সিদ্ধান্ত পরিবর্তন
গতকাল কানাডা ও মেক্সিকোর ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের একদিন পর অটোমোবাইল শুল্ক এক মাসের জন্য স্থগিত করেছেন ট্রাম্প। এই বিষয়টির মাধ্যমে বোঝা যাচ্ছে, ট্রাম্প কখনও কখনও তার নিজের আক্রমণাত্মক নীতি নিয়ে দ্বিতীয়বার চিন্তা করেন। তবে খুব সম্ভবত শেয়ার বাজার তাকে এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে। তার শুল্ক স্থগিতের পর ডাউ জোনস শেয়ার বাজার ব্যাপক অবনমনের পর প্রায় ৫০০ পয়েন্ট উঠে এসেছে।
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্প ‘বিগ থ্রি’ অটো নির্মাতার সিইও’র সঙ্গে আলোচনার পর তার সিদ্ধান্ত বদলেছেন। আর তার প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, তিনি অতিরিক্ত ছাড়ের বিষয়ে শুনতে তিনি উন্মুখ।
ট্রাম্পের শুল্ক নীতি এবং বড় কোম্পানির সিইওদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদানের ধারণা একটি ন্যায্য অর্থনীতির বিপরীত। এই ধারণা অনুযায়ী, ক্ষমতাশীল ব্যক্তিরা তাদের প্রভাব ব্যবহার করে এমন সুবিধা পায়, যা সাধারণ আমেরিকানদের জন্য উপলব্ধ নয়। ট্রাম্প তার শাসনকালে স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থায় সাধারণত দুর্নীতির সুযোগ তৈরি করে এমন নিয়ম-ভিত্তিক ব্যবস্থার প্রতি খুব কম শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন।
ট্রাম্পের পদ্ধতির অর্থ হতে পারে, তিনি শুল্ক আরোপের চেয়ে হুমকি দিতে বেশি পছন্দ করেন। তবে, নিয়মিত শুল্কের হুমকি দিয়ে এবং সেগুলো বাস্তবায়িত হবে কি-না বা কখন হবে- তা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করে প্রেসিডেন্ট ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বিশাল ঝুঁকি সৃষ্টি করছেন। এসব প্রতিষ্ঠানকে তাদের খরচ ও সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, নতুবা শুধু ভোক্তা নয়, যুক্তরাষ্ট্রের অস্থিতিশীল অর্থনীতিও আরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
বাইডেনের জাতীয় অর্থনৈতিক কাউন্সিলের সাবেক উপ-পরিচালক ভারত রামামূর্তি সাংবাদিকদের বলেছেন, প্রশাসনের পদক্ষেপের প্রতি অনিশ্চয়তার কারণে শুল্কের সম্ভাবনাই অর্থনীতির ওপর বিরাট চাপ সৃষ্টি করছে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মিত্রদের ওপর শুল্ক আরোপের সম্ভাবনা বিনিয়োগ স্থগিত এবং আগাম মূল্য বৃদ্ধি ঘটাচ্ছে, যা ছোট ব্যবসায়ীদের ওপর বোঝা ফেলবে এবং শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
ট্রাম্পেনীতি ও বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা
মিত্রদের ট্রাম্পের নিরন্তর বুলিং এবং একই সময়ে ইউক্রেনে তার ঐতিহ্যবাহী প্রতিপক্ষ রাশিয়াকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য সবকিছু করা— দীর্ঘমেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তি ক্ষয় করতে পারে। ব্রেকআউট ক্যাপিটালের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান বিনিয়োগ কর্মকর্তা রুচিরা শর্মা বলেন, এ সপ্তাহে আমরা দেখেছি, খুব তীব্রভাবে ডলারমূল্যের পতন হচ্ছে। এটি ইঙ্গিত দেয়, বিশ্বের বাকি অংশ তাদের কাজ একত্র করছে…এবং আমি মনে করি, বিনিয়োগকারীরা লক্ষ্য করছেন যে, আমেরিকার এই অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগের জন্য অন্য দেশগুলোই উপযুক্ত।
এখন, আমেরিকার বিপদ হলো— বিশ্ববাজারে আমেরিকার আধিপত্যের জন্য ট্রাম্পের আরও চার বছরের কর্মকাণ্ড বিপদ সৃষ্টি করতে পারে। মেক্সিকো এবং কানাডা, যাদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য সহজ, তারা এখন চীনের সঙ্গে বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্প্রসারণের সুবিধা দেখতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়নও ট্রাম্পের শুল্কের কারণে নিজেদের অবস্থান পর্যালোচনা করতে পারে।
পশ্চিমা মিত্ররা দীর্ঘ সময় ধরে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করেছে, তাই তারা এটি ব্যর্থ হতে দেখতে চায় না। তবে, তাদেরও নিজস্ব জাতীয় স্বার্থ রয়েছে। শক্তিশালী প্রতিবেশী কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বাণিজ্য যুদ্ধে জয়লাভ করতে পারবে না, কিন্তু ট্রাম্পের হুমকি ও চাপের মুখে দেশটিও ধৈর্য হারাতে শুরু করেছে।
কানাডার বৃহত্তম প্রাদেশিক অর্থনৈতিক অঞ্চল অন্টারিওর প্রধান ডগ ফোর্ড বলেছেন, একমাত্র পথ হলো ট্রাম্পের সব শুল্ক বিলুপ্ত করা, যেন শিল্পভিত্তিক শুল্ক শিথিল করার পরিবর্তে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি না হয়। তিনি সিএনএনকে বলেন, এটি আমাদের আবার অনিশ্চয়তায় ফেলে দেয়। আজকের এই সমস্যা সৃষ্টি করার একমাত্র ব্যক্তি, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
Sharing is caring!