প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

মানবিক করিডোরের জন্য যেসব শর্ত দিয়েছে সরকার

editor
প্রকাশিত মে ১, ২০২৫, ০৩:৩৭ অপরাহ্ণ
মানবিক করিডোরের জন্য যেসব শর্ত দিয়েছে সরকার

Manual3 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যটি তীব্র দুর্ভিক্ষের আসন্ন হুমকির মুখোমুখি। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে একটি ‘মানবিক করিডোর’ দিয়ে রাখাইনে ত্রাণ সহায়তা পাঠানোর জাতিসংঘের পরিকল্পনায় সম্মতি জানিয়েছে ঢাকা। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু শর্ত দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ শর্তগুলো মানা হলে বাংলাদেশের মধ্য দিয়ে মানবিক করিডোর ব্যবহার করতে দেবে সরকার।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘ত্রাণ পাঠানোর এবং বিতরণের জন্য রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ প্রয়োজন। সীমান্তের ওপারে সহায়ক পরিবেশ তৈরি হলে মানবিক করিডোর দিতে রাজি আছে বাংলাদেশ।’

 

Manual6 Ad Code

রাখাইন পরিস্থিতি

Manual3 Ad Code

মিয়ানমার জান্তা আরাকান আর্মির সঙ্গে রাখাইনে যুদ্ধ করছে। ফেব্রুয়ারিতে জাতিসংঘ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গোটা মিয়ানমারের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে রাখাইন রাজ্যে।

সংঘাতে জড়িত সব পক্ষের বিরুদ্ধে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, লাখ লাখ বেসামরিক মানুষ— রোহিঙ্গা, রাখাইন এবং অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু বাস্তুচ্যুত হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে বিবদমান পক্ষের কারণে বেশিরভাগই মানবিক সহায়তা থেকে সম্পূর্ণরূপে বিচ্ছিন্ন। জাতিসংঘ আসন্ন দুর্ভিক্ষের বিষয়ে সতর্ক করে বলেছে, সেখানে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ অনাহারে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

 

শর্তযুক্ত মানবিক করিডোর

Manual2 Ad Code

রাখাইনে ত্রাণ পাঠাতে মানবিক করিডোরের জন্য কয়েকটি শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ, বৈষম্যহীন এবং শর্তহীনভাবে সবাইকে ত্রাণ বিতরণের ওপরে জোর দিয়েছে বাংলাদেশ।

সহায়ক পরিবেশ: ত্রাণ পরিবহন এবং বিতরণের জন্য রাখাইনে সহায়ক পরিবেশ তৈরি না হলে ত্রাণ সরবরাহ ব্যাহত হতে পারে। এজন্য যুদ্ধ বিরতি বা এমন একটি অ্যারেঞ্জমেন্ট প্রয়োজন, যেখানে বাংলাদেশ থেকে জাতিসংঘের মাধ্যমে ত্রাণ পরিবহন ও বিতরণ ব্যবস্থায় কোনও ধরনের বিরূপ প্রভাব না ফেলে।

Manual6 Ad Code

বৈষম্যহীন ত্রাণ বিতরণ: রাখাইনে আরাকানি, রোহিঙ্গা ও অন্যান্য জাতিগত সংখ্যালঘু রয়েছে। সবাইকে যেন ত্রাণ বিতরণ করা হয়। ত্রাণ বিতরণে যেন কোনও ধরনের বৈষম্য না হয়– এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অন্যভাবে বলা যায়, আরাকানিরা বেশি শক্তিশালী এবং সে কারণে অন্যরা যাতে বঞ্চিত না হয়।

শর্তহীন ত্রাণ বিতরণ: ত্রাণ বিতরণের সময়ে কোনও ধরনের শর্ত আরোপ করা যাবে না। অর্থাৎ কোনও ধরনের কাজ করলে বা না করলে ত্রাণ বিতরণ করা হবে, বা অন্য কোনও ধরনের শর্ত আরোপ করা যাবে না।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘রাখাইনে খাদ্যের অভাব হলে সেখানকার একটি জনগোষ্ঠী বাংলাদেশে চলে আসার আশঙ্কা থাকে। এ বিষয়টি বাংলাদেশ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিয়েছে। একইসঙ্গে ত্রাণ সরবরাহ টেকসই ও কার্যকর করার জন্য সহায়ক পরিবেশ ও বৈষম্যহীন ত্রাণ বিতরণ জরুরি।’

প্রসঙ্গত, গত নভেম্বরে প্রকাশিত জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, চলতি বছরের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদন জনসংখ্যার চাহিদার মাত্র ২০ শতাংশ পূরণ করতে সক্ষম হবে। বীজ, সারের অভাব, প্রতিকূল আবহাওয়া এবং কৃষিকাজ করতে অক্ষম অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ধান উৎপাদন হ্রাস পাচ্ছে। রাখাইনে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২০ লাখেরও বেশি মানুষ অনাহারের ঝুঁকিতে রয়েছে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code