প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

এ বছর বন্যার আশঙ্কা কতটা?

editor
প্রকাশিত মে ২১, ২০২৫, ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ
এ বছর বন্যার আশঙ্কা কতটা?

Manual4 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

Manual4 Ad Code

কয়েকদিন ধরে ভারতের মেঘালয় ও আসামে টানা ভারী বর্ষণ হচ্ছে। ফলে উজান থেকে পানি বাংলাদেশে ঢুকছে। পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরেও হচ্ছে মুষলধারে বৃষ্টি। ফলে দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে। আর এতে শেরপুর, নেত্রকোনা, সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ ওই অঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তবে সার্বিক পরিস্থিতিতে আপাতত বন্যার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের ধারণা, আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর তথা ২২ মে তারিখের পর থেকে চলমান বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে যাবে। ফলে নদ-নদীর পানিও আস্তে আস্তে নেমে যাবে।

Manual3 Ad Code

 

বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের তথ্য বলছে, দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি এরই মধ্যে কমতে শুরু করেছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকলেও বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা নেই।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, ‘উজানের ঢল ও বৃষ্টিপাতের কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বাড়লেও পানির প্রবাহ এখন কোথাও বিপৎসীমার উপরে নেই। আমাদের তথ্যানুযায়ী সব নদ-নদীর পানিই বিপদসীমার নিচে অবস্থান করছে। আজ (মঙ্গলবার) তিনটার পর্যবেক্ষণে আগের তুলনায় পানি কমেছে। সন্ধ্য ৬টার পর্যবেক্ষণেও পানি কমার তথ্য পেয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘চলমান বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস ২১ ও ২২ (মে) তারিখ পর্যন্ত আছে। তবে বর্তমান পরিস্থিতি যেমন আছে তাতে বন্যার আশঙ্কা নেই। আর ২২ তারিখের পর থেকে নদী-নদীর পানি কমে যাওয়ার আশা করছি।’
ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস কী বলছে?

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যও বলছে, বুধবার ও বৃহস্পতিবার (২১ ও ২২ মে) ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। তবে পরবর্তী কয়েক দিনের ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাসে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা কমে আসবে বলেও জানানো হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ ড. মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক মঙ্গলবার (২০ মে) ১২০ ঘণ্টার পূর্বাভাসে জানিয়েছেন, আগামী ২৩ ও ২৪ মে ভারী বৃষ্টির সম্ভবনা নেই।

বেসরকারি আবহাওয়া-বিষয়ক ওয়েবসাইট আবহাওয়া ডট কমের প্রধান আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ময়মনসিংহ বিভাগের শেরপুর ও নেত্রকোনা জেলা এবং সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ ও সিলেট জেলার বিভিন্ন নদীতে পাহাড়ি ঢল শুরুর আশঙ্কা রয়েছে।

কারণ ভারতের মেঘালয় ও আসামে টানা ভারী বর্ষণ এবং শেরপুরে গত ৪ দিনের থেমে থেমে বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার নদ-নদীর পানি দ্রুত বাড়ছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

 

Manual2 Ad Code

তবু ময়মনিসংহ ও সিলেটে বন্যার আশঙ্কা

মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, ‘আজ মঙ্গলবার থেকে আগামীকাল বুধবার দুপুর ১২টার মধ্যে রংপুর, ময়মনিসংহ ও সিলেট বিভাগের জেলাগুলোর ওপর দিয়ে এক নাগাড়ে মাঝারি থেকে ভারীমানের বৃষ্টিপাত অতিক্রমের প্রবল আশঙ্কা করা যাচ্ছে। ফলে ওই সব জেলায় বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।’

 

শেরপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, মঙ্গলবার সকাল ১০টায় চেল্লাখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতরাত ১০টা পর্যন্ত ছিল ৩৯ সেন্টিমিটারের উপরে।

যদিও বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান বলেন, ‘দুপুর তিনটা ও সন্ধ্যা ছয়টার পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী কোথাও বিপৎসীমার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে না। বরং নদ-নদীর পানি কমছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দশ দিন পর্যন্ত বন্যা পূর্বাভাস দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপাত বন্যার পূর্বাভাস নেই।’

 

এ বছর বন্যা পরিস্থিতি কেমন হবে?

গত বছর দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় কয়েক দফায় বন্যা হয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি বন্যা হয়েছে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে। ফেনী, নোয়াখালী ও কুমিল্লাসহ ওই অঞ্চলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল।

সে বছরের ২১ আগস্ট ভারী বর্ষণ এবং ভারত থেকে নেমে আসা ঢলে ওই বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। ফেনী ও নোয়াখালীসহ দেশের এগারো জেলার ৭৩টি উপজেলা প্লাবিত হয়েছিল। ফেনীসহ উত্তর-পূর্ব, দক্ষিণ-পূর্ব ও পূর্বাঞ্চলের ৫ জেলার নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়।

 

Manual5 Ad Code

ফলে এ বছর বন্যা পরিস্থিতি কেমন হবে তা নিয়ে অনেকেই চিন্তিত। তবে এবার তেমন বন্যার আশঙ্কা করছে না বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

জানতে চাইলে সংস্থাটির নির্বাহী প্রকৌশলী উদয় রায়হান বলেন, ‘মূলত জুলাই থেকে বর্ষা মৌসুম ধরি। তার আগে আমরা একটা দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস দেবো। তবে আমরা আশা করছি, গত বছরের মতো এবার বন্যা হবে না।’

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code