প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

রাজস্ব খাতে পদ্ধতিগত সংস্কারে গুরুত্ব

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২, ২০২৪, ০২:৫৯ অপরাহ্ণ
রাজস্ব খাতে পদ্ধতিগত সংস্কারে গুরুত্ব

Manual7 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

রাজস্ব খাতে সংস্কারের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত ‘কমিটি’ আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে কমিটির জন্য আলাদা একটি কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গত ২৯ অক্টোবর কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম দিনের বৈঠকে কমিটি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) নীতিনির্ধারক পর্যায়ের সব সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠক সূত্র জানায়, রাজস্ব আহরণ কার্যক্রমে পদ্ধতিগত সংস্কারে গুরুত্বারোপ করা হবে।

Manual5 Ad Code

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সংস্কারের বিষয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের লিখিত মতামত চাওয়া হয়েছে। কমিটি পর্যায়ক্রমে দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীসহ অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের মতামত চাইবে। সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জামা দেবে কমিটি। প্রতিবেদনে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি সুপারিশ তুলে ধরা হবে।

ড. মোহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর আর্থিকসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। তারই অংশ হিসেবে এনবিআরের সংস্কারে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। গত ৯ অক্টোবর অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে এই কমিটি গঠনের কথা জানানো হয়।

Manual6 Ad Code

 

পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট এই পরামর্শক কমিটির সবাই এনবিআরের সাবেক কর্মকর্তা। সদস্যদের মধ্যে দুজন এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান। তারা হলেন মো. আবদুল মজিদ ও নাসিরউদ্দিন আহমেদ। কমিটির বাকি সদস্যরা এনবিআরের সাবেক সদস্য। তারা হলেন মো. দেলোয়ার হোসেন (কর), ফরিদ উদ্দিন (শুল্ক) ও আমিনুর রহমান (কর)।

এই পরামর্শক কমিটি এনবিআরের সংস্কারে সরকারকে পরামর্শ দেবে। যেমন- রাজস্ব নীতি, রাজস্ব প্রশাসন, এনবিআরের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতার মূল্যায়ন ও আধুনিকায়ন, শুদ্ধাচার ও সুশাসনের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও নীতিমালা প্রণয়ন, নাগরিক যোগাযোগ ও অংশীজন সম্পৃক্ততার কার্যক্রম। এ ছাড়া রাজস্ব সংস্কারসংশ্লিষ্ট যেকোনো নীতিগত পরামর্শ দেবে এই কমিটি।

Manual7 Ad Code

রাজস্ব আয় কীভাবে বাড়ানো যায়, তার কৌশল নির্ধারণ করবে কমিটি। সংস্কারের ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করা হবে। কোন কোন খাতে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে এগুলো তুলে ধরা হবে। প্রশাসনিক সংস্কারে জোর দেওয়া হবে। গুরুত্ব পাবে অটোমেশন। আয়কর ও মূল্য সংযোজন কর বিভাগের মধ্যে সম্পর্কযুক্ত বা ইন্টিগ্রেশনে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে পদ্ধতিগত সংস্কারে। কর আদায় প্রক্রিয়া সহজ করা হবে। এমনভাবে সিস্টেম গড়ে তোলা হবে, যাতে করদাতাদের কর অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন না পড়ে।

এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে রাজস্ব সংস্কারে গঠিত কমিটির অন্যতম সদস্য বর্তমানে সিডিএফের সভাপতি ড. মোহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, ‘আমরা পদ্ধতিগত সংস্কারে গুরুত্ব দেওয়ার সুপারিশ করব। করদাতা এবং করগ্রহীতার মধ্যে আস্থার পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।’ তিনি বলেন, ‘রাজস্ব সংস্কার একটি জটিল প্রক্রিয়া। এ কাজগুলো করতে সময় লাগবে। আমরা আলোচনা শুরু করেছি। এটি অব্যাহত থাকবে। কবে নাগাদ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে- এ প্রশ্নের উত্তরে বলেন, দিনক্ষণ বলতে পারব না। তবে চেষ্টা থাকবে যথাসম্ভব দ্রুত কাজ শেষ করা।’

সূত্র জানায়, এনবিআরের অভ্যন্তরে নীতিনির্ধারক পর্যায়ের কর্মকর্তারা সংস্কার নিয়ে কী ভাবছেন সে বিষয়টি তুলে ধরা হবে প্রতিবেদনে। এ জন্য প্রত্যেক সদস্যের কাছ থেকে লিখিত মতামত চেয়েছে কমিটি। অংশীজনের মধ্যে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ প্রভাবশালী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবে সংস্কার কমিটি। এ ছাড়া দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদদের সঙ্গেও আলোচনা করা হবে।

কমিটির সদস্য মো. ফরিদউদ্দিন বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করব। তাদের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিবেদন তৈরি করা হবে। প্রতিবেদেন স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদে সুপারিশ করা হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য থাকবে কীভাবে রাজস্ব আহরণ বাড়ানো যায় তার কৌশল নির্ধারণ করা। এ জন্য জাতীয় ঐকমত্যের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।

Manual5 Ad Code

মোট রাজস্বের ৮৫ শতাংশ জোগান দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। বাংলাদেশের অর্থনীতির যে আকার তার সঙ্গে রাজস্ব আয় সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত সবচেয়ে কম। এই অনুপাত বাড়াতে বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ অনেক বছর ধর বাংলাদেশের রাজস্ব খাতের আমূল সংস্কারের পরামর্শ দিয়ে আসছে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code