প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২০শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৫ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৯শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

নির্বাচনী দায়িত্বে পুলিশের ৭ প্রস্তুতি

editor
প্রকাশিত আগস্ট ১৮, ২০২৫, ০৭:৩৬ পূর্বাহ্ণ
নির্বাচনী দায়িত্বে পুলিশের ৭ প্রস্তুতি

Manual4 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

আগামী নির্বাচন সামনে রেখে পুলিশের জন্য সাত ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে, পুলিশ যাতে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে। প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হচ্ছে, নির্বাচনে সারা দেশে মোট দেড় লাখ পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। এসব পুলিশ সদস্যকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কীভাবে তারা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে, সে বিষয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হবে নির্বাচনের আগেই। এ ছাড়া বডি-ওর্ন ক্যামেরার ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনীয় গাড়ি বা যানবাহনের ব্যবস্থা, নির্বাচনি সরঞ্জাম ( হ্যান্ডমাইক, অস্ত্র, যানবাহন, যোগাযোগের সরঞ্জাম এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম) কেনা এবং গুজব বা ভুয়া তথ্য প্রতিরোধে ‘ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার’ গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর বাইরে মনোবল ফিরিয়ে আনতে পুলিশ সদস্যদের কাউন্সেলিং করা হবে।

 

Manual1 Ad Code

জানতে চাইলে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেন, ‘নির্বাচনসংক্রান্ত বিষয়ে পুলিশের বিশেষ প্রশিক্ষণ শুরু হবে সেপ্টেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এবং শেষ হবে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে। প্রতিটি জেলায় এসপিদের সহায়তায় নির্বাচনি সরঞ্জাম কেনা হবে। আপাতত আমরা এখন বেশি ফোকাস করছি প্রশিক্ষণের ওপর।’

শেখ হাসিনার সরকার পতনের এক বছর পরও দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে। পুলিশ বাহিনী কি ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছে- এমন প্রশ্ন এখন সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সচেতন মহলের। এরই মধ্যে ছয় মাস পর অর্থাৎ আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। এই নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হচ্ছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা বা নির্বাচনি পরিবেশ বজায় রাখা।

Manual6 Ad Code

ফলে সেই বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের জন্য মোটাদাগে পুলিশের জন্য সাত ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণের খবর জানা গেছে।

Manual6 Ad Code

আইজিপি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য পুলিশকে প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা ও নিরপেক্ষতার বিষয়ে কঠোর থাকবে পুলিশ। একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এখন মূল চ্যালেঞ্জ।’

“মনোবল বাড়ানোর বিশেষ কোনো ‘টুলস’ নাই। পুলিশকে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। রাস্তা বন্ধ রেখে আন্দোলন করে বেকায়দায় ফেললে পুলিশের মনোবল কীভাবে বাড়বে? পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে” যোগ করেন আইজিপি বাহারুল আলম।

এ বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম শাখার উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ সদস্যদের প্রশিক্ষণের আওতায় ডিএমপির সব সদস্যকে পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্টে (পিওএম) নির্বাচন বিষয়ে প্রয়োজনীয় ট্রেনিং করানো হচ্ছে। প্রথমে প্রশিক্ষক তৈরির কাজ চলছে। এ ছাড়া নির্বাচন কমিশনের তালিকায় যেসব ভোটকেন্দ্র রয়েছে, সেখানে আমরা আমাদের নিরাপত্তা পরিকল্পনা করছি এবং নির্বাচনি তফসিল ঘোষণার পর এই কাজগুলো আরও ত্বরিত গতিতে চলবে।’

ডিসি তালেবুর রহমান বলেন, ‘ঢাকা মহানগরে কাজ করা পুলিশ সদস্যদের ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে পেশাদারত্বের সঙ্গে তাদের কাজ করতে হবে। এই নির্বাচন পুলিশের জন্য নিরপেক্ষতা প্রমাণের একটি সুযোগ। নির্বাচনে নিরপেক্ষভাবে কাজ করে পুলিশ আবারও মানুষের আস্থায় ফিরতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

নির্বাচনবিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষণ

আগামী সেপ্টেম্বর থেকে দেড় লাখ পুলিশ সদস্যকে নির্বাচনবিষয়ক বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। এরা ৬৪ জেলায় কাজ করবেন। এই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে ডিসেম্বর পর্যন্ত।

বডি-ওর্ন ক্যামেরা

নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করতে পুলিশের জন্য কমপক্ষে ৪০ হাজার বডি-ওর্ন ক্যামেরা কেনা হবে। এই ডিভাইসগুলো হাজার হাজার ঝুঁকিপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তা জোরদার করবে।

পুলিশের গাড়ি

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকালে পুলিশের কয়েক শ গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ সদর দপ্তর বলেছে, বর্তমানে থানার কার্যক্রম চালু হলেও যানবাহনের অভাবে যথাযথ নাগরিক সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পুলিশের এ যানবাহনের সংকট পূরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে ৪ শতাধিক গাড়ি কেনার প্রস্তুতি রয়েছে।

Manual7 Ad Code

নির্বাচনি সরঞ্জাম

হ্যান্ডমাইক থেকে শুরু করে অস্ত্র, যোগাযোগের সরঞ্জাম এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সরঞ্জাম কেনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে পুলিশ। এই জন্য প্রত্যেক জেলার এসপির সহায়তা নেওয়া হবে।

নিরাপত্তা পরিকল্পনা

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে নিরাপত্তা ও নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পুলিশ পেশাদারত্বের সঙ্গে কাজ করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এ জন্য নিরাপত্তা পরিকল্পনা ঢেলে সাজানো হচ্ছে। মানুষ যেন নিরাপদে ভোট দিতে পারেন, সেভাবে ভোটকেন্দ্রে পুলিশ নিরাপত্তা দেবে।

লুট হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার

গত বছরের ৫ আগস্ট থানা ফেলে পালিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশ সদস্যরা। এ সময় লুট হয়েছিল পুলিশের আগ্নেয়াস্ত্র। লুট হওয়া অস্ত্রের একটা অংশ উদ্ধার হলেও এখনো প্রায় দেড় হাজার আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করতে না পারলে নির্বাচনে এর প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাই। নির্বাচনের আগে এই ছয় মাসে এসব অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশি অভিযান অব্যহত থাকবে।

গুজব-ভুয়া তথ্য প্রতিরোধ

নির্বাচন ঘিরে গুজব ও ভুয়া তথ্য ছড়ানোর প্রবণতা বেড়ে যায়। গুজব ও ভুয়া তথ্য রোধে ‘ন্যাশনাল ইনফরমেশন সেন্টার’ গঠন করা হবে বলে জানা গেছে। এই সেন্টার খুব দ্রুত গুজব শনাক্ত ও রোধ করা ছাড়াও জনতার কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেবে। কেন্দ্রটি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ইতিবাচক ও তাৎক্ষণিক কর্মকাণ্ড প্রচারে সাহায্য করবে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code