প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৫ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৩০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৪শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

দিল্লিতে ভয়ঙ্কর হাসিনা

editor
প্রকাশিত নভেম্বর ২০, ২০২৪, ১১:০৫ পূর্বাহ্ণ
দিল্লিতে ভয়ঙ্কর হাসিনা

Manual3 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

 

যতই দিন যাচ্ছে ততই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছেন দিল্লিতে আশ্রয় নেয়া মাদার অব মাফিয়া শেখ হাসিনা। ভারতের আশ্রয়ে থেকে তিনি টেলিফোনে দলীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন এবং নিজেই সেগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ১৮ নভেম্বর শেখ হাসিনা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে থাকা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলার নির্দেশনা দিয়েছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ‘আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম’ নীতির কারণেই মূলত শেখ হাসিনা এমন ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছেন।

 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নেটিজেনরা বলছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কূটনৈতিক চ্যানেলে ‘শেখ হাসিনার দেশবিরোধী বক্তব্য’ বন্ধে কঠোর বার্তা দিল্লিকে না দেয়ায় হাসিনা একের পর এক বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তার লোকজনকে উসকানি দিয়েই যাচ্ছেন।

 

Manual1 Ad Code

শেখ হাসিনা দিল্লির দাদাদের আসকারায় ক্রমান্বয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠছেন। কদিন পরপরই হাসিনা দলের বিভিন্ন জনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলছেন এবং সেই অডিও কল রেকর্ড সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিচ্ছেন। ফোনে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টির নানা বিষয় নিয়ে কথা বলতে শোনা যায় তাকে। সেখানে ছুড়ে দিচ্ছেন নানা হুমকিও। এমনকি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকেও হুমকি দিচ্ছেন।

গত রোববার আবারো শেখ হাসিনার ‘কণ্ঠে’ নতুন একটি ফোনালাপ ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এই ফোনালাপে শেখ হাসিনা দলীয় কয়েকজন নেতাকর্মীকে দেশবিরোধী অবস্থান নেয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন।

অডিও থেকে জানা যায়, সুইডেন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দেশটিতে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন আওয়ামী লীগের নেতারা। অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা ফোনকলে নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং হুমকি-ধমকি ও বিভিন্ন পরামর্শ দেন। অনুষ্ঠান শেষে শেখ হাসনাকে উপস্থিত বাবু সুভাষ ঘোষ, লিংকন মোল্লা, খোকন মজুমদার, নঈম বাবু, মোহম্মদ শহীদ, মাহবুবুর রহমান, লিমন, কবির, সাব্বির প্রমুখ নেতার নাম ঘোষণা করতে শোনা যায়।

Manual1 Ad Code

 

Manual4 Ad Code

অডিওর শুরুতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের খুনি অ্যাখ্যা দিয়ে এ সময় নেতাকর্মীদের ফোনকল রেকর্ড করার কথা বলা হয়। অডিওতে আওয়ামী লীগের নেতাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, এই অবৈধ সরকারের (অন্তর্বর্তী সরকার) অত্যাচারে সারা দেশের মানুষ জর্জরিত। কৃষক-শ্রমিকরা বেকার হয়ে গেছেন। শ্রমিক আন্দোলন করেছেন, সঙ্গে সঙ্গে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে।

অডিওতে বলা হয়, এই অবৈধ সরকারের অত্যাচারে সারা দেশের মানুষ জর্জরিত। কৃষক-শ্রমিকরা বেকার হয়ে গেছেন। শ্রমিক আন্দোলন করেছেন, সাথে সাথে গুলি করে মেরে ফেলা হয়েছে। চাকরির বয়স নিয়ে আন্দোলন করতে যমুনার সামনে গেল, সাথে সাথে গুলি করল। সেখানে একজন মারা গেল এবং পিটিয়ে উঠিয়ে দিলো।

 

এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ৭ জুলাই থেকে এই ছাত্ররা যখন আন্দোলন করে ১৪ জুলাই পর্যন্ত। তারা সহিংস হওয়ার আগে গায়ে একটি টোকাও পড়েনি। আমি একজনও মারিনি। শিক্ষার্থীরা তাদের মতো তারা আসছে-বসছে, আমরা তো তাদের কিছুই বলিনি। পুলিশের কাছে কোনো মেটাল বুলেট ছিল না। নির্দেশ দিয়েছি কোনো গুলি করবা না। পুলিশ ব্যারিকেড উঠিয়ে তারা ইচ্ছে মতো আন্দোলন করেছে। শুরু থেকে তো অনেক কিছু করা যেত, আমরা তো সেসব করিনি। তিনি বলেন, এই কোটা তো আমিই বাতিল করে দিয়েছি। যেখানে কোনো কোটাই নাই, সেখানে আন্দোলনটা কিসের জন্য ছিল? তারপর আমাদের মন্ত্রীরা তাদের বসে, তাদের সব দাবি মানা হয়। দাবি মানার পরে আবার এক দফা। শেখ হাসিনাকে খুন করো, এই তো কথা? তাদের টার্গেট ছিল আমাকে হত্যা করা।

হাসিনা আরো বলেন, এখান আবার হত্যা মামলা দিয়ে বলে গণহত্যার বিচার হবে। গণহত্যার বিচার আমার না, বিচার হবে ইউনূসের। এই সমস্ত খুনের দায়-দায়িত্ব ইউনূসকে নিতে হবে। সে (ড. ইউনূস) যে হত্যার সাথে জড়িত, তার প্রমাণ তো পাওয়ায় যায়। কারণ জেলখানায় যত জঙ্গি আটক ছিল, তাদেরকে ইউনূস ছেড়ে দিয়েছে। তাদের সঙ্গে ইউনূসের একটা যোগসাজশ ছিল। বাংলাদেশটাকে সে একটা জঙ্গি দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চায়। এ সময় তিনি আরো বলেন, গণভবনে ইউনূস নিজেই প্রথম লুটপাট করেছে।

Manual4 Ad Code

ফ্যাসিস্ট হাসিনা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, শেয়ার মার্কেটের টাকা উধাও, ব্যাংকে টাকা নাই। ব্যাংকের টাকা উধাও। পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, ২০ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য আমি রেখে এসেছি, এক কোটি পরিবারের জন্যে টিসিবি কার্ড দিয়েছি। হাসিনা এ সময় দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, তোমরা যে যে দেশে রয়েছ সেখানে সে দেশের সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বাংলাদেশের অবস্থা তুলে ধরো। তিনি বলেন, দেশে চলমান অরাজকতা ও দুর্নীতির বিচার হতে বাধ্য হবে এবং সেই বিচার নিজেই করবেন। এসবের বিচার আমি করবই ইনশাআল্লাহ।

হাসিনার একের পর এক অডিও বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল নিয়ে নেটিজেনরা বিতর্ক করছেন। বেশির ভাগ নেটিজেন বলছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের দুর্বলতার কারণে হাসিনা এই ঔদ্ধত্য দেখাচ্ছেন। হাসিনাকে ধরিয়ে দিতে ইন্টারপোলে রেড অ্যালার্ট জারি এবং দুই দেশের বন্দি বিনিময় চুক্তির মাধ্যমে দিল্লি থেকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিলেই হাসিনার ঔদ্ধত্যের বেলুন চুপসে যাবে।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual6 Ad Code