প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

২১শে ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৬ই পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১লা রজব, ১৪৪৭ হিজরি

যে কারণে ট্রাভেল পাসেই ফিরতে হবে তারেক রহমানকে

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২০, ২০২৫, ০১:০২ অপরাহ্ণ
যে কারণে ট্রাভেল পাসেই ফিরতে হবে তারেক রহমানকে

Manual2 Ad Code

 

প্রজন্ম ডেস্ক:

আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। কীভাবে দেশে ফিরবেন সেটা নিয়ে চলছে নানান আলোচনা। পাসপোর্ট সংক্রান্ত জটিলতার কারণে বারবার সামনে আসছে ট্রাভেল পাসের বিষয়টি।

Manual5 Ad Code

এই ট্রাভেল পাস নিয়ে এত আলোচনার কারণ হলো রাজনৈতিক কারণে লন্ডনে নির্বাসিত তারেক রহমান মেয়াদ ফুরানোর পর আর বাংলাদেশের পাসপোর্ট পাননি। সরকার পতনের পর সুযোগ থাকলেও তিনি পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেননি। বর্তমান পরিস্থিতিতে এ কারণেই বাংলাদেশি হিসেবে তাকে দেশে ফিরতে হলে ট্রাভেল পাস নিয়েই আসতে হবে।

 

দেশে ফেরার দিন ঘনিয়ে এলেও তিনি লন্ডনের বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পাস চেয়ে আবেদন করেছেন কি না সে বিষয়টি শিরোনাম হচ্ছে বারবার। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী তারেক রহমান বাংলাদেশ সরকারের কাছে ট্রাভেল পাস চেয়ে আবেদন করেননি।

Manual1 Ad Code

এদিন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সাংবাদিকদের প্রশ্নে বলেন, ঢাকায় আসার জন্য যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ মিশনের কাছে গতকাল (বুধবার) রাত পর্যন্ত ট্রাভেল পাস চাননি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

 

সরকার আগেই জানিয়েছিল, তারেক রহমান চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ট্রাভেল পাস দেওয়া হবে। বাংলাদেশ হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা জানান, ট্রাভেল পাস ইস্যু করা একটি সিল ও স্বাক্ষরের ব্যাপার মাত্র। তারেক রহমানের আবেদনের সর্বোচ্চ এক ঘণ্টার মধ্যেও এটা দেওয়া সম্ভব।

দেশে ফেরার এত আলোচনার মধ্যেও বারবার প্রশ্ন উঠছে, তারেক রহমান এখনো কেন ট্রাভেল পাসের আবেদন করেননি। কেউ কেউ বলছেন, এমন হতে পারে তিনি ব্রিটিশ নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও কেউ কেউ তারেক রহমানের যুক্তরাজ্যের নাগরিকত্বের প্রমাণ হাজির করার চেষ্টা করছেন। যদিও এগুলোর যথাযথ প্রমাণ কেউ দিতে পারেননি।

 

সাবেক রাষ্ট্রদূত হুমায়ুন কবির সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশের কোনো নাগরিকের যদি পাসপোর্ট না থাকে কিংবা পাসপোর্ট হারিয়ে ফেললে অথবা কারও জন্য যদি পাসপোর্ট ইস্যুর জন্য পর্যাপ্ত সময় না থাকে তাহলে সংশ্লিষ্ট দেশে থাকা বাংলাদেশ হাইকমিশন বা দূতাবাস তাকে শুধু দেশে আসার জন্য ট্রাভেল পাস দেয়। এটি ওয়ান ওয়ে অর্থাৎ শুধু বাংলাদেশে আসার জন্য। দেশে আসা পর্যন্তই এ ট্রাভেল পাস ভ্যালিড থাকে।

২০০৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তথ্যপ্রমাণ অনুযায়ী, ২০১০ সালের ৩ জুন তারেক রহমানের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তখনও হাতে লেখা পাসপোর্টের যুগ ছিল। এরপর আওয়ামী লীগের আমলে তিনি বাংলাদেশ হাইকমিশনে এর মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করলে সেটা বাড়ানো হয়নি।

সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এরপরই তিনি যুক্তরাজ্যে অ্যাসাইলাম (রাজনীতিক আশ্রয়) আবেদন করেন। তারেক রহমানের পাসপোর্ট নিয়ে ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগ সরকার এক বিতর্ক তোলে। এর জেরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ওই বছরের এপ্রিলে বিবিসি বাংলাকে বলেছিলেন, ২০১২ সালে তারেক রহমান ব্রিটেনে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন এবং এক বছরের মধ্যেই সেটি গৃহীত হয়।

 

ব্রিটিশ ইমিগ্রেশন আইন অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি পাঁচ বছর স্বীকৃত শরণার্থী হিসেবে থাকার পরে স্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি পায়। স্থায়ীভাবে থাকার এক বছর পর লাইন ইন দ্যা ইউকে টেস্ট পাস করার পরে নাগরিকত্ব অর্জন করে। এর এক বছর তিনি পাসপোর্টের আবেদন করতে পারেন।

শুধু তারেক রহমান নন, খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট নিয়েও তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নানান ধরনের ঝামেলা তৈরি করেছিল। যদিও পরে তার পাসপোর্ট রিনিউ করা হয়। সবশেষ ২০২১ সালের মে মাসে খালেদা জিয়ার পাসপোর্ট রিনিউ করা হয়। ২০২৬ সালের মে মাস পর্যন্ত এর মেয়াদ আছে। তবে মেহেদী হাসান নামে যে কর্মকর্তা তার রিনিউ করা পাসপোর্টে স্বাক্ষর করেন, তাকে ওএসডি করা হয়।

নির্বাচনে লড়ার জন্য তারেক রহমানের মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বরের আগে ভোটার হওয়ার একটি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, নির্বাচনে অংশ নিতে তারেক রহমানকে প্রথমে ভোটার হতে হবে। মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ২৯ ডিসেম্বর হওয়ায় এ সময়ের মধ্যেই তাকে ভোটার হতে হবে। লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসের মাধ্যমেই ভোটার হতে পারবেন তারেক রহমান। এরপর সশরীরে বা প্রতিনিধির মাধ্যমে মনোনয়ন দাখিল করতে পারবেন। ফলে নির্বাচনের মনোনয়ন দাখিলের জন্য দেশে আসার বাধ্যবাধকতা নেই।

 

Manual5 Ad Code

এর আগে মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তারেক রহমান নিজেই দেশে ফেরার তারিখ নিশ্চিত করেন। বুধবার বিবিসি বাংলা জানায়, ২৫ ডিসেম্বর বেলা ১১টার পর তারেক রহমানকে বহনকারী উড়োজাহাজটি ঢাকায় অবতরণ করবে। লন্ডন থেকে সিলেট হয়ে তিনি ঢাকায় আসবেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার মেয়েকেও সঙ্গে নিয়ে আসবেন।

Manual1 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code