প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৪ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৯শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২৩শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

জাগো বাহে উচ্চকিত তিস্তাপাড়

editor
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২৫, ১২:১৭ অপরাহ্ণ
জাগো বাহে উচ্চকিত তিস্তাপাড়

Manual1 Ad Code

 

Manual5 Ad Code

প্রজন্ম ডেস্ক;

আন্তর্জাতিক তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা পাওয়া এবং এ নদী ঘিরে মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে চোখেমুখে ক্ষোভ আর আশা নিয়ে লাখো মানুষ এসেছিল তিস্তাপাড়ে। একদিকে নদী মৃত্যুর প্রহর গুনছে, অন্যদিকে এরই মধ্যে জেগে উঠেছে জনতার অদম্য সংহতি। তাদের প্রত্যাশা, প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঝুলিয়ে রাখা নয়, বরং বর্তমান সরকারের আমলেই তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। এমন দাবির কথাই ধ্বনিত হয়েছে লাখো মানুষের কণ্ঠে।

সোমবার দুপুর থেকে উত্তরাঞ্চলের পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে শুরু হয়েছে দুদিনব্যাপী তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নসহ পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের দাবিতে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচি। ৪৮ ঘণ্টার এ কর্মসূচি পালন করছে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি।

Manual5 Ad Code

 

কর্মসূচি ঘিরে তিস্তাপাড়ে যেন নতুন আশা জেগে উঠেছে। ফজরের নামাজের পর থেকে তিস্তা চর এলাকার পাশাপাশি দূর-দূরান্ত থেকে শত শত মানুষ একত্রিত হতে থাকে। দুপুর ১২টার মধ্যে লাখো মানুষের সমাবেশ।

Manual2 Ad Code

 

‘তিস্তা হামার সব শেষ করছে বাহে। গোলা ভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু ছিল। একে একে আটবার তিস্তার ভাঙনে বিলীন হয়েছে সব। এখন মানুষের (অন্যের) জমিতে থাকি। তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে হাজার হাজার হেক্টর জমি চাষাবাদ করতে পারব বাহে’Ñ এভাবেই বলছিলেন তিস্তাপাড়ের কৃষক জমসেদ মিয়া (৬৮)। আরেক কৃষক তিস্তাচর এলাকার বাসিন্দা আজগর আলী (৬৫)। তিনি বলেন, ‘খরাতেও ভাঙে, বন্যাতেও ভাঙে। ভাঙতে ভাঙতে বাপ-দাদার ভিটে নিশ্চিহ্ন হয়েছে। যতটুকু আছে তাও ভাঙনের মুখে। শুনি তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু শুধু শুনিই, বাস্তবায়ন হয় না। আমরা চাই অন্তত এবার সেটা হোক।’

তিস্তার ঝাড়সিংহেশ্বর চরের কৃষক আসাদুল হক (৬২) বলেন, ‘নদী ফিরে পেলে আমরা আবারও স্বপ্ন দেখব। আজকের এ জমায়েতই প্রমাণ, তিস্তা মরেনি, মরতে দেব না।’

Manual2 Ad Code

এদিকে মঙ্গলবার ভারতের পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তিস্তা নদীর হাঁটু পানিতে নেমে প্রতিবাদ জানিয়েছেন তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার মানুষ। পানির নায্য হিস্যা ও মেগা প্রকল্প অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবিতে তারা এ অভিনব প্রতিবাদ জানান।

মঙ্গলবার লালমনিরহাটের তিস্তা সড়ক ও রেল ব্রিজের নিচে হাঁটু পানিতে নেমে বিপুলসংখ্যক মানুষ বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। রংপুর বিভাগের তিস্তা নদীবেষ্টিত পাঁচ জেলার ১১টি পয়েন্টে একযোগে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে।

তিস্তা পাড়ের সব এলাকা সব শ্রেণি-পেশার মানুষের অংশগ্রহণে তিস্তার পানিতে নেমে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগানে মুখরিত। এ সময় তিস্তা নদীর পানিতে নেমে তরুণরা স্লোগান দেয়, ‘তিস্তা আমার মা, ভারতের হতে দিব না’, ‘জিয়ার মতো কোদাল ধরো, তিস্তা নদী খনন করো’।

 

পানিতে নেমে প্রতিবাদ জানাতে এসে তিস্তা নদী পাড়ের বাসিন্দা বৃদ্ধ আজিবর রহমান বলেন, পানিতে নেমেছি প্রতিবাদ জানাতে। কারণ আমার জমিতে ফসল হচ্ছে না পানির অভাবে। আমরা আমাদের সেই পূর্বের তিস্তা দেখতে চাই, যেখানে অনবরত পানির স্রোত থাকবে। আমরা মাছ ধরব। যতদিন লাগে আমরা আমাদের এ আন্দোলন চালিয়ে যাব।

এর আগে সকালে রংপুর বিভাগের ৫ জেলার ১১টি পয়েন্ট থেকে পদযাত্রা শুরু হয়ে নদী পাড়ে এসে শেষ হয়। পদযাত্রা শেষ হওয়ার পর থেকেই পানিতে নেমে প্রতিবাদ জানানোর কর্মসূচি চলমান আছে।

তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে সোমবার থেকে ৪৮ ঘণ্টার কর্মসূচি শুরু হয়। আজ তিস্তা নদীবেষ্টিত পাঁচটি জেলার ১১টি স্থানে একযোগে অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়।

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code