প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

১৩ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২৮শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
২২শে জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সরকারকে চাপে রাখতে জেলা-উপজেলায় সমাবেশ করতে পারে বিএনপি

editor
প্রকাশিত ডিসেম্বর ২৫, ২০২৪, ১০:৩০ পূর্বাহ্ণ
সরকারকে চাপে রাখতে জেলা-উপজেলায় সমাবেশ করতে পারে বিএনপি

Manual2 Ad Code

স্টাফ রিপোর্টার:
প্রায় ১৫ বছর থেকে বিএনপি মিত্রদের সঙ্গে নিয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন করেছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে অন্তত ৫০টি নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করেছে বিএনপি। যুগপতে না থাকলেও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঠে ছিল। এসব দলের অন্তত বারো জন শীর্ষ নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভা-সমাবেশে দলগুলোর নেতারা যা-ই বক্তব্য দিক না কেন আগামী নির্বাচন নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যে তারা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। ফলে তারা সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে মাঠের কর্মসূচির কথা ভাবছেন।

Manual8 Ad Code

দেশে বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি ও তার মিত্র দলগুলো। সোমবার রাজধানীর গুলশানে দলের চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির সঙ্গে মিত্রদের বৈঠক হয়। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, দেশের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দ্রুত নির্বাচনের পক্ষে মত দিয়েছেন মিত্র দলগুলোর শীর্ষ নেতারা। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে সার্বিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার তা করবেন তারা।

Manual3 Ad Code

সূত্র আরও জানায়, আগামী জাতীয় নির্বাচনের সময়সীমার বিষয়ে জোট নেতাদের মতামত জানতে চায় বিএনপি। এ সময় মিত্র দলগুলোর নেতারা অভিন্ন সুরে বলেন, ‘ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনোভাবেই ২০২৫ সাল অতিক্রম করতে পারে না। এ সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশে অস্থিরতা বাড়বে। ফ্যাসিবাদের দোসররা আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর ষড়যন্ত্র করতে সক্ষম হবে। এতে দেশ ও জাতির বড় ক্ষতি হবে’।

বৈঠক শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, সরকার থেকে নির্বাচনের যে সময়ের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, এটা আমাদের কারও জানা ছিল না। এ নিয়ে কারও সঙ্গে আলোচনাও হয়নি। আমরা মনে করি, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আগামীর নির্বাচন। সে ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে যে কথা হচ্ছে, এ ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। সুতরাং আমরা অবগত নই, কী কারণে এত দীর্ঘ সময়ের কথা বলা হলো। এটা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। আমরা যে যৌক্তিক সময়ের কথা বলেছিলাম, সেই বিষয়টা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।

Manual6 Ad Code

গত কয়েকদিন ২৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছে বিএনপি। এসব বৈঠকে স্থায়ী কমিটির এক সিনিয়র সদস্য বলেন, সরকারের বিরুদ্ধে তাদের কোনো কর্মসূচি দেওয়া ঠিক হবে না। তবে দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে বড় ধরনের সমাবেশ করা যেতে পারে। এসব সমাবেশের লক্ষ্য থাকবে নির্বাচনি আবহ তৈরি করা। দেশব্যাপী নির্বাচনি আমেজ তৈরি করতে পারলে সরকারের ওপর তা চাপ হিসাবে কাজ করবে।

Manual5 Ad Code

মঙ্গলবারও ১২ দলীয় জোটে থাকা ১২ দল, জাতীয় সমমনা জোটে থাকা ১১ দলসহ মোট ২৯টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। এসব বৈঠকে মিত্র দলগুলো দ্রুত নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। এজন্য অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সার্বিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার তা করবে বলেও মত দেন নেতারা। সেখানে জোট ও দলের নেতারা অভিন্ন সুরে জানান, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কোনোভাবেই ২০২৫ সাল অতিক্রম করতে পারে না। এই সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হলে দেশে অস্থিরতা বাড়বে, পতিত ফ্যাসিবাদের দোসররা আরও শক্তি সঞ্চয় করে গভীর ষড়যন্ত্রে নামবে। এতে দেশ ও জাতির বড় ক্ষতি হবে।

জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘আমরা বলেছি, নির্বাচন সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ হতে রাষ্ট্রের যে বিভাগগুলোর সংস্কার প্রয়োজন, সেগুলো সংস্কার করে নির্বাচন দিতে হবে। সেটা ২-৩ মাস আগে পরে হতে পারে। নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে কিনা সেটাই বড় ফ্যাক্টর। সেজন্য আমরা সংস্কার চাই, কিন্তু সব বিভাগের সংস্কার এই সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য নির্বাচনের সঙ্গে যেসব বিষয় যুক্ত সেগুলোর সংস্কার করতে হবে। সরকার নির্বাচনের যে ধারণা দিচ্ছে, সেটা যদি সিনসিয়ারলি বলে থাকে এর মধ্যেই সংস্কার করে নির্বাচনে যাওয়া সম্ভব। এজন্য জামায়াত এটাকে ইতিবাচক হিসাবে দেখে।’ তিনি বলেন, ‘রাষ্ট্রের সব বিভাগের সংস্কার এই সরকারের সময় হবে না। এটা করতে গেলে অনেক সময় এবং বছর লাগবে। আমরা চাচ্ছি নির্বাচন নিরপেক্ষ করতে ইলেকশন প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরকারের যেসব বিভাগ জড়িত সেগুলো সংস্কার হোক। সে সংখ্যাটা কম এবং সেটা এর মধ্যে হওয়া সম্ভব।’ ১২ দলীয় জোট প্রধান জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার মনে করেন, ‘বিএনপি, ১২ দলীয় জোটসহ যারা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে, আমাদের সেই ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা ফুরিয়ে যায়নি। আগামীতে সেটা আরও গভীরভাবে অনুভূত হবে। বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে খুব শিগগিরই আমরা কর্মসূচি ঘোষণা করব।’

জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের সমন্বয়ক ও এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘আমরাও দ্রুত নির্বাচন চাই। কারণ মানুষ দীর্ঘ বছর ধরে ভোট দিতে পারেনি। আমরা চাই একটা স্পষ্ট নির্বাচনি রোডম্যাপ। সংস্কারের নামে নির্বাচনে কালক্ষেপণ করা ঠিক হবে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন কেন্দ্রিক সংস্কার বর্তমান সরকার করবে, বাকি সংস্কার করবে নির্বাচিত সরকার সংসদের মাধ্যমে। দ্রুত জনগণের নির্বাচিত সরকার চাই। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেমন আন্দোলন করে তাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে, তেমনি আগামীতেও প্রয়োজনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলন হবে। আমরা আরেকটা ওয়ান-ইলেভেনের সরকার চাই না। এই সরকারের ছত্রছায়ায় আরেকটা কিংস পার্টি তৈরি হোক এটাও চাই না।’

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code