স্পোর্টস ডেস্ক:
বিশ্ব ফুটবলের অধিকাংশ খেলোয়াড়ের স্বপ্ন থাকে রিয়াল মাদ্রিদের মতো ঐতিহ্যবাহী ক্লাবের জার্সি গায়ে জড়ানো। সেই স্বপ্ন পূরণে কিলিয়ান এমবাপ্পের মতো তারকারা বছরের পর বছর ধরে চেষ্টা চালিয়ে যান। এমন এক ক্লাবে জায়গা পেলে সেটি সহজে কেউ ছাড়তে চাইবেন না—এটাই স্বাভাবিক।
তবে পেশাদার ফুটবলে দলবদলও নিয়মিত প্রক্রিয়া। প্রতি মৌসুমে খেলোয়াড়দের নানা কারণে ক্লাব পরিবর্তন করতে হয়। কিন্তু এবারের গ্রীষ্মকালীন দলবদল ভিন্ন এক চিত্র দেখাচ্ছে রিয়াল মাদ্রিদে। স্প্যানিশ ক্রীড়া দৈনিক মার্কা জানিয়েছে, চলতি দলবদলে কোনো ফুটবলারই রিয়াল ছাড়তে আগ্রহী নন।
মার্কার তথ্য অনুযায়ী, ক্লাব বিশ্বকাপ শেষ হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত কোনো খেলোয়াড় কিংবা তাদের এজেন্ট ক্লাব ছাড়ার আগ্রহ প্রকাশ করেননি, এমনকি কেউ কোনো প্রস্তাবও নিয়ে আসেননি। যদিও এই নিষ্ঠা প্রশংসাযোগ্য, তবে এতে ক্লাবটি পড়েছে একপ্রকার সমস্যায়। কারণ স্কোয়াডে জায়গা না খালিই নতুন খেলোয়াড় আনার সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ে।
বর্তমানে রিয়াল মাদ্রিদের স্কোয়াড ইতোমধ্যে পূর্ণ। ফলে দল থেকে কেউ না গেলে ক্লাবের প্রয়োজনীয় পজিশনে নতুন মুখ কেনা কঠিন হয়ে উঠবে। এতে কৌশলগত পরিকল্পনায় বাধা তৈরি হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে খানিকটা অস্বস্তির মধ্যেই রয়েছে ক্লাবটি।
এদিকে লা লিগার নতুন মৌসুম শুরু হতে যাচ্ছে আগস্টের মাঝামাঝিতে। তার আগে ১২ আগস্ট অস্ট্রিয়ায় ডব্লিউএসজি টিরোলের বিপক্ষে প্রথম প্রাক-মৌসুম প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে রিয়াল। ফলে কোচ জাবি আলোনসোর জন্য এখনই সময়, কে কোন পজিশনে খেলবেন এবং দলের গঠন কেমন হবে, তা চূড়ান্ত করার।
তবে বাস্তবতা হলো—কে দলে থাকবেন আর কে ছাড়বেন, তা এখনো পরিষ্কার না হওয়ায় আলোনসোর জন্য দল সাজানো বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। বর্তমানে রিয়ালের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়ের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
এর মধ্যে গনসালো গার্সিয়া ও এনদ্রিকের অবস্থান আলোচনায় এসেছে। এমবাপ্পে নিশ্চিতভাবে নিয়মিত একাদশের অংশ হবেন। ফলে গার্সিয়া ও এনদ্রিকের মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হবে কোচকে।
তাছাড়া ডিফেন্ডার ডেভিড আলাবাকে ঘিরেও রয়েছে জটিলতা। ৩৩ বছর বয়সী অস্ট্রিয়ান এই খেলোয়াড় ক্লাবের অন্যতম সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া সদস্য, আবার বারবার চোটে পড়া এক খেলোয়াড়ও। তাই রিয়াল তার সঙ্গে চুক্তি বাতিল করতে চাইলেও মার্কার প্রতিবেদন বলছে, আলাবা নিজে ক্লাব ছাড়তে রাজি নন।
এছাড়া লেফটব্যাক ফারলাঁ মেন্দির অবস্থানও নড়বড়ে। যদিও ক্লাব তাকে বিক্রির তালিকায় আনুষ্ঠানিকভাবে রাখেনি, তবে অভ্যন্তরীণভাবে তার অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নতুন যোগ দেওয়া আলভারো কারেরাস এবং ক্লাব বিশ্বকাপে ফ্রান গার্সিয়ার পারফরম্যান্স তাকে আরও কোণঠাসা করে দিয়েছে।
সবমিলিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ এখন এক অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে রয়েছে—স্কোয়াডে জায়গা নেই, কিন্তু শক্তি বাড়ানোর প্রয়োজন রয়েছে। খেলোয়াড়দের অনাগ্রহে দল ছাড়ার প্রক্রিয়া থমকে থাকায় নতুন মুখ আনার সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে পড়েছে।
চলতি গ্রীষ্মে রিয়াল দলে নতুন করে যুক্ত করেছে চারজন ফুটবলারকে—বোর্নমাউথ থেকে ডিফেন্ডার ডিন হুইসেন, লিভারপুল থেকে ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার–আরনল্ড, বেনফিকা থেকে আলভারো কারেরাস এবং ১৪ আগস্ট রিভার প্লেট থেকে যোগ দিতে যাচ্ছেন তরুণ প্রতিভা ফ্রাঙ্কো মাস্তানতুয়োনো।
অন্যদিকে মেয়াদ শেষ হওয়ায় ক্লাব ছেড়েছেন জেসুস ভ্যালেজো, লুকা মদরিচ ও লুকাস ভাসকুয়েজ। কিন্তু কেউ নতুন করে ক্লাব ছাড়তে না চাইলে দল গঠনে বড় সমস্যার মুখে পড়তে পারে রিয়াল।
Sharing is caring!