প্রকাশনার ১৬ বছর

রেজি নং: চ/৫৭৫

৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
১৬ই জমাদিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সংস্কার ও নির্বাচন : রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পৃক্ততার বিকল্প নেই

editor
প্রকাশিত অক্টোবর ৭, ২০২৪, ০৭:১৬ পূর্বাহ্ণ
সংস্কার ও নির্বাচন : রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পৃক্ততার বিকল্প নেই

Manual8 Ad Code

সম্পাদকীয়:
দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে শনিবার তৃতীয় দফায় সংলাপে বসেছিল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এদিন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দুপুর আড়াইটায় বিএনপির সঙ্গে শুরু হয় এ দিনের সংলাপ, রাতে গণঅধিকার পরিষদের আলোচনার মধ্য দিয়ে তা শেষ হয়। প্রধান উপদেষ্টা বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন, গণতন্ত্র মঞ্চ, বাম গণতান্ত্রিক জোট, এবি পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ (দুই অংশ) ছাড়াও হেফাজতে ইসলামে থাকা রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পৃথক পৃথক সংলাপ করেছেন।

Manual3 Ad Code

জানা গেছে, সংলাপে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধানের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনি রোডম্যাপের তাগিদ দিয়েছে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতার কথা জানিয়ে নেতারা বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নিয়োগ আইন স্থগিত করে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতে অনতিবিলম্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। সংস্কার করে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও সম্পৃক্ত করার তাগিদও দিয়েছেন তারা। বিগত সরকারের আমলে অপশাসনের পেছনে জড়িত যেসব আমলা, পুলিশ কর্মকর্তা, সাবেক এমপি-মন্ত্রী দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন, তারা কীভাবে, কার সহযোগিতায় পালাচ্ছেন-সে বিষয়গুলো দেখার জন্য বলেছেন। এছাড়া প্রশাসনে ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরানো, চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল, বঞ্চিতদের পদোন্নতি, আইনশৃঙ্খলা ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, গায়েবি মামলা প্রত্যাহারের দাবিও এসেছে।

Manual5 Ad Code

বলা বাহুল্য, সংস্কার কার্যের গ্রহণযোগ্যতার স্বার্থেই রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ খুবই জরুরি। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রথম দুমাসে তাদের নানামুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ব্যস্ত থাকায় সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সমন্বয় না থাকার অভিযোগ উঠতে আমরা দেখেছি। এমন প্রশ্নও আছে, অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র সংস্কারের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তা নিয়ে স্পষ্ট রূপকল্প এখনো কেন প্রকাশ করা হচ্ছে না। এমন অবস্থায় দ্রুত সংস্কার কার্য সাধন এবং নির্বাচনি রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংলাপের এ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা। এর ফলে এসব অভিযোগ ও সংশয়ের নিশ্চয়ই অবসান ঘটবে। সবারই মনে রাখা দরকার, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ শাসনের জন্য নয়, বরং দেশ শাসনের সুস্থ পথ বিনির্মাণের জন্য ক্ষমতায় এসেছে। তাদের কাজ হচ্ছে, জাতির সামনে একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করে দেওয়া। এজন্য কিছু মৌলিক বিষয়ে তাদের সংস্কার করতেই হবে। আমাদের দায়িত্ব, ধৈর্যসহকারে যার যার অবস্থান থেকে তাদের সহযোগিতা করা।

এটাও ঠিক, যে কমিশনগুলো গঠিত হয়েছে এবং পর্যায়ক্রমে হবে, সেগুলোর কার্যপরিধি ও রোডম্যাপ সম্পর্কে জানা থাকলে রাজনীতিকরাই শুধু নন, দেশবাসীও আশ্বস্ত হবে। এছাড়া রাজনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসাবে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের লক্ষ্যে সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন যদি ঘটেই, তাহলে যতটুকু দরকার, ঠিক ততটুকুই সংশোধন করা যথার্থ হবে বলে মনে করি আমরা। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখার স্বার্থে দ্রুত রোডম্যাপ প্রকাশের মাধ্যমে নির্বাচন আয়োজনের প্রক্রিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার এগিয়ে যাবে, এটাই প্রত্যাশা।

Manual5 Ad Code

Sharing is caring!

Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code